শিলচরে মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল। সঙ্গে রয়েছেন পরিমল শুক্লবৈদ্য ও দিলীপ পাল। সোমাবার স্বপন রায়ের তোলা ছবি।
প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এপিজে আব্দুল কালামের মূর্তি বসল শিলচর এনআইটি-তে। আজ এই মূর্তির আবরণ উন্মোচন করেন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল। দক্ষিণ ভারতের রামেশ্বরমের পর এই প্রথম কোথাও কালামের পূর্ণাবয়ব মূর্তি স্থাপিত হল। একই সঙ্গে বিশ্বমানের একটি গ্রন্থাগারেরও উদ্বোধন হল। সূচনা হল ‘স্টার্ট আপ সেন্টার’-এরও। এনআইটি-তে ৯০ হাজার বর্গফুট আয়তনের গ্রন্থাগারটি প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি কালামেরই নামে।
শিক্ষক দিবসে এটাই তাঁর প্রতি সর্বশ্রেষ্ঠ শ্রদ্ধাজ্ঞাপন বলে মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী সোনোয়াল। এক দিকে, ‘মিসাইল ম্যান’ কালামের মূর্তি উন্মোচন এবং তাঁর নামাঙ্কিত লাইব্রেরির উন্মোচন করলেন। বরাক সফরের এই সুযোগে মুখ্যমন্ত্রী সময় কাটালেন আসাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও। বলতে গেলে, বরাক উপত্যকার উচ্চশিক্ষার সব ক’টি প্রতিষ্ঠানই সর্বানন্দ ছুঁয়ে গেলেন আজ। সব জায়গাতেই তিনি বলেন, ‘‘হিন্দুস্তানকে ভারতগুরুর আসনে বসাতে হবে।’’ সেই দায়িত্ব আজকের মেডিক্যাল, ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া বা স্নাতকোত্তরের ছাত্রদের নিতেই তিনি আহ্বান জানান। তবে সে জন্য কঠোর শ্রম আর সততা-নিষ্ঠা যে জরুরি, তা বার বার গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখ করেন তিনি। উদাহরণ হিসেবে টেনে আনেন দেশের দুই প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ এবং এপিজে আব্দুল কালামের কথা।
বাঁ দিকে শিলচর এনআইটি-র ডিরেক্টর এন ভি দেশপাণ্ডে ও ডান দিকে গুয়াহাটি আইআইআইটি-র ডিরেক্টর গৌতম বরুয়াকে রেখে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘জীবনটাই শিক্ষা ক্ষেত্র। একে ভালভাবে কাজে লাগাতে হবে।’’ তিনি নিজেও যে এখনও কতকিছু শিখে চলেছেন, সে-কথাও প্রসঙ্গক্রমে শুনিয়ে দেন। টেনে আনেন তাঁর ছাত্রজীবনের কথা।
তবে তাঁর কাছে এখন কঠিন চ্যালেঞ্জ, মানুষ ধরে রাখা। সর্বানন্দ বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী হলেই নাকি মানুষের কাছ থেকে দূরে সরে যান। তাই সতর্কতার সঙ্গে চেষ্টা করছি মানুষ ধরে রাখার। আর খেয়াল রাখি ইজ্জত-সহ বাঁচতে।’’ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানেও মুখ্যমন্ত্রী শিক্ষাগুরুদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। তিনি বলেন, ‘‘অসম সম্পদে ভরপুর। জলসম্পদ, বনজসম্পদ—সব ধরনের প্রাকৃতিক সম্পদ এখানে রয়েছে। সেগুলিকে সঠিক ভাবে কাজে লাগাতে হবে।’’ পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনায়ও তিনি ব্রহ্মপুত্র-বরাকের প্রাকৃতিক সম্পদকে কাজে লাগিয়ে রাজ্যের উন্নতির কথা বলেন। তাঁর কথায়, বরাক ও ব্রহ্মপুত্রের সমান্তরাল উন্নয়ন প্রয়োজন। সে লক্ষ্যে তাঁর সরকার শুরু থেকেই কাজ করছে।
আজ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন পূর্তমন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্যও। তাঁকে মঞ্চে বসিয়েই গুয়াহাটি আইআইআইটি-র ডিরেক্টর গৌতম বরুয়া বরাকের রাস্তাঘাট প্রসঙ্গ তোলেন। যোগাযোগ সমস্যার কথা তোলেন ডিরেক্টর দেশপাণ্ডেও। তিনি ছাত্রদের বলেন, সে সব সমস্যা মেধা দিয়ে কাটিয়ে তুলতে হবে। বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার দিলীপকুমার পাল, বিজেপি বিধায়ক আমিনুল হক লস্কর, মিহিরকান্তি সোম, অমরচাঁদ জৈন, কৃপানাথ মালা এবং অশোক সিঙ্ঘীও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy