ছবি: সংগৃহীত
ছত্রপতি শিবাজির জন্মজয়ন্তী বছরে দু’বার করে কেন পালন করা হবে? নিছকই একটা সাধারণ প্রশ্ন তুলেছিলেন মহারাষ্ট্রের এক কলেজ অধ্যাপক। উত্তরের পরিবর্তে তাঁর কপালে জুটল সহকর্মী ও পড়ুয়াদের একাংশের বেধড়ক মারধর। শুধু তা-ই নয়, ঘটনা মিটমাট করতে এসে তাঁকে আটক করে থানায় নিয়ে গেল পুলিশ। ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে মামলাও রুজু করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ওই অধ্যাপক সুনীল ওয়াঘমারেকে সাসপেন্ড করেছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ।
শিবাজির সঠিক জন্মতিথি নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই বিতর্ক রয়েছে। সরকারি ভাবে প্রতি বছর ১৯ ফেব্রুয়ারি শিবাজি জন্মজয়ন্তী পালন করা হয়। ওই দিনটিতে ছুটিও ঘোষণা করেছে মহারাষ্ট্র সরকার। তবে রাজ্যের অধিকাংশ মানুষই ফাল্গুন মাসের তৃতীয় দিনে শিবাজির জন্মজয়ন্তী পালন করেন। চলতি বছরে ১৫ মার্চ সে দিনটি পড়েছিল। সে রাতেই এ বিষয়টি নিয়ে কলেজের একটি হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপে প্রশ্ন তুলেছিলেন অধ্যাপক ওয়াঘমারে। রায়গড়ের খোপোলি এলাকায় একটি কলেজের বাণিজ্য বিভাগে অধ্যাপনা করেন তিনি। হোয়াট্সঅ্যাপে প্রশ্ন করামাত্রই তাতে বেজায় চটে যান ওই গ্রুপের অ্যাডমিন অধ্যাপক নগরগোজে। সঙ্গে সঙ্গে তাঁর মন্তব্য ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য ওয়াঘমারেকে নির্দেশ দেন তিনি। নগরগোজে বলেন, “সুনীল ওয়াঘমারে এই কলেজে ২০১২ সাল থেকে শিক্ষকতা করছেন। হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপে মন্তব্য ফিরিয়ে নেওয়ার কথা বলায় তা করতে অস্বীকার করেন তিনি। ফলে আমি ওই গ্রুপটিই ডিলিট করে দিই।”
অভিযোগ, ওই ঘটনার পর দিন কলেজে আসামাত্রই সুনীলকে নিগ্রহ করেন তাঁর সহকর্মীরা। কলেজের অন্যান্য অধ্যাপকের সঙ্গে মিলে তাঁর উপর চড়াও হন বেশ কয়েক জন পড়ুয়াও। বেধড়ক মারধর করা হয় তাঁকে। এর পর অধ্যাপক ওয়াঘমারেকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৯৫(এ) ধারায় মামলাও রুজু করেছেন অধ্যাপক নগরগোজে। তবে ওয়াঘমারে নিগ্রহের ঘটনার পিছনে কার হাত রয়েছে তা এখনও জানা যায়নি। অধ্যাপক নগরগোজের দাবি, “গত শুক্রবার আমি স্টাফ রুমে বসেছিলাম। তখনই জানতে পারি, সুনীলকে নিগ্রহ করা হয়েছে। কিন্তু কারা এ কাজ করেছে তা জানি না।”
আরও পড়ুন: জোড়া পাতা দু’ভাগ
পুলিশের দাবি, অধ্যাপক ওয়াঘমারের মন্তব্যে ওই হোয়াট্সগ্রুপের অন্যান্য সদস্যের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়েছে। এমনকী, কলেজের বিভিন্ন গোষ্ঠী থেকে তাঁকে সাসপেন্ড করার জন্য চাপও সৃষ্টি করা হয়। আপাতত জামিনে ছাড়া পেয়েছেন অধ্যাপক ওয়াঘমারে। তবে তাঁর বিরুদ্ধে শীঘ্রই চার্জশিট দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy