Advertisement
১৬ মে ২০২৪

শ্রমিক না কৃষক, বিবাদ পলিটব্যুরো গঠনে

মহারাষ্ট্রে কিষান ‘লং মার্চ’ গোটা দেশের নজর কেড়েছিল। বামেদের দুর্দিনে সেই সাফল্যের মুখকে সামনে আনা হবে? নাকি শিল্পায়নের যুগে শ্রমিক ফ্রন্টকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে?

সীতারাম ইয়েচুরি

সীতারাম ইয়েচুরি

সন্দীপন চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০১৮ ০৪:০০
Share: Save:

দল বেহাল! কিন্তু বিবাদ ষোল আনা!

মহারাষ্ট্রে কিষান ‘লং মার্চ’ গোটা দেশের নজর কেড়েছিল। বামেদের দুর্দিনে সেই সাফল্যের মুখকে সামনে আনা হবে? নাকি শিল্পায়নের যুগে শ্রমিক ফ্রন্টকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে? পার্টি কংগ্রেসে নতুন পলিটব্যুরো গড়ার আগে এই প্রশ্নে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে সিপিএমে।

হায়দরাবাদের বাঘলিঙ্গমপল্লির ‘আরটিসি কল্যাণ মণ্ডপম’ প্রেক্ষাগৃহে ১৮ এপ্রিল থেকে শুরু হবে সিপিএমের ২২তম পার্টি কংগ্রেস। হায়দরাবাদ জুড়ে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি যেমন তুঙ্গে, তেমনই দিল্লিতে তৎপরতা চলছে নতুন কমিটি গঠন নিয়ে। সিপিএমে আরও পাঁচটা বিষয়ের মতো পলিটব্যুরোয় নতুন মুখ আনার প্রশ্নেও যথারীতি ভিন্নমত সীতারাম ইয়েচুরি ও প্রকাশ কারাট শিবির! দলীয় সূত্রের খবর, সাধারণ সম্পাদক কৃষক সভাকে গুরুত্ব দেওয়ার পক্ষে। আর প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদকের বেশি নজর শ্রমিক ফ্রন্টে।

সিটুর প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি এ কে পদ্মনাভনের এ বার পলিটব্যুরো থেকে বিদায় নেওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। তাঁর জায়গায় সিটুর সাধারণ সম্পাদক তপন সেন ও সর্বভারতীয় সভানেত্রী কে হেমলতা দু’জনেই পলিটব্যুরোয় যাওয়ার দাবিদার। কারাট শিবির চাইছে, হেমলতাকে পলিটব্যুরোয় জায়গা হোক। তাতে শ্রমিক ফ্রন্টের প্রতিনিধিত্ব বজায় থাকার পাশাপাশি মহিলা মুখও বাড়বে। ঘটনাচক্রে, দলের অন্দরে হেমলতা সাধারণ সম্পাদকের শিবিরের বিরোধী মুখ হিসেবেই পরিচিত।

ইয়েচুরি শিবিরের আবার পাল্টা যুক্তি, বিভিন্ন ফ্রন্টের প্রতিনিধিদের জন্য ‘কোটা’ ব্যবস্থা আঁকড়ে থাকলে আর চলবে না। কঠিন পরিস্থিতিতে যাঁরা ভাল কাজ করছেন, নেতৃত্বে তাঁদের এনে মর্যাদা দিতে হবে। এই যুক্তিতেই ইয়েচুরি শিবির চায় কৃষক সভার সর্বভারতীয় সভাপতি অশোক ধওয়লেকে পলিটব্যুরোয় স্থান দিতে। যিনি মহারাষ্ট্রে ‘লং মার্চে’র মূল কারিগর ছিলেন। পলিটব্যুরোর এক সদস্যের কথায়, ‘‘ওই রকম সফল আন্দোলনের নেতাকে দলের উচ্চ স্তরে স্বীকৃতি না দিলে অন্যায় হবে!’’

কারাট শিবির থেকে বলা হচ্ছে, ধওয়লে আসতেই পারেন। কিন্তু কৃষক সভার সাধারণ সম্পাদক হান্নান মোল্লাও তো পলিটব্যুরোর সদস্য! একই ক্ষেত্র থেকে দু’জন? অন্য শিবিরের আবার প্রশ্ন, গত পার্টি কংগ্রেসেই হান্নান পলিটব্যুরোয় এসেছেন। এখনই তাঁকে বিদায় দেওয়া হবে কেন? আর এক বর্ষীয়ান সদস্য এবং কারাট-ঘনিষ্ঠ এস আর পিল্লাইয়ের বরং সরে দাঁড়ানো উচিত বলে এই অংশের মত!

ইয়েচুরি নিজে শীর্ষ পদে থাকবেন কি না, তা-ও অবশ্য এখন ধোঁয়াশায় ঢাকা! মানিক সরকারকে নতুন সাধারণ সম্পাদক করার ভাবনা প্রকাশ্যে আসতেই তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়েছে বাংলা-সহ নানা রাজ্যে। বাংলার এক রাজ্য কমিটির সদস্যের বক্তব্য, ‘‘দলের হাল যেমনই হোক, গোটা দেশে প্রথম পাঁচ জন রাজনীতিকের নাম বলতে গেলে ইয়েচুরি তার মধ্যে পড়বেন। তাঁকে মাত্র এক বারের মেয়াদেই সরিয়ে দিতে চাইলে পার্টি কংগ্রেসের কক্ষেই বিদ্রোহ হবে!’’

সশস্ত্র কৃষক আন্দোলনের পীঠস্থান তেলঙ্গানায় এ বার অন্য বিদ্রোহ!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE