সিলেবাসে উল্লেখ আছে নামমাত্র। অথচ স্নাতকোত্তরের দ্বিতীয় বর্ষের ইতিহাসের পরীক্ষায় প্রশ্ন এল রানি পদ্মাবতীর জহরব্রত ও তিন তালাক নিয়ে। সাম্প্রতিক এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিতর্কের মুখে পড়েছে বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় (বিএইচইউ)।
পরীক্ষার্থীরা জানান, তিন সপ্তাহ আগে ইতিহাসের তৃতীয় সেমেস্টারের ওই পরীক্ষা দিয়েছেন তাঁরা। সেখানেই মধ্যযুগ নিয়ে পরীক্ষায় ১০ নম্বরের প্রশ্ন দেওয়া হয় চিতোরের রানি পদ্মাবতীর জহরব্রত নিয়ে। তাঁদের দাবি, সিলেবাসে জহরব্রত রয়েছে ঠিকই। সেখানে মধ্যযুগীয় প্রথা হিসেবে পড়ানো হয়েছে জহরব্রতের কথা। যে প্রথা মেনে ধর্ষণ ও বন্দি হওয়ার হাত থেকে বাঁচতে অগ্নিকুন্ডে ঝাঁপ দিতেন হিন্দু মহিলারা। উদাহরণ হিসেবে অন্য ঘটনার সঙ্গে উল্লেখ রয়েছে চিতোরের রানি পদ্মাবতীর। তাঁর অস্তিত্ব নিয়ে যে ইতিহাসবিদদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে তাও উল্লেখ করা হয়েছে।
পড়ুয়াদের দাবি, সঞ্জয় লীলা ভন্সালীর ‘পদ্মাবতী’ ছবি নিয়ে তোলপাড় শুরু হতেই জানিয়ে দেওয়া হয় বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। ফলে পরীক্ষায় এ নিয়ে প্রশ্ন আসতে পারে। একই ঘটনা ঘটেছে তিন তালাকের ক্ষেত্রেও। পড়ুয়ারা জানাচ্ছেন, দিল্লিতে সুলতানি আমলের সময়ে সমাজে মহিলাদের অবস্থান প্রসঙ্গে তিন তালাকের উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু তিন তালাক নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট রায় দেওয়ার পরেই ওই বিষয়টিকে গুরুত্বপূর্ণ বলে জানানো হয়। কলেজে বিশেষ ক্লাসও নেওয়া হয় তিন তালাকের উপরে। পড়ুয়াদের দাবি, ওই ক্লাস হয়েছে বলেই তাঁরা তিন তালাক নিয়ে প্রশ্নের উত্তর লিখতে পেরেছেন।
পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তিনি তৈরি করেননি বলেই দাবি বিএইচইউয়ের মধ্যযুগীয় ভারতের সমাজ ও প্রথা বিষয়ে সহ-শিক্ষক রাজীবকুমার শ্রীবাস্তব। তবে তাঁর দাবি, ‘‘আলাউদ্দিন খিলজির আমলে মহিলাদের সামাজিক বিতর্ক নিয়ে প্রতি বছরই পড়ানো হয়। তার সঙ্গে রাজনৈতিক বিতর্কের কোনও সম্পর্ক নেই। বাবরি মসজিদ নিয়ে বিতর্ক আছে। তাহলে কি বাবর সম্পর্কে পড়ানো বন্ধ করে দিতে হবে?’’
ইতিহাস বিভাগের প্রাক্তন প্রধান ও প্রাচীন ভারতের ইতিহাসের শিক্ষিকা বৃন্দা পরাঞ্জপের বক্তব্য, ‘‘যে বিষয়ের যিনি শিক্ষক, তিনিই প্রশ্ন তৈরি করেন। অন্য শিক্ষকদের নিয়ে তৈরি একটি কমিটি যাচাই করার পরে তা চূড়ান্ত করা হয়। প্রশ্ন নিয়ে সমস্যা থাকলে তা কমিটির দেখা উচিত ছিল।’’ তিনি জানান, বিএইচইউ-তে ওই দু’টি বিষয় আলাদা করে পড়ানো হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদিত কলেজগুলিতে হয়নি। ফলে কলেজগুলির পড়ুয়াদের ওই প্রশ্নের উত্তর লিখতে সমস্যা হয়েছে।
ইতিহাস বিভাগের প্রধান অজয় প্রতাপের সঙ্গে কোনও ভাবেই যোগাযোগ করা যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy