যুযুধান: প্রকাশ কারাট ও সীতারাম ইয়েচুরি। ফাইল চিত্র
সিপিএমের রাজনৈতিক লাইন নিয়ে যুযুধান সীতারাম ইয়েচুরি ও প্রকাশ কারাটের মতকে এক সুরে বাঁধার চেষ্টা শুরু করল পলিটব্যুরো।
সাধারণ সম্পাদক ইয়েচুরি এত দিন কংগ্রেস তথা অন্য দলগুলির সঙ্গে সমঝোতায় যাওয়ার পক্ষে ছিলেন। তার বিরোধিতা করছিলেন প্রকাশ কারাট। এ বার ইয়েচুরি নিজেই দলের মধ্যে ঐকমত্য তৈরি করতে প্রস্তাব দিয়েছেন, বিজেপিকে ক্ষমতা থেকে সরাতে নির্বাচনী কৌশল তৈরির রাস্তা খোলা থাক। কিন্তু সেই কৌশলে কোনও ‘বুর্জোয়া দল’-এর সঙ্গে ফ্রন্ট বা সমঝোতা হবে না। সিপিএমের পরিভাষায় ‘বুর্জোয়া দল’-এর মধ্যে কংগ্রেসও রয়েছে। ইয়েচুরির তৈরি রাজনৈতিক রণকৌশলের খসড়ায় বলা হয়েছে, সরাসরি ফ্রন্ট বা নির্বাচনী জোটে না গিয়ে অন্য রকম ভাবে সমঝোতা করা যেতে পারে।
আগামী বছরের হায়দরাবাদ পার্টি কংগ্রেসের রাজনৈতিক লাইনের খসড়া তৈরি করতে আজ থেকে দু’দিনের পলিটব্যুরো বৈঠক শুরু হয়েছে। পলিটব্যুরোয় ইয়েচুরির পাল্টা দলিল পেশ করেছেন প্রকাশ কারাট। তিনি কংগ্রেসের সঙ্গে কোনওরকম সমঝোতার পুরোপুরি বিরুদ্ধে। কারাট মানছেন, বিজেপি-আরএসএসকে হারানোই এখন প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত। তাঁর দলিলে বলা হয়েছে, নির্বাচনে দরকার হলে আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে জোট হতে পারে। এই রাজনৈতিক লাইন বাস্তবসম্মত নয় বলেই মনে করছে ইয়েচুরি-শিবির। তাদের যুক্তি, ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ আঞ্চলিক দলগুলি ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের আগে বা পরে কংগ্রেসের সঙ্গেই হাত মেলাবে। আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে হাত মেলানোর অর্থ, কংগ্রেসের সঙ্গেও জোট করতে হবে। তার বদলে কংগ্রেসের সঙ্গে বোঝাপড়ার রাস্তা খোলা রাখাই ভাল।
কারাট-শিবিরের প্রশ্ন, নির্বাচনী সমঝোতায় না গিয়ে কী ভাবে সমঝোতা সম্ভব? ইয়েচুরি শিবির তার উদাহরণ হিসেবে জানাচ্ছে, গুজরাতেই ভাবনগরে দলের কিছুটা শক্তি থাকা সত্ত্বেও রাজ্য নেতারা সেখানে প্রার্থী দেননি। যাতে বিরোধী ভোট ভাগাভাগি না হয়। প্রথম ইউপিএ জমানায় সিপিএম বাইরে থেকে মনমোহন সিংহ সরকারকে সমর্থন করেছিল। কিন্তু তখনও ভোটের আগে বা পরে সিপিএম ইউপিএ-তে যোগ দেয়নি। আজ পলিটব্যুরোর এক নেতা বলেন, ‘‘ঐকমত্য তৈরির চেষ্টা চলছে। এর পর কেন্দ্রীয় কমিটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।’’ এর আগে এক দফায় পলিটব্যুরো, কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকেও অবশ্য এর ফয়সালা হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy