দূষণের কুয়াশায় ঢেকেছে দিল্লি। ছবি: এএনআই।
কিছু ক্ষণ অন্তর জলে ভিজে যাচ্ছে চোখ। মাঝে মধ্যে গলা খুশখুশ করে দমক আসছে কাশির। দেশের রাজধানীতে দীপাবলির পরের সকালটা এ ভাবেই কাটাচ্ছেন দিল্লিবাসী। এই দশা মোটেই উৎসব শেষের শোক নয়। দিল্লির ‘শরীর খারাপ’-এর কারণ আরও গুরুতর এবং অতিপরিচিত— দূষণ। বৃহস্পতিবার, দীপাবলির রাত পর্যন্ত রাজধানীর বাতাসে দূষণের মাত্রা ছিল ‘সিভিয়ার’ বা গুরুতর স্তরের। দীপাবলির পরের দিন অর্থাৎ শুক্রবার সকাল থেকে তা বিপজ্জনক জায়গায় পৌঁছেছে। যার ফলে গত বেশ কয়েক বছরের মতো এ বারও দীপাবলির পরের দিন রাজধানী ঢেকেছে দূষণ-কুয়াশায়। দিল্লিবাসীরা জানিয়েছেন, কুয়াশায় বাড়ির বাইরে বের হতেই তাঁদের অনেকের চোখের সমস্যা দেখা দিয়েছে। মাঝে মধ্যেই চোখ থেকে জল পড়ছে। এমনকি অনেকের গলা খুশখুশ করছে বলেও খবর।
করোনা পরিস্থিতি এবং একই সঙ্গে দিল্লির বাতাসে দূষণের মাত্রার কথা মাথায় রেখে রাজধানীতে যে কোনও ধরনের বাজি পোড়ানোয় সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল দিল্লির কেজরীবাল সরকার। কিন্তু দীপাবলির রাতে সেই নিয়ম ভেঙে দিল্লিতে দেদার বাজি পুড়তে দেখা গিয়েছে। বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শব্দবাজি এবং আতশবাজি ফাটানোর অভিযোগ এসেছে দিল্লি পুলিশের কাছে। ফলে বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টে পর্যন্ত যেখানে দিল্লির বাতাসে দূষণের মাত্রা ছিল ৩৮২, তা রাত ৮টা নাগাদ ৫০০ ছুঁয়ে ফেলে। শুক্রবার সকালে তা ৫০০ ছাড়িয়ে যায়। লাগোয়া শহর ফরিদাবাদে বৃহস্পতিবার রাত ৯টার সময় বাতাসে দূষণের মাত্রা ছিল ৪২৪, গাজিয়াবাদে ৪৪২, গুরুগ্রামে ৪২৩ এবং নয়ডায় ৪৩১। শুক্রবার সকালে তা আরও বেড়েছে। শুক্রবার জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামের কাছে বাতাসে পিএম ২.৫-এর ঘনত্ব ছিল ৯৯৯। দূষণ মাপার এই যন্ত্রে অবশ্য সর্বোচ্চ সংখ্যা ৯৯৯-ই। সে ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের অনুমান এই ঘনত্ব আরও বেশি হতে পারে।
কেন্দ্রীয় যে সংস্থা বাতাসে দূষণের মাত্রায় নজর রাখে সেই ‘সফর’ জানিয়েছে, আগামী রবিবার সন্ধে পর্যন্ত দিল্লিতে দূষণ পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার কোনও আশা নেই। রবিবারের পর পরিস্থিতি কিছুটা বদলাতে পারে। তবে তার পরও দিল্লির বায়ুদূষণের মাত্রা ‘গুরুতর’ থেকে ‘খুব খারাপ’-এর মধ্যে ওঠানামা করবে। সফর অবশ্য এই দূষণের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে জানিয়েছে, দীপাবলিতে বাজি পোড়ানোর একটি মূল কারণ হলেও এর সঙ্গে দিল্লির আবহাওয়ারও বড় ভূমিকা রয়েছে। দিল্লিতে এ বছর হঠাৎ করেই ঠান্ডা পড়তে শুরু করেছে। বইতে শুরু করেছে উত্তর-পশ্চিম বাতাস। এই হাওয়া পঞ্জাব এবং হরিয়ানার শষ্যের গোড়া পোড়ানোর ধোঁওয়াকে রাজধানীর দিকে টেনে আনে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy