বয়স ৯২ ছুঁইছুঁই। রাজ্যপাট হারিয়েছেন বছর ছয়েক আগেই। তবু প্রতিপক্ষ তথা তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জে জয়ললিতার অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে রাজনীতিতে বিরাম নেই ডিএমকে প্রধান এম করুণানিধির।
গত কাল আম্মার মৃত্যুর খবর নিয়ে জল্পনা শুরু হতেই তাঁর স্বাস্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে সেই জল্পনায় আরও ইন্ধন দেন করুণানিধি। ফলে শুধু তামিলনাড়ুই নয়, সুদূর দিল্লিতেও শুরু হয়ে যায় চেন্নাইয়ের মসনদের ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনা। যদিও আজ রাজ্য প্রশাসন জানিয়ে দিয়েছে, ভাল আছেন মুখ্যমন্ত্রী। সঠিক পথেই এগোচ্ছে চিকিৎসা। পরে হাসপাতালে মুখ্যমন্ত্রীকে দেখতে যান রাজ্যপাল বিদ্যাসাগর রাও। তিনিও এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী দ্রুত সুস্থ হচ্ছেন। তবে গোটা হাসপাতাল ঘিরে রেখেছে পুলিশ। আম্মার কেবিনের আশপাশে ঘেঁষতে দেওয়া হচ্ছে না কাউকেই। যার ফলে জল্পনা থেমেও থামছে না।
গত কয়েক দিন ধরেই হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন এডিএমকে নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা। গত কাল রাতে হঠাৎই সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব ছড়ায় মারা গিয়েছেন আম্মা। তামিলনাড়ু পুলিশের দাবি, ফ্রান্সে বসবাসকারী তামিলাচ্চি নামে এক মহিলা ওই গুজবের জন্য দায়ী। জয়ললিতার দল এডিএমকে-র অভিযোগের ভিত্তিতে ওই মহিলার বিরুদ্ধে সাইবার ক্রাইম ধারায় অভিযোগ দায়ের করেছে পুলিশ।
তামিলাচ্চির পোস্টের পাশাপাশি করুণানিধি জয়ললিতার স্বাস্থ্য নিয়ে মুখ খোলায় গুজবের মাত্রা বেড়ে যায়। মুখ্যমন্ত্রীর সর্বশেষ শারীরিক পরিস্থিতির বিবরণ ও ছবি প্রকাশের দাবি তোলেন তিনি। এর পরে রাতেই হাসপাতালের সামনে ভিড় জমাতে শুরু করেন এডিএমকে সমর্থকরা। মোতায়েন করা হয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। যদিও রাতেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও আজ সকালে রাজ্য প্রশাসন জানিয়ে দেন, ভাল আছেন মুখ্যমন্ত্রী।
কী হয়েছে জয়ললিতার?
এক সময়ে টিউমার ও ক্যানসারে ভুগলেও, এ বারে জ্বর ও অবসাদের কারণে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আম্মা। জয়ললিতার ঘনিষ্ঠরা জানাচ্ছেন, প্রাক্তন ঘনিষ্ঠ সঙ্গী শশীকলার সঙ্গে মনোমালিন্যের পর থেকেই অবসাদের শিকার হন জয়ললিতা। এক দিকে জ্বর ও অন্য দিকে মানসিক অবসাদ-জোড়া ধাক্কায় একেবারে শয্যাশায়ী হয়ে পড়েছেন তিনি। হাসপাতালের স্বাস্থ্য রিপোর্ট অনুযায়ী শরীরে শর্করার পরিমাণ ভাল অনুপাতেই বেশি রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। অন্য দিকে প্রয়োজনীয় মাত্রার চেয়ে কম রয়েছে সোডিয়াম ও ক্লোরাইড।
প্রশ্ন উঠেছে, জয়ললিতার কিছু হলে তাঁর পরিবর্তে কে মুখ্যমন্ত্রী হবেন? তালিকায় সব চেয়ে উপরে রয়েছেন জয়ললিতার বিশ্বস্ত সঙ্গী তথা রাজ্যের অর্থমন্ত্রী ও পনিরসেলভাম। ঠিক এক বছর আগে দুর্নীতি
মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় মুখ্যমন্ত্রীর পদে পনিরসেলভামকে বসিয়ে গিয়েছিলেন আম্মা।
১৪ বছর আগে তানসি জমি মামলায় মুখ্যমন্ত্রীর পদে বসতে পারেননি জয়ললিতা। তখনও পনিরসেলভামকে তাঁর জায়গায় বসিয়ে ছিলেন তিনি। এখন জয়ার অনুপস্থিতিতে রাজ্যের দায়িত্ব কার্যত সামলাচ্ছেন বছর চৌষট্টির ওই বিশ্বস্ত নেতাই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy