এ যেন অনেকটা সাদা হাতি পোষার গল্প!
৫ কোটি টাকা খরচে তৈরি পানীয় জল প্রকল্প থেকে একবিন্দু জলও পান না শহরবাসী। অথচ প্রতি মাসে হাইলাকান্দির লালা শহরের কলেজ রোডের সেই প্রকল্পে বহাল কর্মীদের বেতন গুণছে সরকার।
২০০৫ সালে ঘটা করে ওই জল প্রকল্পের উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন মন্ত্রী নূরজামান সরকার, গৌতম রায়। প্রকল্পটি অসম সরকারের ‘আরবান ওয়াটার অ্যান্ড সুয়ারেজ বোর্ড’-এর অধীনে। সেই সময় লালার বাসিন্দাদের পানীয় জল সমস্যার স্থায়ী সমাধানের স্বপ্ন দেখেছিলেন। অনেকের বাড়িতে জল সরবরাহের পাইপ লাইন সংযোগও দেওয়া হয়েছিল। বদলে নেওয়া হয় ২ থেকে ১২ হাজার টাকা। বাড়ি বাড়ি জলের পাইপ সংযোগের সময় কয়েক লক্ষ টাকা আদায় করে ওই সংস্থার কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ, উদ্বোধন হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত ওই প্রকল্প থেকে একবিন্দু জলও শহরে সরবরাহ করা হয়নি। প্রকল্প চত্বরে গিয়ে দেখা যায়, সেটি কার্যত হানাবাড়ি হয়ে গিয়েছে। অনেক ঘরে বোঝাই করা রয়েছে কাঠ। কর্মীদের কারও দেখা মেলেনি। সেখানে মোতায়েন চতুর্থ শ্রেণির এক কর্মীর ছেলে একটি ঘর বেরিয়ে আসেন। তিনি বলেন, ‘‘এখানে কোনও কাজ নেই। বাবা তাই সব সময় আসেন না।’’ অন্য অনেকের মতো লালার বাসিন্দা অমিতাভ সাহাও ওই সময় বাড়িতে জলের সংযোগ নিয়েছিলেন। সেই রসিদ দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘‘প্রায় ১২ হাজার টাকা খরচ হয়েছিল। কিন্তু এক ফোঁটা জলও পাচ্ছি না। দু’তিন বছর ধরে ওই প্রকল্পের দফতরে গিয়ে কারও দেখা পাইনি।’’ একই অভিযোগ শহরের সেন্ট্রাল রোডের ব্যবসায়ী মদন পালের।
এ নিয়ে সরব লালা পুরসভার বিরোধী নেতা তখা বিজেপির পুরসদস্য তপন নাথ। প্রকল্প তৈরির জন্য কত খরচ হয়েছে, কী কারণে সেটি বন্ধ— সে বিষয়ে তদন্তের দাবিও তুলেছেন। তপনবাবু বলেন, ‘‘বাড়ি বাড়ি জলের পাইপ লাইন সংযোগ দেওয়া বদলে কারা টাকা সংগ্রহ করেছেন, সেই টাকা কী ভাবে ব্যয় করা হয়েছে তদন্তে তা দেখতে হবে।’’ পুরসদস্য অনামিকা ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এতে শহরবাসীর আশাভঙ্গ হয়েছে।’’ ক্ষুব্ধ শহরবাসী এখন জলের সংযোগের জন্য দেওয়া টাকা ফেরতের দাবি তুলছেন। ওই জল প্রকল্পে তদন্ত করে এসেছেন হাইলাকান্দির জেলাশাসক বরুণ ভুঁইঞা। তিনি বলেন, ‘‘দ্রুত এ নিয়ে ভিজিল্যান্স তদন্তের নির্দেশ জারি করা হতে পারে।’’
জল প্রকল্পের বিষয়ে খোঁজখবরে শিলচরে সংশ্লিষ্ট দফতরে যোগাযোগ করা হলেও কার্যনির্বাহী আধিকারিককে পাওয়া যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy