Advertisement
০৭ মে ২০২৪
Fake Encounter

অপহরণ করে ঠান্ডা মাথায় খুন ৩ শ্রমিককে, শোপিয়ান-কাণ্ডে দাবি চার্জশিটে

চলতি বছরের ১৮ জুলাই রাতে শোপিয়ানের ওই ঘটনায় তোলপাড় হয়েছিল দেশ।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সংবাদ সংস্থা
শ্রীনগর শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০২০ ২৩:৫৫
Share: Save:

ভারতীয় সেনা আধিকারিকের দাবি ছিল, জম্মু-কাশ্মীরের শোপিয়ানে তিন ‘খতরনাক জঙ্গি’কে খতম করা গিয়েছে। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় সে ছবি ভাইরাল হতেই রাজৌরি জেলার ওই ‘খতরনাক জঙ্গি’দের পরিবারের পাল্টা দাবি, নিহতরা তাঁদের আত্মীয়। জঙ্গি নয়, মজদুরির খোঁজেই শোপিয়ানে গিয়েছিলেন তাঁরা। তদন্তকারীদের দাবি, ঠান্ডা মাথায় রীতিমতো ছক কষে ভুয়ো এনকাউন্টারে তিন শ্রমিককে খুন করেছিলেন সেনার এক আধিকারিক।

চলতি বছরের ১৮ জুলাই রাতে শোপিয়ানের ওই ঘটনায় তোলপাড় হয়েছিল দেশ। তদন্তের পর শনিবার শোপিয়ানের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে সেনার এক ক্যাপ্টেন-সহ তিন জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিয়েছে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ। ১ হাজার ৪০০ পাতার চার্জশিটে দাবি, কী ভাবে অপহরণের পর শোপিয়ানে ভুয়ো এনকাউন্টার করে খতম করেছিল রাজৌরির তিন শ্রমিককে।

শোপিয়ানের পুলিশ সুপার অমৃতপাল সিংহ বলেন, ‘‘ভুয়ো এনকাউন্টার-কাণ্ডে নিহতরা হলেন আবরার আহমেদ (২৫), ইমতিয়াজ আহমেদ (২০), মহম্মদ আবরার (১৬)। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন ৬২ রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের ক্যাপ্টেন ভূপেন্দ্র সিংহ ওরফে মেজর বশির খান। এনকাউন্টারে তাঁর দুই সঙ্গী ছিলেন চৌগামের বাসিন্দা তাবিশ নাজির মালিক এবং পুলওয়ামার বিলাল আহমেদ লোন। তদন্ত চলাকালীন লোন ওই ঘটনার সাক্ষী হতে রাজি হয়ে যান।’’

আরও পড়ুন: ৩ শিশুকে বাঁচিয়ে পুড়ে মৃত্যু, নালন্দার কিশোরকে ‘অমিত’ শ্রদ্ধা সেনার

তদন্তকারীদের দাবি, রীতিমতো ছক কষে শোপিয়ানে ভুয়ো এনকাউন্টার করেছিলেন অভিযুক্তরা। ঘটনার আগের দিন অর্থাৎ ১৭ জুলাই রেশনাগিরি সেনা ক্যাম্পে তাবিশ এবং বিলালের সঙ্গে দেখা করেন ক্যাপ্টেন ভূপেন্দ্র। লোনের গাড়িতে করেই ওই ক্যাম্পে গিয়েছিলেন তাঁরা। স্থানীয় ওই দু’জনের সঙ্গে আগে থেকেই যোগাযোগ ছিল ক্যাপ্টেনের। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ তাঁরা অন্য একটি গাড়িতে সেনা ক্যাম্প ছেড়ে চলে যান। চৌগামের এক ভাড়াবাড়ি থেকে রাতেই আবরারদের অপহরণ করেন অভিযুক্তরা। এর পর তাঁদের গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হয় শোপিয়ানের জঙ্গলে। গাড়ি থেকে নামিয়ে তাঁদের হেঁটে চলে যেতে বলেন ক্যাপ্টেন। তবে হাঁটতে শুরু করামাত্রই তাঁদের গুলি করা হয়। অভিযোগ, ক্যাপ্টেনই ওই তিন শ্রমিককে গুলি করেন। ঘটনার এখানেই শেষ নয়। ভুয়ো এনকাউন্টারের পর ওই শ্রমিকদের দেহের কাছে অস্ত্রশস্ত্র রেখে দেন অভিযুক্তরা।

আরও পড়ুন: ডিসেম্বরে আগত বিদেশফেরত করোনা আক্রান্তদের জিনোম সিয়োকেন্সিং হবে

চার্জশিটে বলা হয়েছে, ঘটনার কয়েক ঘণ্টা আগেই কাজের খোঁজে শোপিয়ানে পৌঁছেছিলেন ওই তিন শ্রমিক। সেনার দাবি ছিল, তিন জঙ্গির কাছ থেকে প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। তবে তদন্তকারীদের দাবি, যে ২টি পিস্তল, কার্তুজ-সহ একে সিরিজের অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে, তা বেআইনি ভাবে জোগাড় করে অভিযুক্তরাই সেখানে রেখে দিয়েছিলেন।

আরও পড়ুন: ছোটা রাজন, মুন্না বজরঙ্গির নামে ডাকটিকিট যোগীর রাজ্যে, তদন্তের নির্দেশ

শোপিয়ানের ঘটনার পর তদন্তে নেমে ২৮ সেপ্টেম্বর ক্যাপ্টেনের দুই সঙ্গীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে এখনও মুক্ত রয়েছেন ক্যাপ্টেন। প্রয়োজনীয় অনুমোদন না পাওয়ায় তাঁকে আফস্পা (আর্মড ফোর্সেস স্পেশাল পাওয়ার্স অ্যাক্ট) এবং আর্মি অ্যাক্টের আওতায় গ্রেফতার করা যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Fake Encounter Shopian Indian Army
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE