ট্রেনের জন্য স্টেশনে অপেক্ষা করছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গজপতি রাজু। ছবি: সংগৃহীত।
এক বয়স্ক ব্যক্তি পরিবার নিয়ে হায়দরাবাদ স্টেশনে অপেক্ষা করছেন ট্রেনের জন্য। আপাতদৃষ্টিতে এই ছবিতে অস্বাভাবিক কিছু নেই। অবাক হওয়ার মতো বিষয়ও অনুপস্থিত। কিন্তু অপেক্ষারত ব্যক্তি যদি হন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং পারিবারিক ভাবে তিনি যদি কোনও বিখ্যাত রাজপরিবারের অংশ হন, তা হলে বিস্মিত হতে হয় বৈকি। অপেক্ষমান বয়স্ক যাত্রীটির নাম অশোক গজপতি রাজু। মোদী সরকারের প্রথম দফায় (২০১৪-২০১৮) বিজয়নগরম রাজপরিবারের এই সন্তানই সামলেছিলেন অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রকের গুরুদায়িত্ব।
একটা সময় ছিল যখন, রাজনীতির আঙিনায় এত টাকা আসেনি। রাজনীতিবিদদেরও আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতোই লাগত। ব্যতিক্রম সেই সময়ও যেমন ছিল, এখনও আছে। কিন্তু পার্থক্য হল, সে আমলে ব্যতিক্রমী ছিলেন সেই নেতারা, যাঁরা আর পাঁচ জন সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশলেও নিজের পদের ভার ত্যাগ করতে পারতেন না। মাথায় সমান সমান হলেও পদের গরিমা সর্বদাই জ্বলজ্বল করে জ্বলে বুঝিয়ে দিত, তিনি আলাদা! আর এই আমলে তা সম্পূর্ণ উল্টে গিয়েছে। ইদানীং, নেতা, মন্ত্রী মানেই যেন সাধারণের চেয়ে আলাদা। আর যাঁকে সাধারণের সঙ্গে তফাত করতে পারবেন না, তিনিই আজ ব্যতিক্রম। যেমন, তেলগু দেশম পার্টির বর্ষীয়ান নেতা অশোক। মোদী সরকার ২০১৪ সালে যখন ক্ষমতায় আসে তখন সেই মেয়াদের সিংহভাগ সময় তিনিই ছিলেন অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রী। তাঁর আরও একটি পরিচয় রয়েছে। তিনি বিখ্যাত বিজয়নগরম রাজপরিবারের সদস্য। একে তো প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, দ্বিতীয়ত, রাজপরিবারের পরিচয়, এই দু’য়ে মিলে অশোক যে ব্যতিক্রম হবেন, তা কে-ই বা বুঝতে পেরেছিল।
একটি ছবি ছড়িয়ে পড়েছে সমাজমাধ্যমে। (ছবির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।) যেখানে দেখা যাচ্ছে, পরিবারের সদস্যদের নিয়ে হায়দরাবাদ স্টেশনে ট্রেনের অপেক্ষায় বসে রয়েছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। সেখানে তাঁকে দেখা যাচ্ছে নীল রঙের একটি জ্যাকেট পরে প্রতিটি স্টেশনে থামের চারপাশে যে সিমেন্টের বেদি থাকে সেখানে বসে থাকতে। পাশে ছোট্ট একটি ছেলে। সম্ভবত, গজপতির নাতি। আর এক প্রৌঢ়াকেও দেখা যাচ্ছে। তিনি সম্ভবত গজপতির স্ত্রী। তাঁদের প্রত্যেককেই দেখা যাচ্ছে, অত্যন্ত স্বাভাবিক ভঙ্গিতে স্টেশনে ট্রেনের অপেক্ষা করতে। এই প্রসঙ্গেই সমাজমাধ্যমে অনেকেই মনে করিয়ে দিচ্ছেন বর্তমান অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রীর কথা। তিনি জ্যোতিরাদিত্য শিন্ডে। যিনি রাজনীতির আঙিনায় ‘মহারাজা’ নামে সমধিক পরিচিত। শোনা যায়, তাঁর মেজাজও নাকি সেই নামের সঙ্গে মানানসই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy