Advertisement
২১ মে ২০২৪
farm bill 2020

Farm Law: কী রয়েছে বিতর্কিত তিন কৃষি আইনে, কী নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন কৃষকেরা

গত বছর সেপ্টেম্বরে সংসদে ভোটাভুটি ছাড়াই নরেন্দ্র মোদী সরকার ধ্বনিভোটে পাশ করিয়ে নিয়েছিল বিতর্কিত তিন কৃষি বিল।

কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন।

কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন। ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২১ ১৬:৫৯
Share: Save:

প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল গত বছরের জুন মাসে। সেপ্টেম্বরে সংসদে প্রয়োজনীয় বিতর্ক এমনকি ভোটাভুটি ছাড়াই নরেন্দ্র মোদী সরকার ধ্বনিভোটে পাশ করিয়ে নিয়েছিল বিতর্কিত তিন কৃষি বিল। রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সম্মতি পাওয়ার পরে তা পরিণত হয় নয়া আইনে।

প্রথমটি ‘অত্যাবশ্যক পণ্য (সংশোধনী) আইন’ বা ‘দ্য এসেনসিয়াল কমোডিটিজ (অ্যামেডমেন্ট ) অ্যাক্ট’। দ্বিতীয়টি ‘কৃষি পণ্য লেনদেন ও বাণিজ্য উন্নয়ন আইন’ বা ‘ফারমার্স প্রডিউস ট্রেড অ্যান্ড কমার্স (প্রমোশন অ্যান্ড ফ্যাসিলিয়েশন) অ্যাক্ট’। তৃতীয়টি ‘কৃষক সুরক্ষা ও ক্ষমতায়ন (মূল্য এবং কৃষি পরিষেবা সংক্রান্ত) আইন’ বা ‘ফারমার্স (এমপাওয়ারমেন্ট অ্যান্ড প্রোটেকশন) এগ্রিমেন্ট অন প্রাইস অ্যান্ড ফার্ম সার্ভিসেস অ্যাক্ট’।

মোদী সরকারের দাবি ছিল, মূলত তিনটি উদ্দেশ্য পূরণের জন্য এই তিনটি কৃষি আইন কার্যকর করা হচ্ছে। ১. কৃষিক্ষেত্রে ফড়ে বা দালালদের আধিপত্য কমিয়ে কৃষকের আয় বাড়ানো। ২. রাজ্যগুলিতে চুক্তি-ভিত্তিক চাষের ব্যবস্থা আইনসিদ্ধ করা। ৩. কৃষিপণ্য বিপণন নিয়ে যে আইন রয়েছে তা দূর করে আন্তঃরাজ্য কৃষিপণ্যের অবাধ বাণিজ্যের রাস্তা খুলে দেওয়া।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

অত্যাবশ্যক পণ্য (সংশোধনী) আইনের মাধ্যমে বেসরকারি সংস্থাগুলিকে সরাসরি কৃষকদের থেকে কৃষিপণ্য কিনে মজুত ও বিক্রির অধিকার দেওয়া হয়। আন্দোলনকারী কৃষক এবং বিরোধীদের অভিযোগ, এই আইন আসলে সরকারি সহায়ক মূল্য তুলে দেওয়ার গোড়াপত্তন। কৃষকের উৎপাদিত কৃষি পণ্য কেনার দায় সরকার নিজেদের ঘাড় থেকে ঝেড়ে ফেলতে চাইছে। আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়, বর্তমানে সরকার কৃষকদের যে পরিমাণ সহায়ক মূল্য দেয়, তা বেসরকারি সংস্থা বা কোনও ব্যবসায়ী দেবেন না। তা ছাড়া থেকে সরকার চাল, ডাল, গম, ভোজ্য তেল, তৈলবীজ ইত্যাদি অত্যাবশ্যকীয় পণ্য সামগ্রীর মজুতের ঊর্ধ্বসীমা বলে কিছু না রাখায় অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা ঘুরপথে চলে যাবে বড় ব্যবসায়ীদের হাতে।

কৃষি পণ্য লেনদেন ও বাণিজ্য উন্নয়ন আইনের মাধ্যমে কৃষকদের মান্ডির বাইরেও তাঁদের ফসল বিক্রি করার সুযোগ দেওয়ার কথা বলা হয়। দীর্ঘ দিনের ব্যবস্থায় কৃষকের উৎপাদিত কৃষিজ পণ্য মান্ডির মাধ্যমে একাধিক হাত ঘুরে এসে পৌঁছয় বড় ব্যবসায়ী বা বেসরকারি সংস্থার কাছে। নতুন কৃষি আইন কার্যকর হলে বড় ব্যবসায়ী বা বেসরকারি কোনও সংস্থা চাইলে সরাসরি চাষির কাছ থেকে কৃষিজ পণ্য কিনে নিতে পারবে। সরকারের যুক্তি, এর ফলে কৃষকরা বাজারের সর্বোচ্চ মূল্য পাবেন। কিন্তু আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়, এর মাধ্যমে ধীরে ধীরে মান্ডি ব্যবস্থার অবলুপ্তি ঘটবে। বড় বাণিজ্যিক সংস্থাগুলি সেই সুযোগে কৃষকদের ক্রমাগত বঞ্চনা করার সুযোগ পাবে।

কৃষক সুরক্ষা ও ক্ষমতায়ন (মূল্য এবং কৃষি পরিষেবা সংক্রান্ত) আইনটি আসলে চুক্তিভিত্তিক চাষ বিষয়ে। এই আইন অনুযায়ী কোনও বেসরকারি বাণিজ্য সংস্থা বা খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ সংস্থা চাইলে কৃষকদের কাছ থেকে জমি লিজ নিয়ে সেই জমিতে কৃষিজ পণ্য ফলাতে পারবে। জমির চুক্তি অনুযায়ী কৃষক দাম পেয়ে যাবেন। কৃষক নিজের জমিতে কাজ করতে চাইলে, তার জন্য দৈনিক পারিশ্রমিকও মিলবে। সরকারের যুক্তি, এতে দেশীয় কৃষিজ পণ্যের চাহিদা বাড়বে। কৃষি পণ্য রফতানির পথ প্রশস্ত হবে। কিন্তু অভিযোগ, এই আইননে কৃষক নিজের জমিতে ক্রীতদাস হয়ে যাবে। ভেড়ির মালিকরা যেমন জোর করে জমি কেড়ে নেয়, একদিন তেমন কৃষককে বেসরকারি সংস্থাকে জমির লিজ দিতে বাধ্য করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

farm bill 2020 Farm Law Farm Laws Farmers Protest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE