পুড়ে যাওয়া ট্রাকের সারি। ডিমা হাসাও জেলায়। শুক্রবার। ছবি: পিটিআই
আট বছর পরে বড় জঙ্গি হানার সাক্ষী রইল অসমের ডিমা হাসাও জেলা। গত কাল সিমেন্ট কোম্পানির পাঁচটি লরিকে আটকে লাগাতার গুলি করে জঙ্গিরা। পরে ট্রাকগুলিতে আগুন ধরিয়ে দেয়৷ আজ ৫ জনের দগ্ধ দেহের অংশবিশেষ উদ্ধার করা হয়। তাঁদের কেউ চালক, কেউ খালাসি। এক জন চালক গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অন্যেরা পালিয়ে জঙ্গলে ঢুকে প্রাণ বাঁচান।
অসম পুলিশের স্পেশাল ডিজি জ্ঞানেন্দ্রপ্রতাপ সিংহ এই ঘটনার জন্য ডিমা ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (ডিএনএলএ)-কে দায়ী করছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘সিমেন্ট কোম্পানি থেকে চাঁদা আদায়ের কৌশল হিসেবে এই হামলা৷ গোটা সংগঠনে ২০ জনের বেশি সদস্য নেই৷ কিন্তু এনএসসিএন (আইএম) তাদের নানা ভাবে সহযোগিতা করছে।’’ তবে ডিএনএলএ বা অন্য কোনও সংগঠন এখনও ঘটনার দায় স্বীকার করেনি।
নিহতরা হলেন গৌড় মজুমদার, দিলোয়ার হোসেন, সিকন্দর আলি, আসগর আলি এবং ধর্মেন্দ্রকুমার পাস৷ ধর্মেন্দ্রর বাড়ি উত্তরপ্রদেশে। অন্যরা হোজাই জেলার লংকার বাসিন্দা। তাঁরা ডিমা হাসাও জেলার উমরাংশু থেকে সিমেন্ট তৈরির সামগ্রী নিয়ে লংকায় যাচ্ছিলেন। চারটিতে ছিল ক্লিংকার, একটিতে কয়লা।
নগাঁও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ফারুক আহমেদ জানান, ‘‘সামনে চারটি গাড়ি দাঁড়িয়ে। আমাকেও থামতে বলা হয়। দাঁড়াতে দাঁড়াতেই গাড়িতে দুই রাউন্ড গুলি করে। এক জন গাড়ির পাদানিতে উঠে বন্দুকের নল ভেতরে ঢুকিয়ে আমার পায়ে গুলি করে।’’ তিনি তখন উল্টো দিকের দরজা খুলে নীচে লাফাতে গিয়ে নালায় পড়ে যান। সেখানেই মৃতের মতো পড়ে থাকেন। পাঁচ গাড়িতে বেশ কিছু সময় লাগাতার গুলি চালায় জঙ্গিরা। তখনই চালক-খালাসিদের কয়েক জন পালিয়ে বাঁচেন। ফারুকের অনুমান, ওই ৫ জন গুলিবিদ্ধ হয়েই মারা গিয়েছেন বা এমনই জখম হয়েছিলেন যে, নামতে পারেননি। প্রথম গাড়ির চালক গৌর মজুমদার পেটে গুলি নিয়ে বেশি দূর যেতে পারেননি। পড়ে যান রাস্তায়৷ জঙ্গিরা সেখানে গিয়ে তাঁকে একেবারে ঝাঁঝরা করে দেয়।
ডিএইচডির পর ২০১৩ সালে ডিএইচডিজে অস্ত্র সমর্পণ করলে ডিমা হাসাওয়ে শান্তি ফিরে এসেছিল। ২০১৯ সালে ডিএনএলএ আত্মপ্রকাশ করে। তবে এত বড় ঘটনা তারা এই প্রথম ঘটিয়েছে। ঘটনাস্থল রেঞ্জারবিল থেকে গ্রামবাসীদের অধিকাংশ রাতেই পালিয়েছেন। বাকিরাও আতঙ্কে সময় কাটাচ্ছেন। জেলা জুড়েই ভয়ের পরিবেশ। শনিবার থেকে পর্যটকদের নিয়ে পাহাড় লাইনে ভিস্টাডোম চলার কথা। তার আগে এই ঘটনায় পর্যটন শিল্পের সম্ভাবনা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy