ফাইল চিত্র।
হতে পারে, তাঁকে কিছু দিন আগেই তৃণমূল কংগ্রেসের বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে একই মঞ্চে দেখা গিয়েছে। হতে পারে, তেলঙ্গানায় কংগ্রেসের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী কে চন্দ্রশেখর রাও তাঁর সঙ্গে কাজ করছেন। হতে পারে, তিনি সম্প্রতি বিহারে গিয়ে নীতীশ কুমারের সঙ্গে বৈঠক করে এসেছেন।
এ সব সত্ত্বেও গুজরাতে কংগ্রেসের নেতাদের একাংশ প্রশান্ত কিশোরকে চাইছেন। চলতি বছরের শেষেই গুজরাতে বিধানসভা নির্বাচন। গুজরাত কংগ্রেসের একটা বড় অংশের নেতা চান, ভোটে কংগ্রেসের কৌশল তৈরির জন্য প্রশান্ত কিশোরকে কংগ্রেস নিয়োগ করুক। মঙ্গলবার রাতে খোদ রাহুল গান্ধীর সঙ্গে গুজরাতের কংগ্রেস নেতাদের বৈঠকে এই দাবি উঠেছে। সূত্রের খবর, এ বিষয়ে অনেকে আপত্তিও তুলেছেন। তাই এখনও কোনও ফয়সালা হয়নি। আজও গুজরাতের নেতাদের সঙ্গে রাহুলের বৈঠক হয়।
গত বছর প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে গান্ধী পরিবারের সনিয়া, রাহুল, প্রিয়ঙ্কার একাধিক বৈঠক হয়েছিল। সে সময় কিশোরের কংগ্রেসে যোগ দেওয়া নিয়েও জল্পনা তৈরি হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কিছুই হয়নি। কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছিল, কিশোর গান্ধী পরিবারের সামনে কংগ্রেসকে চাঙ্গা করার পরিকল্পনা পেশ করলেও নিজের হাতে এত ক্ষমতা চেয়েছিলেন যে গান্ধীরা রাজি হননি।
কংগ্রেস সূত্রের খবর, গত অগস্টেই কংগ্রেসের ভরতসিংহ সোলাঙ্কি, কানুভাই কালসারিয়ার মতো কংগ্রেস নেতারা প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। সে সময় কিশোরের আই-প্যাক সংস্থার উদ্যোগে গুজরাতে কিশোরের অধীনে থেকে রাজনীতি শেখার জন্য তরুণদের নিয়োগ করা শুরু হয়েছিল। মঙ্গলবার রাতে রাহুলের বাড়িতে গুজরাতের নেতাদের বৈঠকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি জগদীশ ঠাকোর, কার্যকরী সভাপতি হার্দিক পটেল, এআইসিসি-র ভারপ্রাপ্ত নেতা রঘু শর্মা হাজির ছিলেন। সেখানে গুজরাতের একাংশ নেতা মত দেন, প্রশান্ত কিশোর অতীতে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কাজ করেছেন। তাই মোদী-শাহের ঘরের মাঠে তাঁদের ধাক্কা দিতে হলে তিনিই সেরা অস্ত্র। কিন্তু বেশ কিছু কংগ্রেস নেতার তাতে আপত্তি রয়েছে। মেঘালয়, গোয়ায় কিশোর তৃণমূলের হয়ে কংগ্রেস ভাঙানোর কাজ করেছেন বলে তাঁদের অভিযোগ। কংগ্রেস সম্পর্কে কিশোরের সাম্প্রতিক বেশ কিছু মন্তব্যেও অনেকে অখুশি।
উত্তরপ্রদেশ-সহ পাঁচ রাজ্যে ভোটে হারের পর কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে রাহুল মন্তব্য করেছিলেন, বিজেপি যে ভাবে নির্বাচনে লড়ছে, তার মোকাবিলায় নব্বইয়ের দশকের পুরনো পদ্ধতিতে ভোটে লড়ে কাজ হবে না। রাহুলের এই মন্তব্যের পরে ফের প্রশান্ত কিশোরের মতো ভোটকুশলীকে নিয়োগ নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়।
কংগ্রেস নেতারা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, আগামী বছর কর্নাটকে ভোটের জন্য কংগ্রেস ভোটকুশলী সুনীল কানুগোলুকে নিয়োগ করেছে। কর্নাটকেও প্রশান্ত কিশোরকে নিয়োগ নিয়ে কংগ্রেসের মধ্যে আলাপ-আলোচনা চলেছিল। কিন্তু সেখানেও অনেকে কিশোরকে নিয়ে আপত্তি তোলায় শেষ পর্যন্ত রাহুলের সঙ্গে আলোচনা করে সুনীলকেই নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়। সুনীলও প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে একই সময়ে কাজ শুরু করেছিলেন। ২০১৪-য় নরেন্দ্র মোদীর লোকসভা ভোটের প্রচারে তিনি কাজ করেছেন। ২০১৭-য় উত্তরপ্রদেশে ও তার আগে উত্তরাখণ্ড, হিমাচল, গুজরাতে বিজেপি-র হয়ে কাজ করেছেন তিনি। ’১৯-এর লোকসভায় ডিএমকে, ২০২১-এ এডিএমকে এবং সম্প্রতি পঞ্জাবে অকালি দলের হয়ে সুনীল কাজ করেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy