ছত্রপতি: সুরেন্দ্রনগরের সভায় নরেন্দ্র মোদী। রবিবার। ছবি: পিটিআই।
সংখ্যালঘুদের বড় অংশের ভোট যে বিজেপি পায় না তা নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের অজানা নয়। কিন্তু গুজরাতের অগ্নিপরীক্ষায় চিরাচরিত পাতিদার ভোটব্যাঙ্কে ভাঙন ধরেছে। তাই আজ গুজরাতে মুসলমান ও খ্রিস্টানদের সামনেও নিজেকে ফের ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ হিসেবে তুলে ধরলেন নরেন্দ্র মোদী। উদাহরণ দিয়ে দাবি করলেন, উন্নয়ন বা মানবিক সহায়তায় তাঁর সরকার ধর্মের ভিত্তিতে বাছবিচার করে না।
গুজরাতের মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় উন্নয়ন পৌঁছয় না, কংগ্রেস বা বিরোধী দলগুলি দীর্ঘদিন ধরেই এই অভিযোগ করে আসছে। আজ নরেন্দ্র মোদী ভারুচের জনসভায় কার্যত তা খারিজ করে বলেন, ‘‘ভারুচ ও কচ্ছ জেলায় যথেষ্ট মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ রয়েছেন। গুজরাতে বিজেপি সরকারের আমলে যে জেলাগুলিতে সবচেয়ে বেশি উন্নয়ন হয়েছে, তার মধ্যে এই দু’টি জেলা প্রথম সারিতে থাকবে।’’ ক’দিন আগেই নভসারিতে আজানের সময় বক্তৃতা বন্ধ করে দীর্ঘক্ষণ মৌন ছিলেন মোদী। আজ ভারুচের জনসভায় মুসলিমদের নিয়ে এই মন্তব্যের পর সন্ধ্যায় মোদী অমদাবাদে খ্রিস্টানদেরও একই ভাবে ধর্মনিরপেক্ষতার বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেন।
গুজরাতের ভোটের মুখেই গাঁধীনগরের আর্চবিশপ থমাস ম্যাকওয়ান সব যাজকদের চিঠি লিখে কার্যত বিজেপিকে গুজরাত থেকে সরানোর ডাক দিয়েছিলেন। তাঁর যুক্তি ছিল, জাতীয়তাবাদী শক্তি যে ভাবে গোটা দেশে ক্ষমতা দখল করছে, তাতে সংখ্যালঘুরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন। গুজরাত সেখানে ব্যতিক্রম হতে পারে।
আরও পড়ুন: মোদীর তোপে রাহুলের ভোট
মোদী বলেন, ‘‘আধ্যাত্মিকতার সঙ্গে যুক্ত কোনও ব্যক্তি ক্ষমতা থেকে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে সরানোর হুলিয়া জারি করছেন দেখে আমি বিস্মিত। রাষ্ট্রভক্তিই তো সব ভেদাভেদ মুছে দেয়।’’ বিদেশে জঙ্গিদের হাতে অপহৃত কেরলের ধর্মযাজক ফাদার টম উঝুন্নেলিল, তামিলনাড়ুর ফাদার প্রেম কুমার, পশ্চিম এশিয়ায় আটকে পড়া নার্সদের দেশে ফিরিয়ে আনার উদাহরণ টেনে মোদী বলেন, ‘‘জাতীয়তাবাদের জন্যই এই কাজ সম্ভব হয়েছে। ফিরিয়ে আনা হয়েছে অপহৃত জুডিথ ডি’সুজাকে।’’ তাৎপর্যপূর্ণ হল, মোদী এই কথা বলেছেন অমদাবাদে স্বামীনারায়ণ গুরুকুলের হাসপাতালের উদ্বোধনে।
হঠাৎ কেন সংখ্যালঘু দরদী কেন মোদী? বিজেপি নেতাদের ব্যাখ্যা, তিন তালাক বন্ধে সক্রিয়তা দেখিয়ে মোদী সংখ্যালঘুদের একাংশের ভোট টানার চেষ্টা করছেন। এটাও সেই কৌশলেরই অন্তর্গত। এতে হারানোর কিছুই নেই, কিছু ভোট এলে তা উপরি পাওনা। উদারমনস্ক হিন্দুরাও এই ধর্মনিরপেক্ষতা পছন্দ করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy