দর্শন হীরানন্দানি। — ফাইল চিত্র।
দর্শন হীরানন্দানি এবং তাঁর বাবা নিরঞ্জন হীরানন্দানিকে তলব করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। ইডির একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, বিদেশি মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘনের একটি মামলায় তাঁদের তলব করা হয়েছে। ২৬ ফেব্রুয়ারি, সোমবার তাঁদের হাজিরা দিতে হবে। গত ২২ ফেব্রুয়ারি হীরানন্দানির মুম্বইয়ের দফতরে এই মামলাতেই তল্লাশি চালিয়েছিল ইডি।
গত কয়েক বছর ধরে রিয়েল এস্টেট সংস্থার কর্তা হীরানন্দানিরা দুবাইয়ে থাকেন। ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, মু্ম্বইয়ে কেন্দ্রীয় সংস্থার দফতরে তাঁদের হাজিরা দিতে বলা হয়েছে। তা সম্ভব না হলে প্রতিনিধির মাধ্যমে প্রাথমিক বক্তব্য জানাতে পারবেন বাবা এবং ছেলে।
গত বৃহস্পতিবারই হীরানন্দানিদের মুম্বইয়ের দফতরে তল্লাশি চালিয়েছিল ইডি। ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, বিদেশি মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘনের একটি মামলায় তল্লাশি চালানো হয়। পাশাপাশি, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডের একটি ট্রাস্টের থেকে সংস্থার সুবিধা পাওয়ার বিষয়টিও নজরে রয়েছে আধিকারিকদের। হীরানন্দানি গোষ্ঠীর তরফে জানানো হয়েছে, ইডির সঙ্গে সব রকম সহযোগিতা করবে তারা। এই বিদেশি মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইনেই গত সপ্তাহে নোটিস পাঠানো হয়েছিল বহিষ্কৃত তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে। ইডির সূত্র জানিয়েছে, ওই মামলার সঙ্গে হীরানন্দানির মামলার কোনও যোগ নেই।
মহুয়া দাবি করেছিলেন, তিনি কোনও নোটিস পাননি। হাজিরাও দেননি। পরে পাল্টা একটি আইনি চিঠি পাঠান ইডিকে। ইডি আবার মহুয়াকে নোটিস পাঠিয়েছে বলে তদন্তকারী সংস্থার একটি সূত্র দাবি করেছে।
গত ডিসেম্বরে লোকসভার সাংসদ পদ থেকে বহিষ্কার করা হয় মহুয়াকে। ‘ঘুষের বিনিময়ে প্রশ্ন’ কাণ্ডে মহুয়াকে বহিষ্কারের সুপারিশ করেছিল লোকসভার এথিক্স কমিটি। ৪৯৫ পৃষ্ঠার রিপোর্ট জমা দিয়েছিল তারা। ওই রিপোর্ট পড়ে দেখার জন্য সময় চেয়েছিল তৃণমূল। কংগ্রেস এবং অন্য বিরোধী দলগুলির তরফেও স্পিকারের কাছে সময় চেয়ে জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু স্পিকার ওম বিড়লা তা নাকচ করে দিয়েছিলেন। বহিষ্কারের পর মহুয়া জানিয়েছিলেন, তিনি এই ঘটনার শেষ দেখে ছাড়বেন! আগামী ৩০ বছর লোকসভার ভিতরে এবং বাইরে লড়াই করবেন। বহিষ্কারের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তিনি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। সেখানে এখনও মামলাটি বিচারাধীন।
মহুয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ব্যবসায়ী দর্শনের কাছ থেকে উপহার ও টাকা নিয়ে সংসদে শিল্পপতি গৌতম আদানির সংস্থার বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। সেই প্রশ্নে তিনি আদানির সঙ্গে জুড়ে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও। সাংসদের লগইন আইডি ও পাসওয়ার্ডও দর্শনকে মহুয়া দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ ছিল বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবের। একই অভিযোগ করেছিলেন মহুয়ার প্রাক্তন বান্ধব আইনজীবী জয় দেহাদ্রাই। মহুয়া জানান, বন্ধু দর্শনকে তিনি আইডি, পাসওয়ার্ড দিয়েছিলেন শুধুমাত্র তাঁর প্রশ্নগুলি ‘টাইপ’ করে দেওয়ার জন্য। কৃষ্ণনগরের বহিষ্কৃত সাংসদের এ-ও দাবি, ওই সংক্রান্ত কোনও নির্দিষ্ট নিয়ম বা বিধি নেই। এই আবহে দর্শনের মুম্বইয়ের দফতরে তল্লাশি এবং তার পর তাঁদের তলব ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলেই মনে করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy