Advertisement
১৬ মে ২০২৪
Kohima

Kohima Protest: উত্তপ্ত কোহিমা, মিছিল থেকে আফস্পা তোলার ডাক, সেনা-গতিবিধিতে নিষেধাজ্ঞা বহাল

সংসদে অসত্য বিবৃতির অভিযোগে অমিত শাহের ক্ষমাপ্রার্থনার দাবি করেছেন আন্দোলনকারীরা। মন জেলায় সেনার গতিবিধির উপর নিষেধাজ্ঞা এখনও বহাল।

রাজধানী কোহিমায় প্রতিবাদ মিছিল।

রাজধানী কোহিমায় প্রতিবাদ মিছিল। ছবি— পিটিআই।

সংবাদ সংস্থা
কোহিমা শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০২১ ১৭:২৫
Share: Save:

সেনার গুলিতে ১৪ জন তরুণের মৃত্যুর পর কেটে গিয়েছে বেশ কিছুদিন। কিন্তু নাগাল্যান্ডে উত্তাপ কমার কোনও লক্ষণ নেই। উল্টে তা বেড়েই চলেছে। এতদিন যা সীমাবদ্ধ ছিল অকুস্থল মন জেলায়, এ বার তা রাজ্য জুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে। শুক্রবার নাগাল্যান্ডের কোহিমায় বিরাট মিছিল করল রাজ্যের প্রভাবশালী ছাত্র সংগঠন। প্রতিবাদ মিছিল থেকে দাবি উঠল দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির এবং আর্মড ফোর্সেস স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্ট (আফস্পা) প্রত্যাহারের। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ক্ষমা চাওয়ার দাবি ছিল প্রতিবাদীদের ব্যানার, পোস্টারে।

গত ৪ ডিসেম্বর, নাগাল্যান্ডের মন জেলায় জঙ্গি ভেবে একটি ট্রাক লক্ষ্য করে গুলিবৃষ্টি করে সেনাবাহিনী। তার পর স্থানীয়দের সঙ্গে সেনার সংঘর্ষে মৃত্যু হয় মোট ১৪ জনের। এর পর কেটে গিয়েছে ১৩ দিন। কিন্তু স্থানীয়দের ক্ষোভ কমার কোনও লক্ষণ নেই। শুক্রবার ক্ষোভের উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ল নাগাল্যান্ডের রাজধানী কোহিমায়। বিশাল প্রতিবাদ মিছিলে ফের উঠল আফস্পা প্রত্যাহারের গণদাবি।

শুক্রবার, রাজধানী কোহিমায় প্রতিবাদ মিছিল করে প্রভাবশালী ছাত্র সংগঠন নাগা স্টুডেন্টস ফেডারেশন (এনএসএফ)। তাতে যোগ দেন বিভিন্ন বয়সের মানুষ। ক্রমেই কলেবরে অতিকায় হয়ে ওঠে সেই প্রতিবাদ মিছিল। মিছিল থেকে দাবি ওঠে, উত্তর-পূর্ব থেকে অবিলম্বে আফস্পা প্রত্যাহারের এবং গণহত্যায় দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির।

মিছিলে অংশ নেওয়া মানুষের হাতে ছিল বিভিন্ন স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড। তার কোনওটিতে লেখা, ‘আফস্পা প্রত্যাহারের আগে আর কত বুলেট চলবে?’ ‘আফস্পা বাতিল করুন, আমাদের নয়’-সহ বিভিন্ন পোস্টার।
শুক্রবার ছিল লাগাতার প্রতিবাদের তৃতীয় দিন। মন জেলায় সেনার গতিবিধির উপর নিষেধাজ্ঞা এখনও বহাল। তবুও স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ প্রশমনের কোনও উপসর্গ নেই। তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাপার হল, এত দিন আন্দোলন মোটের উপর সীমাবদ্ধ ছিল মন জেলায়। এ বার তা ছড়িয়ে পড়ল রাজধানী কোহিমাতেও। এতেই প্রশাসনের রক্তচাপ বেড়েছে।

কোনইয়াক ইউনিয়নের সম্পূর্ণ অসহযোগিতা দিয়ে আন্দোলনের শুরু, তার চালিকাশক্তি হয়ে ওঠে ইস্টার্ন নাগাল্যান্ড পিপলস অর্গানাইজেশন (ইএনপিও)। তারা ডাক দেয়, ভারতের সমস্ত উৎসব পালন থেকে নাগাল্যান্ড থেকে বিরত থাকার। ওই এলাকায় সেনার কোনও প্রকার ভর্তি প্রক্রিয়াতেও স্থানীয়দের অংশ নিতে বারণ করে দেয় তারা। বৃহস্পতিবার মন জেলায় সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত সামগ্রিক হরতাল পালিত হয়। শুক্রবার বিরাট প্রতিবাদ মিছিল আছড়ে পড়ল রাজধানী কোহিমায়। ফলে ক্রমশই যে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ছে, তা স্পষ্ট।

শুক্রবারের প্রতিবাদ মিছিল থেকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরও পদত্যাগ দাবি করা হয়। অমিত শাহকে নাগাল্যান্ডবাসীর কাছে ক্ষমা চাওয়ারও দাবি ওঠে। প্রসঙ্গত, গত ৬ ডিসেম্বর সংসদে অমিত শাহের বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছিল, সেনা ট্রাকটিকে থামতে বললে, তা গতি বাড়িয়ে ছুট লাগায়। তখন জঙ্গি সন্দেহে গুলি চালায় সেনা। কিন্তু এই দাবি মানতে চাইছেন না নাগাল্যান্ডের মানুষ। তাঁদের উল্টে দাবি, সংসদে মিথ্যা ভাষণের জন্য অমিত শাহকে ক্ষমা চাইতে হবে।

এর আগে নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী নেফিউ রিও এবং মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা উত্তর-পূর্ব থেকে আফস্পা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। ঘটনাচক্রে তাঁরা দু’জনেই কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন এনডিএ-এর সদস্য। এ বার শুরু হয়ে গেল জোরদার গণ আন্দোলন। সব মিলিয়ে নাগাল্যান্ড নিয়ে কেন্দ্রের মাথাব্যথা ক্রমেই বাড়ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE