মদনলাল সাইনি। ছবি: ফেসবুকের সৌজন্যে
গরু বাঁচাতে গিয়ে এবার ইতিহাসই পাল্টে ফেললেন বিজেপি নেতা। মুঘল সম্রাট হুমায়ুন নাকি মৃত্যুশয্যায় বাবরকে বলেছিলেন, ‘ভারতবর্ষে রাজত্ব করতে হলে গরুকে শ্রদ্ধা কর।’ গো-রক্ষায় একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্যের পর এবার যোগ হল রাজস্থানের বিজেপি সভাপতির এই ‘উদ্ভট ও অকাট্য’ যুক্তিও। মদনলাল সাইনির এই মন্তব্যের পরই তাঁকে নিয়ে শুরু হয়েছে ঠাট্টা-তামাশা। কেউ কেউ বলছেন, এ তো গল্পের গরুকে গাছে চড়িয়ে ছেড়েছেন বিজেপি নেতা।
হুমায়ুনের মৃত্যু শয্যায় বাবর! অর্থাৎ ছেলের মৃত্যুশয্যায় বাবা! তর্কের খাতিরে মেনে নেওয়া গেলেও ইতিহাস বলছে, হুমায়ুনের মৃত্যুর অন্তত ২৫ বছর আগে মারা গিয়েছেন বাবর। বাবরের মৃত্যু হয় ১৫৩১ সালে। ১৫৫৬ সালে মারা যান হুমায়ুন। তাহলে হুমায়ুনের মৃত্যুর সময় বাবর যে কোনওভাবেই উপস্থিত থাকতে পারেন না, এই সাধারণ ঐতিহাসিক সত্যটাও বোঝার চেষ্টা করলেন না এই মন্তব্য করার সময়।
জয়পুরে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে অলওয়ারে রাখবর খানের মৃত্যু প্রসঙ্গে রাজ্যসভার সাংসদ মদনলাল বলেন, ‘‘মৃত্যুর সময় বাবরকে কাছে ডেকে হুমায়ুন বলেছিলেন, হিন্দুস্তানে রাজত্ব করতে হলে তিনটি জিনিস মনে রেখো। গরু, ব্রাহ্মণ এবং মহিলাদের শ্রদ্ধা কর।’’
আরও পডু়ন: গোশালাতেই বোঝা যায় সামনে ভোট
রাখবর খান তথা গোরক্ষার ভূত বিজেপির ঘাড়ে এমনভাবে চেপে বসেছে যে তা সামাল দিতে গিয়ে মাঝেমধ্যেই বেফাঁস মন্তব্য করে বসছেন। আরএসএস নেতা ইন্দ্রেশ কুমার যেমন বলেছেন, ‘‘গোমাংস খাওয়া বন্ধ করলেই গোহত্যা বন্ধ হবে।’’ আবার বিজেপি সাংসদ বিনয় কাটিয়ার বলেছেন ‘‘গোহত্যা হলে গণপিটুনিও চলবে’’—এই মন্তব্যের জেরে তোলপাড় হয়েছে সংসদের উভয় কক্ষ। কেউ আবার গরুকে ‘রাষ্ট্রমাতা’ পর্যন্ত ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ফের গণপিটুনি, গরু ফেরালেন সাংসদ
ওয়াকিবহাল মহলের অনেকেই মনে করছেন, এই পর্যন্ত যা ছিল, তার মধ্যে অন্তত সংখ্যাতত্ত্বের অবাস্তবতা ছিল না। কিন্তু এবার মদনলালের এই মন্তব্য কার্যত সবাইকেই টপকে গেল। বিরোধীদের অনেকেই আবার সূক্ষ্ম খোঁচা দিয়েছেন, ‘‘এ তো বিপ্লবেরও বাড়া!’’ বিপ্লব অর্থাৎ ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব। ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী। ‘অবাস্তব’ কথাবার্তায় সাম্প্রতিক অতীতে যিনি একাধিক নজির গড়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy