ছররায় আহত ইনশা মুস্তাক। — ফাইল চিত্র
পরপর তিনটে অস্ত্রোপচার। কিন্তু তাতেও আশা প্রায় নেই বললেই চলে। চিরকালের মতো অন্ধকারে ডুবতে চলেছে ইনশার জগৎ। ভূস্বর্গে অশান্তির মাসুল গুনতে হচ্ছে বছর চোদ্দোর মেয়েটিকে। অন্য অনেকের মতোই ছররা গুলির শিকার দক্ষিণ কাশ্মীরের সোপিয়ান জেলার এই কিশোরী।
গত জুলাই মাসে নিরাপত্তাবাহিনী ও বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে যখন গোটা উপত্যকা উত্তপ্ত, তখনই দুর্যোগ নেমে এসেছিল ইনশার জীবনে। গত ২৩ জুলাই বাড়িতেই ছিল সে। কিন্তু বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে পুলিশে ছোড়া ছররা এসে লাগে ইনশার চোখে, কপালে ও মুখে। তার পর থেকে হাসপাতালে-হাসপাতালে দিন কাটছে ইনশার বাবা-মায়ের। ছররায় জখম আরও তিন জনের সঙ্গে দিল্লির এইমস হাসপাতালেও নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ইনশাকে। চিকিৎসকেরা জানান, দুই চোখের মারাত্মক ক্ষতি তো হয়েছেই, মস্তিষ্কেও সংক্রমণ ছড়িয়েছে তার।
শেষে চোখের চিকিৎসার জন্য মুম্বইয়ের আদিত্য জ্যোত হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে ইনশাকে। সেখানেই আজ তার চোখে অস্ত্রোপচার করা হয়। তিন ঘণ্টা ধরে চলে অস্ত্রোপচার। এ বার যদি আলো ফেরে মেয়ের চোখে— বড় আশায় বুক বেঁধেছিলেন মুস্তাক আহমেদ লোন! কিন্তু তৃতীয় বারের অস্ত্রোপচারেও বিশেষ লাভ হয়নি বলেই জানাচ্ছেন ইনশার চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা এস নটরাজন। তিনি এ দিন জানান, ছররার আঘাতে ইনশার দু’টো চোখই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ওই কিশোরীর বাঁ চোখের রেটিনার অর্ধেক অংশ কুঁচকে একেবারেই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আর বাকি অংশে রক্ত জমে রয়েছে। ফলে দৃষ্টি ফেরার আশা নেই বললেই চলে।
এই কঠিন সত্যটা এখনও মানতে পারছেন না বাবা মুস্তাক। তাঁর কাতর আকুতি, নিজের চোখ দিয়ে কি আলোয় ফেরানো যাবে না মেয়েকে! চিকিৎসকরা জানিয়ে দিয়েছেন, সেটা সম্ভব নয়। চরম নিরাশার মাঝেও তবু আশার আলো খুঁজছেন মুস্তাক!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy