Advertisement
১৯ মে ২০২৪

হিন্দুত্বে কংগ্রেসও? প্রিয়ঙ্কার টুইটে প্রশ্ন

টুইটে প্রিয়ঙ্কা লিখলেন, ‘‘সবাইকে শেষ ‘বড় মঙ্গল’ উপলক্ষে শুভকামনা।’’ মঙ্গল না হয় মঙ্গলবার, হনুমান পুজোর দিন। কিন্তু ‘শেষ বড় মঙ্গল’ কী?

ছবি: রয়টার্স।

ছবি: রয়টার্স।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০১৯ ০২:৫৫
Share: Save:

সভাপতি পদে রাহুল গাঁধী থাকবেন কি না, তা নিয়ে জল্পনা কাটেনি। তার মধ্যেই তিনি বিদেশে পাড়ি দিয়েছেন বলে কংগ্রেসের একটি সূত্রের দাবি। যদিও সংসদের অধিবেশন শুরুর আগেই তিনি ফিরে আসবেন বলে জানিয়েছে ওই সূত্রটি। আর এ দিনই রায়বরেলীর উদ্দেশে রওনা দেওয়ার ঠিক আগে একটি টুইট করে গোটা কংগ্রেসকেই চমকে দিলেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা।

টুইটে প্রিয়ঙ্কা লিখলেন, ‘‘সবাইকে শেষ ‘বড় মঙ্গল’ উপলক্ষে শুভকামনা।’’ মঙ্গল না হয় মঙ্গলবার, হনুমান পুজোর দিন। কিন্তু ‘শেষ বড় মঙ্গল’ কী? জানেন না দলের অনেকেই। খোঁজ পড়ল এ দিক-ও দিক। অবশেষে জানা গেল এর ইতিহাস। জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষ মঙ্গলবারের কথা বলছেন সনিয়া-কন্যা। উত্তরপ্রদেশে, বিশেষ করে লখনউয়ে আজকের দিনটি ঘটা করে পালন করা হয় হনুমান মন্দিরে।

এর একটি ইতিহাসও খুঁজে বার করেছেন কংগ্রেস নেতারা। তাঁদেরই এক জন বললেন, ‘‘আসলে নবাব মহম্মদ আলি শাহের ছেলে এক বার গুরুতর রোগের শিকার হন। অনেক জায়গায় চিকিৎসা করিয়েও কোনও ফল হয়নি। শেষে তাঁকে আলিগঞ্জের পুরনো হনুমান মন্দিরে নিয়ে আসা হয়। পূজারি অসুস্থ ছেলেকে মন্দিরে এক রাত রেখে যেতে বলেন। এক রাতের মধ্যে পুরো সুস্থ হয়ে ওঠেন সেই অসুস্থ ছেলে। তার পরেই পুরো জ্যৈষ্ঠ মাসের প্রতি মঙ্গলবার ধুমধাম করে হনুমানের পুজো হয়। সব ধর্মের মানুষই এতে শামিল হন। কিন্তু প্রিয়ঙ্কা এটি কী করে জানলেন, সেটিই আশ্চর্যের।’’

লোকসভা ভোটে পুনরায় বিপর্যয়ের নানা কারণের মধ্যে এটিও উঠে আসছে, নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের কট্টর হিন্দুত্বের সামনে রাহুল গাঁধীর ‘নরম-হিন্দুত্ব’ সে ভাবে সফল হয়নি। সদ্য গত কালই সিপিএমের বৈঠকের পরে সীতারাম ইয়েচুরি বলেছেন, ‘‘কট্টর হিন্দুত্বের সামনে নরম হিন্দুত্ব কোনও উত্তর নয়।’’ কংগ্রেসের অনেক নেতাও মনে করেন, শুধু ভোটের সময় পৈতে বার করে মন্দিরে-মন্দিরে ঘুরলেই মানুষ সেটি মেনে নেয় না। এক দিকে কট্টর হিন্দুত্বের মুখ নরেন্দ্র মোদী, অন্য দিকে আরএসএস— সব মিলিয়ে এই দৌড়ে অনেকটা এগিয়ে গেরুয়া শিবির।

কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য আর পি এন সিংহের কথায়, ‘‘যদি কংগ্রেসের কোনও নেতা হিন্দুত্বে বিশ্বাস করেন, সেটি সারা বছর ধরে পালন করতে হবে। ব্যক্তিগত স্তরে নয়, সেটি প্রকাশ্যে মেলেও ধরতে হবে। তবেই মানুষের কাছে তা গ্রহণযোগ্য হবে।’’ পাঁচ বছর আগে লোকসভা বিপর্যয়ের পর এ কে অ্যাটনিকে দিয়ে একটি কমিটি গঠন করিয়েছিলেন সনিয়া গাঁধী। হারের কারণ পর্যালোচনা করে অ্যান্টনি কমিটি বলেছিল, অতিরিক্ত সংখ্যালঘু তোষণের ভাবমূর্তি তৈরি হওয়ার খেসারতই দিতে হয়েছে কংগ্রেসকে।

প্রিয়ঙ্কার আজকের টুইটের পর কংগ্রেসের মধ্যেই প্রশ্ন উঠছে, তা হলে কি নেতৃত্বের বোধোদয় হল? প্রিয়ঙ্কার পরে রাহুলও কি তা হলে এই পথ ধরবেন? সদ্য গত কালই নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহ উভয়েই ‘জ্যৈষ্ঠ অষ্টমী’র শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। কাশ্মীরি পণ্ডিতদের কাছে যেটি উৎসবের দিন। বিজেপির নেতারা নিয়মিত এই কাজটি করে থাকেন। কিন্তু নিজেদের ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ ভাবমূর্তি ধরে রাখতে সব সময়ই ধন্ধে থাকা কংগ্রেসের নেতারাও কি এ বার নতুন পথে?

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Priyanka Gandhi Vadra Congress Hindutva
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE