রঞ্জন গগৈ।
বিচার বিভাগ যদি নিজের স্বাধীনতা টিকিয়ে রাখতে চায়, তা হলে তাকে বাইরের হস্তক্ষেপ থেকে মুক্ত থাকতে হবে বলে ফের বার্তা দিলেন বিচারপতি রঞ্জন গগৈ।
নরেন্দ্র মোদী সরকারের চাপের মুখে প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র মাথা নোয়াচ্ছেন, কার্যত এই অভিযোগ তুলেই চার প্রবীণ বিচারপতি জানুয়ারি মাসে সাংবাদিক বৈঠক করেছিলেন। যে সাংবাদিক বৈঠকে ছিলেন পরবর্তী প্রধান বিচারপতি হওয়ার দাবিদার বিচারপতি গগৈও। বিচারপতিদের সাংবাদিক বৈঠক করে বিচার বিভাগের কলহ প্রকাশ্যে আনা উচিত হয়েছিল কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল।
আজ দিল্লিতে এক বক্তৃতায় কার্যত সেই প্রশ্নেরই জবাব দিয়ে বিচারপতি গগৈ বলেন, ‘‘নিরপেক্ষ বিচারপতি এবং সরব সাংবাদিক হলেন গণতন্ত্রের প্রথম সুরক্ষাকবচ। কিন্তু আমার মত হল শুধু নিরপেক্ষ ও সরব সাংবাদিক নয়, কখনও কখনও সরব বিচারপতিও প্রয়োজন।’ বিচার বিভাগের স্বাধীনতা যে বিপদের মুখে, তা মনে করিয়ে বিচারপতি গগৈ বলেন, ‘‘বিচার বিভাগের হাতে যেটুকু ক্ষমতা রয়েছে, তা নিয়েই তারা সংবিধানের রক্ষাকর্তা। সমাজ এর উপর আস্থা রাখে। তা থেকেই এর বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি হয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক ও নৈতিক ক্ষমতা বজায় রাখতে বিচার বিভাগকে স্বাধীন ও নির্ভীক থাকতে হবে।’’
বিচারপতি গগৈয়ের রসিকতা, ‘‘শেষ কবে বিচার বিভাগ নিয়ে এত খবর হয়েছে, মনে করতে পারছি না। মার্কিন রাষ্ট্রনেতা আলেকজান্ডার হ্যামিলটন লিখেছিলেন, রাষ্ট্রের তিনটি স্তম্ভের মধ্যে সবচেয়ে কম বিপজ্জনক হল বিচার বিভাগ। আজ উনি এখানে থাকলে, হয়তো তা ভাবতেন না।’’
প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের পরে বিচারপতি গগৈকে মোদী সরকার প্রধান বিচারপতি করবে কি না, তা নিয়ে অনেকেই সংশয়ে। আজ বিচারপতি গগৈ বুঝিয়ে দিয়েছেন, আদালতে শূন্যপদ ও বিচারপতি নিয়োগে টালবাহানা নিয়ে সরকারের সঙ্গে সংঘাতে তিনি নরম সুর নিতে রাজি নন। তিনি বলেন, ‘‘বিচার বিভাগ আজ সেই মিস্ত্রি নয় যে নিজের যন্ত্রপাতিকে দোষ দেয়। সে এমন এক মিস্ত্রি যার যন্ত্রই নেই। নতুন ভাবে শূন্যপদের পরিসংখ্যান দেওয়ার করে দরকার নেই। এক ফরাসি লেখক বলেছিলেন, সব বলা হয়ে গিয়েছে। কিন্তু কেউ শোনেনি। তাই আবার বলতে হবে। আমি শুধু শীর্ষস্তরে আসীন ব্যক্তিদের অনুরোধ করব, আপনারা শুনুন, যাতে আবার না বলা শুরু করতে হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy