প্রচারের ফাঁকে: বেঙ্গালুরুর সভায় মোদী। মঙ্গলবার। ছবি: এ পি
তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁর সাফল্য শোনাচ্ছেন। লাখো লোক জয়ধ্বনি দিচ্ছে। তিনি গাঁধী পরিবারকে নিশানা করে বলছেন, ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় জামিন পেয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ‘মা-বেটা’। আজও বলেছেন, ‘‘কংগ্রেস ‘ডিভাইড অ্যান্ড রুল’ নীতিতে বিশ্বাস করে। ভোটযন্ত্রে গন্ডগোলের মতো হারের অজুহাত খুঁজতে শুরু করেছে তারা।’’ বিজেপির নেতা-কর্মীরা আহ্লাদে আটখানা। তিনি জনসভায় সবাইকে মোবাইলে আলো জ্বালিয়ে বিজেপিকে সমর্থনের কথা জানাতে বলছেন। জ্বলে উঠছে হাজার আলো।
অতিশয়োক্তি হল। কর্নাটকে নরেন্দ্র মোদীর একের পর এক জনসভায় এর সবই হচ্ছে। কিন্তু তেমন জোরালো ভাবে হচ্ছে না।
কর্নাটকের ভোট প্রচারে কোনও দিন ৩টি, কোনও দিন ৪টি পর্যন্ত জনসভা করছেন মোদী। প্রথমে ঠিক ছিল, ৮ দিনে সব মিলিয়ে ১৫-১৬টি সভা হবে। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১টিতে। মোদীর ২১টি সভা কি বিজেপিকে বাড়তি ২০ থেকে ৩০টি আসন এনে দিতে পারবে? কর্নাটক ভোট-নাটকের এটাই সব থেকে বড় প্রশ্ন। জনমত সমীক্ষা বলছে, বিজেপি ৭৯ থেকে ৮৯টি আসন পেতে পারে। রাজ্য বিজেপি নেতাদেরও সাবধানী হিসেব তেমনই। কিন্তু ২২৪ আসনের কর্নাটককে ‘কংগ্রেস-মুক্ত’ করতে দরকার ১১৩টি আসন। আর তার জন্য নরেন্দ্র মোদী নামক ব্রহ্মাস্ত্রই ভরসা তাঁদের। মোদী নিজে অবশ্য জনমত সমীক্ষাকে ‘ঠান্ডা ঘরে বসে বানানো’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।
কর্নাটকে এ বার কোনও দলের পক্ষেই ঝড় ওঠেনি। অন্তত প্রকাশ্যে। আবার, ১৯৮৫-র পরে কর্নাটকে কখনও একই দল পরপর দু’বার ক্ষমতায় আসেনি। সেই হিসেবে এ বার সিদ্দারামাইয়ার কংগ্রেস সরকারের বিদায় নেওয়ার কথা। কিন্তু উল্টো দিকে বিজেপি-ঝড়ও টের পাওয়া যাচ্ছে না। ঝড় তোলার চেষ্টা করছেন মোদী। পারবেন?
আরও পড়ুন: ইতালীয় খোঁচা উড়িয়ে দুর্নীতি তোপ সনিয়ার
সিদ্দারামাইয়ার কটাক্ষ, “আমি তো মোদী-ঝড় টের পাচ্ছি না। মোদীর ক্যারিশ্মাও দেখতে পাচ্ছি না।”
বেঙ্গালুরু-মাইসুরু হাইওয়ের রেস্তরাঁ-মালিক রবি কুমার আশাবাদী। বললেন “মোদী দিল্লিতে রয়েছেন। কেন্দ্রে-রাজ্যে একই সরকার থাকলে রাজ্যে অনেক কাজ হবে।”
তা হলে ব্রহ্মাস্ত্রে সেই তেজ নেই কেন? দিল্লির এক বিজেপি নেতার যুক্তি, “ওটা আসলে ‘লস্ট ইন ট্রান্সস্লেশন’-এর সমস্যা। সিংহভাগ মানুষই হিন্দি বোঝেন না। হিন্দি বক্তৃতা কন্নড়ে অনুবাদ হচ্ছে। ঝাঁঝটা কমে যাচ্ছে।”
শুধুই কি তাই? কর্নাটকের বাতাসে টের পাওয়া যায়, বিজেপির প্রার্থী বাছাই নিয়ে সঙ্ঘ-পরিবারের বড় অংশ খুশি নয়। অভিযোগ, বিজেপির সংগঠন মজবুত করার কাজে অনেক আরএসএস কর্মকর্তা গত পাঁচ বছর ধরে কাজ করলেও টিকিট পাননি। অথচ বল্লারীর খনি-মাফিয়া রেড্ডি ভাইদের বা কোলারের সোনার খনি এলাকার সম্পাঙ্গি-পরিবারের লোকেদের প্রার্থী করা হয়েছে দুর্নীতির অভিযোগ সত্ত্বেও।
মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী বি এস ইয়েদুরাপ্পার পুত্র রাঘবেন্দ্রকে প্রার্থী না করা নিয়েও ক্ষুব্ধ বিজেপি নেতাদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, মোদী রাহুল গাঁধীকে পরিবারতন্ত্র নিয়ে আক্রমণ করবেন বলেই ইয়েদুরাপ্পার ছেলে বাদ পড়ে গেলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy