গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
ক্রমশই জটিল হচ্ছে মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক পরিস্থিতি। শুধু শিবসেনার ১১ জন বিধায়ক নন, একনাথ শিন্ডের সঙ্গেই গুজরাতের সুরতের রিসর্টে মহারাষ্ট্রের পাঁচ জন কংগ্রেস বিধায়ক গিয়েছেন বলেও সূত্রের খবর। এই পরিস্থিতিতে বিদ্রোহী নেতা শিন্ডেকে ‘বোঝানোর জন্য’ দলের দুই নেতাকে সুরত পাঠিয়েছেন শিবসেনা প্রধান তথা মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। তাঁরা সন্ধ্যায় সুরাতে গিয়ে শিন্ডের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন।
সোমবার বিধানপরিষদ নির্বাচনে শাসক জোট ‘মহা বিকাশ অঘাড়ি’ (শিবসেনার পাশাপাশি এনসিপি এবং কংগ্রেস যে জোটের শরিক)-র অপ্রত্যাশিত ধাক্কার পরে শিবসেনার জনা দশেক বিধায়ক-সহ শিন্ডে বেপাত্তা হয়ে যান। মঙ্গলবার নরেন্দ্র মোদীর রাজ্যে বসে সাংবাদিক বৈঠক করে তিনি বলেন, ‘‘ক্ষমতা দখলের জন্য অতীতে অনৈতিক কোনও কাজ করিনি। ভবিষ্যতেও করব না। প্রয়াত বালাসাহেব ঠাকরের কাছে আমি হিন্দুত্ববাদের শিক্ষা পেয়েছি।’’ যদিও বিজেপি সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই শিন্ডে শিবিরে যোগ দিয়েছেন শাসক জোটের ২২ জন বিধায়ক। ভবিষ্যতে সংখ্যাটা আরও বাড়তে চলেছে।
২৮৮ সদস্যের মহারাষ্ট্র বিধানসভায় গরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ১৪৫ জন বিধায়কের সমর্থন। বর্তমানে একটি পদ খালি থাকায় জাদু-সংখ্যা ১৪৪-এ নেমে এসেছে। পরিষদীয় পাটিগণিতের হিসেব বলছে, শিন্ডে-সহ ২২ বিধায়ক শিবির বদলালে উদ্ধবের পক্ষে গদিরক্ষা কঠিন হবে। অঙ্কের হিসেবে শিবসেনার ৫৬, এনসিপির ৫৩ এবং কংগ্রেসের ৪৪ বিধায়কের পাশাপাশি বহুজন বিকাশ অঘাড়ির ৪, সমাজবাদী পার্টি এবং প্রহার জনশক্তি পক্ষের দু’জন বিধায়কের সমর্থন রয়েছে উদ্ধব শিবিরে। এ ছাড়া কৃষক সংগঠন পিডব্লিউপিআই-এর ১ এবং ৮ নির্দল রয়েছেন ট্রেজারি বেঞ্চে।
বিজেপির ১০৬ জনের পাশাপাশি মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা, রাষ্ট্রীয় সমাজ পক্ষ এবং জনসুরাজ সাক্ষী পক্ষের ১ জন করে এবং ৫ নির্দল বিধায়ক রয়েছেন দেবেন্দ্র ফড়ণবীসের নেতৃত্বাধীন বিরোধী শিবিরে। আসাদউদ্দিন ওয়েইসির ‘অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন’ (মিম)-এর ২ এবং সিপিএম ও স্বাভিমানী পক্ষের ১ জন করে বিধায়ক ‘নিরপেক্ষ’ অবস্থান পালন করেন বিধানসভায়।
কিন্তু সোমবারের বিধান পরিষদ ভোটে এই হিসাব অনেকটাই গুলিয়ে গিয়েছে। শিবসেনা ও কংগ্রেস বিধায়কদের একাংশের পাশাপাশি বহুজন বিকাশ অঘাড়ি-সহ শাসক শিবিরের কয়েক জন নির্দলও ভোট দেন বিজেপি প্রার্থীকে। ফলে ১০টি আসনের মধ্যে দু’পক্ষই পাঁচটিতে জেতে। পরাজিত হন কংগ্রেসের এক প্রার্থী। উদ্ধব সরকারের পতন ঠেকাতে ইতিমধ্যেই সক্রিয় হয়েছে এনসিপি ও কংগ্রেস। এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ার দিল্লি থেকে দফায় দফায় কথা বলেছেন দলের বিধায়কদের সঙ্গে। অন্য দিকে, বিধায়কদলের ভাঙন আটকাতে মহারাষ্ট্র রওনা হয়েছেন কংগ্রেস নেতা কমলনাথ।
যদিও পরিস্থিতি দেখে উদ্ধবের গদিরক্ষা ‘কঠিন’ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ। শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউথ মঙ্গলবার অভিযোগ করেছেন, বিধায়কদের অপহরণ করে গুজরাতে নিয়ে গিয়ে আটকে রেখেছে বিজেপি।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy