ছবি: পিটিআই।
‘দিদি, আপকা স্বাগত।’
চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়িয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অভ্যর্থনা জানালেন অমিত শাহ। আজ নর্থ ব্লকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক শুরু হওয়ার কথা ছিল বেলা দেড়টায়। কিন্তু শুরু হয়ে যায় ১২ মিনিট আগেই!
আজ সওয়া ১টায় নর্থ ব্লকে পৌঁছে গিয়েছিলেন মমতা। লিফ্টে উপরে উঠতে মিনিট তিনেক। ‘গেস্ট রুমে’ ঢোকার আগেই ডাক আসে শাহের ঘর থেকে। অপেক্ষা নয়। মমতার সঙ্গে বৈঠক শুরু করে দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তখন ঘড়িতে ১টা বেজে ১৮ মিনিট। বৈঠক চলে আধ ঘণ্টা। মমতা বেরিয়ে আসেন ১টা বেজে ৪৮ মিনিটে। এবার আর লিফ্ট নয়, নামেন হেঁটে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকেও এ দিন মমতার জন্য কিছু প্রস্তুতি ছিল। এক জন বাঙালি প্রোটোকল অফিসারকে রাখা হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে গেট থেকে নিয়ে যাওয়ার জন্য। সেই অফিসার আবার ঘটনাচক্রে হাওড়ার লোক, বাড়ি আন্দুলে। বলতে গেলে নবান্নের দোরগোড়ায়। যে নিরাপত্তা অফিসারেরা মুখ্যমন্ত্রীর জন্য সেখানে ছিলেন, তাঁদেরও কয়েক জন পশ্চিমবঙ্গে কাজ করেছেন আগে। ফলে বেশ ‘বাংলা-বাংলা’ পরিবেশে মমতা নর্থ ব্লকে ঢোকেন।
কেমন হল বৈঠক? খুব ভাল কথা হয়েছে,মমতার প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া।
মমতার সঙ্গে অমিতের এটিই ছিল প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক। এর আগে কখনও দু’জনের মুখোমুখি আলোচনা হয়নি। দেখা হয়েছে একবারই, গাঁধী সার্ধশতবর্ষ কমিটির বৈঠকে। আর ফোনে কথা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের নতুন রাজ্যপাল নিয়োগের পর।
মমতা নর্থ ব্লক থেকে বেরোতেই তাঁকে ছেঁকে ধরে অপেক্ষমাণ সংবাদমাধ্যম। শুরু হয় প্রশ্নোত্তর। এই আবহে ছন্দপতনের পরিস্থিতি তৈরি হয় মমতার একটি মন্তব্যকে ঘিরে। কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার সংক্রান্ত একটি প্রশ্নের উত্তরে মমতার মুখ থেকে কেবল শোনা যায় ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’ (পলিটিকাল ভেনডেটা)শব্দবন্ধটি। বাকি অংশ চাপা পড়ে যায় আশপাশের আওয়াজে। প্রচারমাধ্যমে একাংশের মাধ্যমে তা ছড়িয়ে পড়তেই শুরু হয়ে যায় প্রবল বিতর্ক। শাহের সঙ্গে বৈঠকের পরই ওই কথা তিনি কার উদ্দেশে বলেছেন, তা নিয়ে শুরু হয়ে যায় জল্পনা।
জবাব দিতে দ্রুত সক্রিয় হন তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের তরফে জল্পনায় জল ঢেলে টুইটে বলা হয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোনও ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ওই মন্তব্য করেননি। তিনি ওই বলে বোঝাতে চেয়েছেন, এমন ধাঁচের প্রশ্ন করে আসলে ওই বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যম রাজনৈতিক প্রতিহিংসা নিতে চাইছে। সেই কারণে ওই শব্দবন্ধটি মমতা ব্যবহার করেছিলেন। তৃণমূল শিবিরের ব্যাখ্যা, মমতা কোনও ভাবেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বা তদন্তকারী সংস্থা সম্পর্কে কোনও কিছুই বলেননি, বলবেন না বা বলতে চানও না। পর্যবেক্ষকদের মতে, আজকের বৈঠককে কেন্দ্র করে যে সৌহার্দ্যের বাতাবরণ সৃষ্টি হয়েছে, তাতে কোনও কারণে দাগ পড়ুক, তা সচেতন ভাবেই চান না মমতা। বর্তমান সময়ে রাজীব কুমার কেন্দ্রিক যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, সে সম্পর্কে মন্তব্য করা থেকে সচেতন ভাবেই এড়িয়ে গিয়েছেন মমতা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy