Meet Jameel Shah Mumbai Dharavi's celebrity shoe maker dgtl
shoes
তারকাদর্শনে বিহার থেকে খালি পায়ে মুম্বই, সেই জামিলের তৈরি জুতোর ভক্ত এখন গোটা বলিউড
খালি পায়ের সেই জামিলেরই জুতোর ভক্ত হয়ে গেলেন বলি নায়ক-নায়িকারা!
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৯:২৬
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৭
তারকাদের কাছ থেকে দেখার জন্য খালি পায়ে বিহার থেকে মুম্বই রওনা দিয়েছিলেন তিনি। পকেটে ছিল মাত্র ১০০ টাকা। খালি পায়ের সেই জামিলেরই জুতোর ভক্ত হয়ে গেলেন বলি নায়ক-নায়িকারা!
০২১৭
জামিল শাহের জন্ম বিহারের দ্বারভাঙাতে। বাবা ছিলেন খেত মজুর। ৭ ভাইবোনের পরিবারে একা বাবার পক্ষে দু’বেলা খাবার জোগার করা ছিল কষ্টসাধ্যে। তাই পড়াশোনা নিয়ে বেশি ভাবতে পারেননি জামিল।
০৩১৭
পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত কোনওক্রমে পড়েছেন তিনি। তার পর থেকে আর স্কুলের মুখ দেখেননি। ১২ বছর বয়স থেকে উপার্জনের রাস্তায় চলতে শুরু করেন।
০৪১৭
১২ বছর বয়সে পরিযায়ী শ্রমিকদের সঙ্গে দিল্লি চলে আসেন জামিল। সেখানে চামড়ার কারখানায় কাজ শুরু করেন। ১ বছর পর সেখান থেকে মুম্বই চলে যান।
০৫১৭
মু্ম্বইয়ে কখনও কোনও কারখানায়, কখনও দোকানের কর্মচারী হয়ে, কখনও আবার নিরাপত্তারক্ষীর কাজও করেছেন। তার পর ধারাভির চামড়া কারখানায় কাজে যোগ দেন।
০৬১৭
তিল তিল করে ২৫ হাজার টাকা জমিয়েছিলেন জামিল। ইচ্ছে ছিল কোনও তারকার সঙ্গে দেখা করবেন। কিন্তু এক বন্ধু তাঁকে তারকার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে জমানো পুঁজি নিয়ে চম্পট দেন।
০৭১৭
অনেক খুঁজেও সেই প্রতারক বন্ধুর আর খোঁজ পাননি জামিল। তাঁকে খুঁজতে বেঙ্গালুরু পর্যন্ত ছুটে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে কয়েক মাস কাটানোর পর ফের শুরু হয় তাঁর তারকা দেখার স্বপ্নের দৌড়। ফের মুম্বই ফিরে কাজ করে টাকা জমাতে শুরু করেন জামিল। যাঁর অধীনে কাজ করতেন তাঁর পরামর্শেই নাচের ক্লাসে ভর্তি হন।
০৮১৭
জামিল মনস্থির করেছিলেন ছবিতে নেপথ্য নৃত্যশিল্পী হবেন এবং কাজ থেকে সমস্ত তারকাদের দেখবেন। ২০০০ সালে বলিউড কোরিওগ্রাফার সন্দীপ সোপারকারের নাচের ক্লাসে ভর্তি হন। জামিলের স্বপ্নের কথা জেনে তাঁকে বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করেন সন্দীপ।
০৯১৭
কিন্তু সারা দিন নাচের জন্য বিশেষ জুতোর প্রয়োজন ছিল। যে জুতো ওজনে হালকা হবে এবং পায়ে ঘাম জমবে না। তা না হলে নাচতে সমস্যায় পড়তে হয়। ক্লাসের সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীই বিদেশ থেকে বিশেষ জুতো আনিয়ে পরতেন। কিন্তু জামিলের কাছে এত টাকা ছিল না।
১০১৭
চামড়ার কারখানায় কাজ করা জামিল তাই নিজেই তৈরি করে ফেললেন জুতো। তাঁর জুতোর গুণগত মান বিদেশ থেকে আমদানি করা জুতোর মতো ছিল না ঠিকই, তবে তাতে কাজ চলে যেত এবং যথেষ্ট আরামদায়কও ছিল।
১১১৭
পরে আরও ভাল জুতো তৈরি করেন তিনি। দাম কম হওয়ায় ক্লাসের অনেকেই তাঁর তৈরি জুতো কিনতে শুরু করেন।
১২১৭
পরের ৫ বছর তাঁর তৈরি জুতোর গুণগত মান বিদেশ থেকে আমদানি করা জুতোর সমান করতে পরিশ্রম করেন তিনি। নৃত্যশিল্পী, জুতো প্রস্তুতকারক, জুতোর কাঁচামালের সরবরাহকারী— সকলের সঙ্গেই দেখা করে ভাল জুতোর বিশেষ বৈশিষ্ট্য বুঝে নেন।
১৩১৭
২০০৫ সাল থেকে তাঁর তৈরি জুতো বিক্রি হতে শুরু করে। প্রথমে ক্লাসের ছাত্র-ছাত্রীরাই কিনতে শুরু করেন। পরে তাঁর জুতো ছবি প্রস্তুতকারকও কিনতে শুরু করলেন।
১৪১৭
ধারাভি বস্তিতেই তিনি ‘শাহ শু’ নামে কারখানা বানিয়ে ফেলেন। ২০০৬ সালে প্রথম অর্ডার পান ‘হলিডে’ ছবির জন্য। প্রথম দিকে মাসে ১০টির মতো জুতোর অর্ডার পেতেন।
১৫১৭
দিন যত এগিয়েছে অর্ডারও বেশি পেতে শুরু করেছেন জামিল। এখন মাসে অন্তত ২০০টি জুতো বানান তিনি। বেলি ডান্স, সালসা, ফ্লেমিঙ্গো— সমস্ত ধরনের নাচের জন্য উপযুক্ত জুতো তৈরি করেন জামিল।
১৬১৭
‘ধুম ৩’-তে ক্যাটরিনা কইফ, ২০০৯ সালের ‘ব্লু’ ছবিতে কাইলি মিনোগ তাঁর তৈরি জুতো পরেই অভিনয় করেছেন।
১৭১৭
জামিলের স্বপ্ন ছিল বাবাকে চাষের জমি কিনে দেওয়া। সেই স্বপ্নও পূর্ণ করেছেন তিনি। ধারাভিতে নিজের বাড়িও কিনেছেন। আর জুতোর সূত্র ধরে তারকাদের সঙ্গে ওঠাবসা তো লেগেই রয়েছে।