সাংবাদিক বৈঠকে মীরা কুমার। মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।
দলিত বনাম দলিত— রাষ্ট্রপতির মতো সর্বোচ্চ পদে জাতির নিরিখে লড়াই তাঁর না-পসন্দ। তাঁকে নিয়ে বিজেপির যাবতীয় কুৎসার জবাবও দিলেন। একই সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী জমানায় দেশে অসহিষ্ণুতা, দলিত-সংখ্যালঘু নিগ্রহ নিয়ে পাল্টা তোপও দাগলেন বিরোধীদের রাষ্ট্রপতি প্রার্থী মীরা কুমার।
আজই সামাজিক কর্মী শবনম হাসমি ২০০৮ সালে পাওয়া জাতীয় সংখ্যালঘু অধিকার পুরস্কার ফেরত দিয়েছেন। সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে হিংসায় মোদী সরকারের প্রশ্রয় দেওয়ার বিরোধিতায়। রাষ্ট্রপতি পদে নাম ঘোষণার পর আজ প্রথম সাংবাদিক বৈঠকে মীরার আক্রমণের জায়গা ছিল সেটিই। তিনি বলেন, যে ১৭ টি দল তাঁকে সমর্থন করেছে, তাঁদের বিচারধারা একই রকম। তাঁর লড়াই গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, সামাজিক ন্যায়, সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা, সবাইকে সঙ্গে নিয়ে চলা, দারিদ্র্য ও জাতিবাদের বিনাশের লক্ষ্যে। মীরার মতে, ‘‘দলিত নিগ্রহের একটি ঘটনাতেও সবার মাথা হেঁট হওয়া উচিত। সেটাই আমার লড়াই। জাতিব্যবস্থা মাটির গভীরে পুঁতে দেওয়া উচিত।’’
আগামিকালই বিরোধী দলের নেতাদের নিয়ে সনিয়া গাঁধী মীরা কুমারের মনোনয়ন পেশ করবেন। বিরোধী শিবির থেকে ছিটকে গিয়েছেন নীতীশ কুমার। তাঁর প্রতিও কড়া বার্তা দিয়েছেন মীরা। বলেন, ‘‘আমি সমর্থনের জন্য সবার কাছে আবেদন করেছি। বল এখন তাঁর কোর্টে।’’ অঙ্ক যদিও এখনও শাসক গোষ্ঠীর প্রার্থী রামনাথ কোবিন্দের পক্ষে। কিন্তু মীরা মানতে চান না, তিনি হারার জন্য লড়ছেন। তিনি মনে করেন, বিচারধারার লড়াইয়ে সকলেরই বিবেকের ভোট দেওয়া উচিত। সে কারণেই বিরোধী দলের নেতাদেরও তিনি সমর্থনের ডাক দিয়েছেন। ৩০ জুন মোদীর রাজ্য গুজরাতে মহাত্মা গাঁধীর স্মৃতি বিজড়িত সবরমতী আশ্রম থেকেই প্রচার শুরু করবেন তিনি।
আরও পড়ুন:
শরিকি চাপানউতোর, তপ্ত বিহার রাজনীতি
মীরার নাম ঘোষণার পরেই বিজেপি তাঁর সম্পত্তি, দুর্নীতি, দুটি বাংলো দখল নিয়ে প্রচার শুরু করেছে। সুষমা স্বরাজ টুইটে পুরনো ভিডিও পোস্ট করে বলেছেন, স্পিকার হিসেবে মীরা কুমার বিরোধী দলনেত্রীর সঙ্গে নিরপেক্ষ ব্যবহার করেননি। তার জবাব দিয়ে মীরা বলেন, তিনি স্পিকার থাকার সময় অধিবেশনের শেষ দিনে সকলে তাঁর তারিফ করেছেন। লোকসভার রেকর্ডেই তা রয়েছে। আর বাংলো দখল নিয়ে মীরা বলেন, নিয়ম মেনে পাওনা মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মীরা যতই জাতিগত পরিচয় ঊর্ধ্বে রাখতে চান, প্রশ্ন তাঁর পিছু ছাড়ছে না। রাষ্ট্রপতি পদে বিরোধীদের প্রার্থী ঠিক করার প্রসঙ্গে বিএসপি নেত্রী মায়াবতী রামনাথ কোবিন্দের থেকেও ‘আরও বড়’ দলিত নেতার জন্য সওয়াল করেছিলেন। সেই সূত্র ধরেই পাল্টা এক দলিত মুখকে বেছে নিয়েছেন সনিয়া গাঁধীরা। এ নিয়ে মীরার মন্তব্য, ‘‘রাষ্ট্রপতির পদ অরাজনৈতিক হলেও ভোটের প্রক্রিয়াটি রাজনৈতিক। তবে আমার মনে হয় না, কারও জাতিগত পরিচয় এখানে ভূমিকা পালন করে। এর আগে উচ্চবর্ণ প্রার্থীর বেলায় কিন্তু যোগ্যতাই বিচার করা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy