Advertisement
১৭ মে ২০২৪

টাকা পেলে নিতে কোনও আপত্তিই নেই হাগ্রামার

কেউ ‘মাল’ দিলে নেওয়া উচিত। তবে নিজে থেকে কারও কাছে ‘মাল’ চাওয়া ঠিক নয় বলে মনে করেন হাগ্রামা মহিলারি। বরাবরই স্পষ্টবক্তা বিপিএফ সভাপতি তথা বড়ো স্বশাসিত পরিষদের প্রধান হাগ্রামা তাঁর চাঁচাছোলা কথাতেই জনসভাগুলিতে লোক টানেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০১৬ ০২:১৯
Share: Save:

কেউ ‘মাল’ দিলে নেওয়া উচিত। তবে নিজে থেকে কারও কাছে ‘মাল’ চাওয়া ঠিক নয় বলে মনে করেন হাগ্রামা মহিলারি। বরাবরই স্পষ্টবক্তা বিপিএফ সভাপতি তথা বড়ো স্বশাসিত পরিষদের প্রধান হাগ্রামা তাঁর চাঁচাছোলা কথাতেই জনসভাগুলিতে লোক টানেন।

কিন্তু এবার হাগ্রামার ‘স্পষ্ট’ কথায় বিপাকে পড়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। বিপিএফ ও অসম গণ পরিষদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে জোট সরকার গড়েছেন সর্বানন্দ সোনোয়াল। প্রথম থেকেই তিনি দুর্নীতিমুক্ত রাজ্য গড়ায় জোর দিচ্ছেন। সব মন্ত্রী-আমলা-বিধায়কদের সম্পত্তির হিসেব জমা দিতে বলেছেন তিনি। প্রশাসনে স্বচ্ছতা আনতে অধিকাংশ সরকারি কাজ অনলাইনে করার চেষ্টা করছেন। সব জমে থাকা ফাইলে ‘বার কোড’ ব্যবস্থায় অনলাইন ট্র্যাকিং চালু হয়েছে। আয় ও সম্পত্তির হিসেব না মিললে বর্তমান ও প্রাক্তন মন্ত্রী-বিধায়ক-আমলাদের বিরুদ্ধেও তদন্ত হবে বলে সোনোয়াল ঘোষণা করেছেন। জানিয়েছেন, ঘুষ সংস্কৃতি নৈব-নৈব চ।

কিন্তু তাঁদেরই জোট শরিক বিপিএফ যে এ নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন না তা হাগ্রামার কথাই পরিষ্কার। বিশাল সম্পত্তির মালিক, প্রাক্তন জঙ্গি নেতা হাগ্রামা কোনওদিনই দুর্নীতির অভিযোগকে পাত্তা দেননি। এ বার তিনি সাফ বললেন, “টাকা দিলে কে না নেবে! আমি তো বলছি, সরকারে আমাদের যে দু’জন মন্ত্রী আছেন, কেউ মাল দিলে তাঁরা নেবেনই। তবে নিজে থেকে মাল চেয়ে নেওয়া ঠিক নয়।” বরমার উদাংশ্রী স্পোর্টস ক্লাবে করা হাগ্রামার এমন নিঃসংকোচ মন্তব্যে সকলেই অবাক। অবশ্য এ নিয়ে বিপিএফের দুই মন্ত্রী রিহন দৈমারি ও প্রমীলারানি ব্রহ্ম কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। মুখ্যমন্ত্রী আপাতত তিন দিনের সফরে দিল্লিতে। তিনিও শরিক দলের প্রধানের এমন মন্তব্য নিয়ে মুখ খোলেননি।

অবশ্য সর্বানন্দকে ব্যঙ্গ করে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ বলেন, “দুর্নীতিগ্রস্তদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গড়ার পরে দুর্নীতিমুক্ত রাজ্য গড়ার অলীক স্বপ্ন দেখছেন সোনোয়াল।”

হিন্দু শরণার্থীদের বড়োভূমিতে জমি দেওয়া প্রসঙ্গে হাগ্রামা বলেন, কেন্দ্র পরামর্শ দিলে আমাদের জমি দিতে আপত্তি নেই। জোট শরিকদের মধ্যে বোঝাপড়ার অভাব রয়েছে বলে অসম গণ পরিষদের অভিযোগ সম্পর্কে হাগ্রামা বলেন, “আমাদের সঙ্গে বিজেপির সব ঠিকঠাক রয়েছে।” মূল্যবৃদ্ধি বা তৈলক্ষেত্র নিলাম নিয়ে তাদের সঙ্গে কোনও আলোচনাই হয়নি বলে তিনি জানান। পতঞ্জলির কারখানা ও যোগাশ্রম তৈরির জন্য চিরাং জেলায় তিন হাজার বিঘা জমি দিচ্ছে বড়ো স্বশাসিত পরিষদ। কৃষিজমি এ ভাবে রামদেবের হাতে তুলে দেওয়ায় অল বড়ো স্টুডেন্টস ইউনিয়ন (আবসু) আন্দোলন চালাচ্ছে। হাগ্রামা বলেন, “ওই জমি আবসুর নয়, বিটিসি কর্তৃপক্ষের। যাদের ভাল বুঝব, জমি দেব।”

হাগ্রামার মন্তব্য নিয়ে আবসু সভাপতি প্রমোদ বড়ো বলেন, ‘‘জনপ্রতিনিধির মুখে এমন কথা দুর্ভাগ্যজনক। তাঁরা রাজ্য সরকারেরও শরিক। তাহলে সহজেই অনুমেয় বড়োভূমিতে কেমন দুর্নীতি চলছে। এই পরিস্থিতিতে দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন বা রাজ্য গড়া মুখ্যমন্ত্রীর পক্ষে বড় চ্যালেঞ্জ।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Hagrama Mohilary
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE