Advertisement
১৮ মে ২০২৪
National News

মোদীর উপস্থিতিতেই তুমুল হট্টগোল বিরোধীদের, দফায় দফায় মুলতুবি সংসদ

প্রধানমন্ত্রী নিজে হাজির হয়েও থামাতে পারলেন না সংসদের হট্টগোল। বুধবার ফের মুলতুবি হয়ে গেল সংসদের দুই কক্ষই। নোট বাতিল নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকেই বিবৃতি দিতে হবে সংসদে, দাবিতে অনড় ছিল বিরোধী দলগুলি।

বুধবার লোকসভায় প্রধানমন্ত্রী। বিরোধীরা তখন প্রবল বিক্ষোভ করছেন। ছবি: পিটিআই।

বুধবার লোকসভায় প্রধানমন্ত্রী। বিরোধীরা তখন প্রবল বিক্ষোভ করছেন। ছবি: পিটিআই।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৬ ১৪:৪৪
Share: Save:

প্রধানমন্ত্রী নিজে হাজির হয়েও থামাতে পারলেন না সংসদের হট্টগোল। বুধবার ফের মুলতুবি হয়ে গেল সংসদের দুই কক্ষই। নোট বাতিল নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকেই বিবৃতি দিতে হবে সংসদে, দাবিতে অনড় ছিল বিরোধী দলগুলি। জম্মু-কাশ্মীরের নাগরোটায় জঙ্গি হামলায় সাত সৈনিকের মৃত্যু নিয়েও আলোচনার দাবি জানায় বিরোধীরা। সরকার দু’টি বিষয় নিয়েই আলোচনায় প্রস্তুত ছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতির আশ্বাস মেলেনি। ফলে বিরোধীদের বিক্ষোভ থামেনি। দফায় দফায় মুলতুবি করতে হয়েছে লোকসভা এবং রাজ্যসভা।

শীতকালীন অধিবেশনের শুরু থেকেই বিরোধীদের তুমুল বিক্ষোভে রোজ মুলতুবি হয়ে যাচ্ছে লোকসভা এবং রাজ্যসভা। নোট বাতিল নিয়ে সংসদে, বিশেষত রাজ্যসভায়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিবৃতি দাবি করছেন বিরোধীরা। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী এখনও কোনও বিবৃতি দেননি। বুধবার সকালে তিনি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীদের নিয়ে বৈঠকে বসেন। বিরোধীদের বিক্ষোভের মুখে সংসদ সচল রাখতে লোকসভা ও রাজ্যসভায় বিজেপির ‘ফ্লোর স্ট্র্যাটেজি’ বা রণকৌশল কী হবে, তা স্থির করতেই মূলত মোদী এই বৈঠক ডাকেন। কিন্তু কোনও রণকৌশলই কাজে আসেনি। সংসদে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতেই হট্টগোল চলতে থাকে।

নোট বাতিল কাণ্ডে প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতির দাবি তো বিরোধীদের তরফে এ দিন ছিলই। তার সঙ্গে নাগরোটা জঙ্গি হামলায় মঙ্গলবার ৭ সৈনিকের মৃত্যুর বিষয় নিয়েও সংসদে আলোচনার দাবি তোলে বিরোধীরা। সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অনন্ত কুমার বলেন, ‘‘শীতকালীন অধিবেশনের ১০-১১ দিন ইতিমধ্যেই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। সরকার একটা ঐতিহাসিক সংস্কারের রূপায়ণ ঘটিয়েছে। আমি বিরোধী দলগুলির নেতাদের অনুরোধ করছি, দুই কক্ষেই বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক হতে দিন। আমরা বিরোধীদের মতামত জানতে চাই। যে কোনও রকম গঠনমূলক পরামর্শ গ্রহণ করতে আমরা প্রস্তুত।’’ কিন্তু অনন্ত কুমারের এই আবেদনে কোনও কাজ হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতির দাবিতে বিরোধীদের হইচই চলতেই থাকে। বিরোধী সাংসদরা এক সময় লোকসভা থেকে ওয়াকআউটও করেন।

রাজ্যসভায় এ দিন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি জেডিইউ সাংসদ শরদ যাদবের মধ্যে তীব্র বাদানুবাদ হয়। জেটলি শরদকে বলেন, ‘‘আপনি নোট বাতিল ইস্যু নিয়ে প্রথমে নিজের দলের মধ্যে আলোচনা করুন। আপনার নিজের দলেই বিষয়টি নিয়ে বিভাজন রয়েছে।’’ জেডিইউ সভাপতি তথা বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার নোট বাতিলকে সমর্থন করেছেন। সে কথা সরাসরি না বললেও, সেই প্রসঙ্গেই যে শরদ যাদবকে খোঁচা দিচ্ছেন অরুণ জেটলি, তা স্পষ্ট হয়ে যায়। ফলে দু’জনের মধ্যে তীব্র বচসা শুরু হয়।

আরও পড়ুন: সিনেমার আগে হলে জাতীয় সঙ্গীত বাধ্যতামূলক, নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

বিরোধীরা এ দিন নাগরোটা জঙ্গি হামলা নিয়েও সংসদে সরকারকে চেপে ধরে। নোট বাতিল ইস্যুর পাশাপাশি নাগরোটা হামলা নিয়েও বিরোধীদের তরফে আলোচনার দাবি জানানো হয়েছিল। কিন্তু কোনও আলোচনাই শেষ পর্যন্ত হয়নি। কংগ্রেস সহ সভাপতি তথা অমেঠির সাংসদ রাহুল গাঁধী সে প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘এই প্রথম বার শহিদ সৈনিকদের প্রতি সংসদে কোনও শ্রদ্ধাজ্ঞাপন হল না।’’ একই বিষয় নিয়ে রাজ্যসভায় সরকারের নিন্দায় মুখর হন বসপা সুপ্রিমো মায়াবতী। সীমান্তে যে প্রাণহানি হচ্ছে, তার প্রতি সরকার যথেষ্ট সংবেদনশীল নয়, মন্তব্য মায়াবতীর। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে বলে অবশ্য লোকসভার স্পিকার সুমিত্রা মহাজন আশ্বাস দিয়েছেন। বিরোধীদের তরফ থেকে এ দিন মৃত সৈনিকদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের দাবি তোলা হয়। স্পিকার সে প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘এখনও চিরুনি তল্লাশি চলছে। সম্পূর্ণ রিপোর্ট আসতে দিন। এটা কোনও রাজনৈতিক বিষয় নয়। আমরা সব সময়ই শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE