Advertisement
০৭ মে ২০২৪

প্রিয়ঙ্কার সফর ধাক্কা খেল সেনা অভিযানে

ঠিক ছিল, রাহুল গাঁধীর এক মাসের ‘কৃষক যাত্রা’র পরপরই ঢাকঢোল পিটিয়ে উত্তরপ্রদেশে ভোট-প্রচারে নামবেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা। কিন্তু ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’-এর ধাক্কায় পিছিয়ে গেল প্রিয়ঙ্কার ভোট-প্রচারের নির্ঘণ্ট!

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:৫৯
Share: Save:

ঠিক ছিল, রাহুল গাঁধীর এক মাসের ‘কৃষক যাত্রা’র পরপরই ঢাকঢোল পিটিয়ে উত্তরপ্রদেশে ভোট-প্রচারে নামবেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা। কিন্তু ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’-এর ধাক্কায় পিছিয়ে গেল প্রিয়ঙ্কার ভোট-প্রচারের নির্ঘণ্ট!

কংগ্রেস ভেবেছিল, নেহরু-ইন্দিরার স্মৃতি বিজড়িত ইলাহাবাদ থেকে শুরু হবে প্রিয়ঙ্কার রাজ্য সফর।দশমীর পর থেকে ছোটবড় ১৫০টি সভার নকশাও তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু ২৯ সেপ্টেম্বর সেনার ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ সব ভণ্ডুল করে দিয়েছে। নরেন্দ্র মোদীর দল এ নিয়ে এমন জাতীয়তাবাদের হাওয়া তুলেছে যে কৃষকের দুর্দশা নিয়ে রাহুলের হাঁকডাক পিছনে চলে গিয়েছে। তার উপর প্রধানমন্ত্রী শহিদের ‘রক্তের দালালি’ করছেন বলে মন্তব্য করে মোদীর হাতেই সহজ ক্যাচ তুলে দিয়েছেন কংগ্রেস সহ-সভাপতি। তাই অনুকূলে পরিস্থিতি না ফেরা পর্যন্ত প্রিয়ঙ্কাকে আসরে নামানোর কথা আর ভাবতে পারছে না কংগ্রেস।

দলের এক নেতা বলেন, প্রিয়ঙ্কা আসরে নামলেই তাঁকে দলের সভাপতি করার দাবি উঠবে। ফলে সনিয়া গাঁধীকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, প্রিয়ঙ্কাকে প্রচারে নামানোর আগে রাহুলকে সভাপতি করার ঘোষণা করা হবে কি না। ভাবা হয়েছিল, এক মাসের ‘কৃষক যাত্রা’য় রাহুলের উচ্চতা এতটাই বাড়বে, যে প্রিয়ঙ্কা তাঁর ছায়াতেই থাকবেন। কিন্তু রাহুলের ‘দালালি’ মন্তব্যে এখন নয়া রণকৌশল ভাবতে হচ্ছে। দলের অবশ্য দাবি, ‘‘উপযুক্ত সময়ে প্রিয়ঙ্কার প্রকাশ হবে। আপাতত দু’টি তারিখ দলের নেতৃত্বের মাথায় আছে। এক, ১৯ নভেম্বর, ইন্দিরার জন্মদিন। কিংবা সনিয়ার জন্মদিন ৯ ডিসেম্বর।’’ দলের নির্বাচনী কৌশল রচনার ভার যাঁর হাতে সেই প্রশান্ত কিশোরও চাইছেন, রাহুলকে যে ভাবে একটা বড় মাপের যাত্রার মাধ্যমে মাঠে নামানো হয়েছে, তেমনই প্রিয়ঙ্কাকে নামানো হোক ‘রকস্টার’-এর মতো। রাহুলের প্রথম যাত্রার নেতিবাচক প্রভাব কাটাতে তাঁকে দিয়েই আরও কিছু সভা করানোর পরিকল্পনা করছেন প্রশান্ত। এ বারে মূলত সংরক্ষণের দাবিতে। সেটি সফল হলেই প্রিয়ঙ্কার নম্বর।

কিন্তু বিজেপি যে ভাবে জাতীয়তাবাদের হাওয়ায় ভর করে জাত-পাত গুলিয়ে দিয়ে হিন্দু ভোটকে একজোট করার চেষ্টায় নেমেছে, কংগ্রেসকে তা ভাবিয়ে তুলছে। এই আগ্রাসী বিজেপির মোকাবিলা করে কত দিনে নিজেদের অনুকূলে জমি তৈরি করা যাবে, কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বও তা বুঝে উঠতে পারছেন না। প্রিয়ঙ্কাই কংগ্রেসের শেষ তুরুপের তাস। ফলে তাঁকে কী ভাবে ব্যবহার করা হবে, তা নিয়েও চিন্তা কম নয়

অতীতে এ ভাবে ব্র্যান্ডিং করে রাজনীতির ময়দানে নামানোর নজির নেহাত কম নেই। ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদীর ক্ষেত্রেই এমনটা ঘটেছে। সেই সময় নেপথ্যে থাকা অ্যাড-গুরু, গীতিকার প্রসূন জোশীর কথায়, ‘‘কোনও সামগ্রীর স্বর নেই। তাকে বেচতে হয়। রাজনীতিকরা জলজ্যান্ত দৃষ্টান্ত। উপভোক্তারা সব সময় তাঁদের ভোগ করেন। ফলে তাঁদেরও ঠিক মতো বিজ্ঞাপন করেই ভোটারদের সামনে পেশ করতে হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

vote campaign priyanka gandhi modi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE