এক বছরে সম্পত্তি বেড়েছে প্রায় ৩২ লক্ষ টাকা। তবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আয়-ব্যয়ের হিসেব কষে দেখা যাচ্ছে, বেতন ও ভাতা বাবদ তিনি যত টাকা উপার্জন করেন, তার কিছুই তাঁকে খরচ করতে হয় না। কেননা, বছরে শুধু বইয়ের রয়্যালটি থেকেই তাঁর হাতে এসেছে ১২ লক্ষেরও বেশি টাকা। তবে মন্ত্রীদের ক্ষেত্রে নিজের পাশাপাশি স্ত্রীর আয়ের হিসেব দেওয়ার কথা থাকলেও মোদী জানিয়েছেন, যশোদাবেনের সম্পত্তির হিসেব তিনি জানেন না।
প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরেই নরেন্দ্র মোদী মন্ত্রীদের সকলের পারিবারিক সম্পত্তির হিসেব দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় থেকে সম্প্রতি মোদীর সম্পত্তির যে খতিয়ান দেওয়া হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, আগের মতো আজও তাঁর কোনও গাড়ি নেই। গত বেশ কয়েক বছর ধরে তিনি সোনাদানাও কেনেননি। গত বছরে তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ১ কোটি ৪১ লক্ষ টাকার মতো। এ বছর সেটি বেড়ে ১ কোটি ৭৩ লক্ষ টাকায় দাঁড়িয়েছে । এর মধ্যে ১ কোটি টাকা অবশ্য ২০০২ সালে গাঁধীনগরে তাঁর কেনা একটি বাড়ির বাজার দর। যেটি সেই সময়ে তিনি কিনেছিলেন ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকায়। আর বাড়ি বানাতে খরচ হয়েছিল আরও প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা। তবে গত বছরে প্রধানমন্ত্রীর হাতে যেখানে নগদ ছিল মাত্র ৪,৭০০ টাকা, সেটি এ বার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৯,৭০০ টাকা।
প্রতি মাসে মাইনে ও ভাতা বাবদ প্রধানমন্ত্রী প্রায় ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা পান। গোটা বিশ্বের প্রথম ১৫ জন ধনী রাষ্ট্রনেতার মধ্যে যেটি দ্বাদশ স্থানে। এক বছরে মোদীর যে ৩২ লক্ষ টাকা সম্পত্তি বেড়েছে, তার মধ্যে ১২ লক্ষ ৩৫ হাজার ৭৯০ টাকা প্রধানমন্ত্রী পেয়েছেন নিজের লেখা বইয়ের রয়্যালটির থেকে। এই অংশটি বাদ দিলে যা বেঁচে থাকছে, সেটি তাঁর পুরো বেতন। অর্থাৎ, প্রধানমন্ত্রীকে কার্যত নিজের উপার্জিত অর্থের কিছুই খরচ করতে হয় না। ২০১৪ সালে নিজের বেতন থেকে ৫০ হাজার টাকা এবং গত বছর ২৫ হাজার টাকা বিজেপির নির্বাচনী তহবিলে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এ বারের হিসেব বলছে, সেটিও দেননি তিনি।
মোদী মন্ত্রিসভার ৮৩ জনের মধ্যে এ বছর এখনও পর্যন্ত মাত্র ১২ জনই সম্পত্তির হিসেব দিয়েছেন। হিসেব দেওয়ার তালিকায় সব থেকে আগে রয়েছেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। জুলাই মাসে পেশ করা সেই হিসেবে দেখা যাচ্ছে, তাঁর সম্পত্তি গত বছরের তুলনায় প্রায় ৬ কোটি টাকা কমেছে। বিজেপি সূত্র বলছে, আইনি পেশায় থাকার সময় যে উপার্জন করতেন, সেটি এখন হয় না বলেই জেটলির সম্পত্তির পরিমাণ কমেছে। কিন্তু বাকি সব মন্ত্রীরই সম্পত্তি বেড়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর জীবন বিমা ও বন্ডে বিনিয়োগের অঙ্ক একই রয়েছে। বেশ কয়েক বছর আগে ৪৫ গ্রামের চারটি সোনার আংটি কিনে রেখেছিলেন, তার পর আর কোনও সোনাদানা কেনেননি মোদী। নিজের উপার্জনের অনেকটাই তিনি ব্যাঙ্কে ফিক্সড ডিপোজিট করে রেখেছেন। গত বার যার পরিমাণ ছিল ৩০ লক্ষ ৭২ হাজার টাকা। এ বার সেটি বেড়ে হয়েছে ৫১ লক্ষ ২৭ হাজার টাকা।
এই মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রীর ব্যাঙ্কে রয়েছে ২ লক্ষ ৯ হাজার টাকা। পোস্ট অফিসে এনএসসি করে রেখেছেন ৩ লক্ষ ২৮ হাজার টাকার। নির্বাচনের সময় নিজের স্ত্রী বা স্বামীর সম্পত্তির হিসেব দেওয়া বাধ্যতামূলক। তাই গত লোকসভা ভোটে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় স্ত্রী যশোদাবেনের কথা প্রথম উল্লেখ করেন মোদী। সরকারে আসার পরে তিন বছর ধরে সম্পত্তির খতিয়ান দেওয়ার সময়েও স্ত্রীর নাম উল্লেখ করছেন তিনি। তবে তাঁর সম্পত্তির বিষয়ে কোনও উল্লেখ থাকছে না। সেই জায়গায় মোদী লিখছেন, ‘‘জানা নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy