নরেন্দ্র মোদী মন্ত্রিসভার রদবদলের ভূমিকম্পের এক সপ্তাহের মাথায় এক ‘আফটারশক’!
মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিলেন নাজমা হেপতুল্লা, কর্নাটকের জি এম সিদ্ধেশ্বরা। মোখতার আব্বাস নকভিকে দেওয়া হল সংখ্যালঘু মন্ত্রকের স্বাধীন দায়িত্ব। আর নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে বাবুল সুপ্রিয়কে সরিয়ে তাঁকে ভারী শিল্পের দায়িত্ব সঁপলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
বিজেপির শীর্ষ সূত্রের মতে, গত সপ্তাহে মন্ত্রিসভা রদবদলের সময়েই নাজমা হেপতুল্লাকে সংখ্যালঘু মন্ত্রক থেকে সরে যেতে বলা হয়েছিল। একই ভাবে ভারী শিল্পের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা জি এম সিদ্ধেশ্বরাকেও ইস্তফা দিতে বলা হয়। সিদ্ধেশ্বরার পরিবর্তে নতুন মন্ত্রীও আনা হয় কর্নাটক থেকে। কিন্তু নাজমা সেই সময় বিদেশে ছিলেন। আর মন্ত্রিসভার রদবদলের দিনেই ছিল সিদ্ধেশ্বরার জন্মদিন। তাই তিনি অনুরোধ করেছিলেন, জন্মদিনে ইস্তফা না দিয়ে দু’-এক দিন পরে দেবেন। এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী বিদেশ চলে যান। আজ তিনি দেশে ফেরার পর দু’জনেই ইস্তফা দিয়ে দেন। তার ফলে অনেকটা প্রত্যাশিত ভাবেই মোখতার আব্বাস নকভি পদোন্নতি পেয়ে হলেন সংখ্যালঘু মন্ত্রকের স্বাধীন মন্ত্রী। আর কিছুটা অপ্রত্যাশিত ভাবে বাবুলের থেকে নগরোন্নয়ন মন্ত্রক কেড়ে নিয়ে তাঁকে ভারী শিল্পে পাঠানো হল।
যদিও বাবুল দাবি করছেন, প্রধানমন্ত্রী তাঁকে যেই দায়িত্বই দেবেন, সেটি খুশি হয়ে নেবেন। অতীতে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী ভারী শিল্পের দায়িত্বে ছিলেন। আজ সেই পদে এসে তিনি খুশি। আজ রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে রদবদলের ঘোষণার পর বাবুল বলেন, ‘‘আমার সঙ্গে ‘বস’-এর (প্রধানমন্ত্রী) এখনও কথা হয়নি। কিন্তু অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ভারী শিল্পের মাধ্যমে হয়। ফলে এই মন্ত্রক পেয়ে আমি খুশি। নগরোন্নয়ন মন্ত্রকেও অনেক কাজ হয়েছে। ভারী শিল্পও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। বাংলা থেকে দু’জন সাংসদের মধ্যে দু’জনেই এখন মন্ত্রী।’’
অথচ দলের অনেক নিন্দুকের মতে, বাবুলকে নিয়ে খুব একটি খুশি ছিলেন না তাঁর মন্ত্রকের ক্যাবিনেট মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নায়ডু। তার উপর বাবুলের কাজ করার ধরন নিয়েও অনেকের অসন্তোষ ছিল। এই মন্ত্রকের হাত ধরেই পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যে ভাবে তিনি সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন, রাজ্য রাজনীতিতে তার খেসারত দিতে হয়েছে। যদিও বাবুল বহু বার এই অভিযোগের জবাব দিয়ে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোতে উন্নয়নের স্বার্থে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখা কোনও অন্যায় নয়। যে কেউ ডাকলেই তিনি যেতে রাজি। অরবিন্দ কেজরীবালের সঙ্গে এক মঞ্চে থেকেও তিনি গান গেয়েছেন।
তবে আজকের রদবদলে সব থেকে উল্লেখযোগ্য বিদায় হল নাজমার। ৭৫ বছর বয়সের ঊর্ধ্বে কাউকে মন্ত্রিসভায় না রাখার অঘোষিত শর্তও এর মধ্যে রূপায়িত হল বলে বিজেপি নেতারা মনে করছেন। যদিও আর এক মন্ত্রী কলরাজ মিশ্রের বয়সও এই মাসে ৭৫ পূর্ণ হয়েছে। কিন্তু আপাতত উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনের কথা মাথায় রেখেই তিনি টিকে গেলেন বলে মনে করা হচ্ছে। সংখ্যালঘুদের উন্নয়নের ক্ষেত্রে নাজমা ভাল কাজ করতে পারছেন না বলে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন বৈঠকে উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন। তাঁকে রাজ্যপাল করা নিয়েও জোর জল্পনা রয়েছে। বিজেপি সূত্র অবশ্য বলছে, নাজমা নিজে উপরাষ্ট্রপতি হতে চান। তবে সেটি হবে আগামী বছর। মন্ত্রিসভা থেকে আজ বিদায়ের পর তাঁকে কী পদে আনা হয়, সেটাই এখন দেখার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy