দ্বিতীয় সরাইঘাট সেতু উদ্বোধনের পর কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণমন্ত্রী নিতিন গডকড়ী, মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল ও অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। রবিবার গুয়াহাটিতে। ছবি: পিটিআই
প্রথম সেতুর ৫৪ বছর পর গুয়াহাটি ও উত্তর গুয়াহাটির মধ্যে যোগাযোগের জন্য উদ্বোধন করা হল দ্বিতীয় সরাইঘাট সেতুর।
প্রথম সরাইঘাট সেতুর উদ্বোধনে এসেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত জওহরলাল নেহরু। এ দিন দ্বিতীয় সরাইঘাটের উদ্বোধন করলেন কেন্দ্রীয় পরিবহণমন্ত্রী নিতিন গডকড়ী। সঙ্গে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল, পূর্তমন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য, অর্থমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা, শিল্পমন্ত্রী চন্দ্রমোহন পাটোয়রি, তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রী কেশব মহন্ত। ছিলেন কেন্দ্রীয় রেল প্রতিমন্ত্রী রাজেন গোঁহাই, সাংসদ বিজয়া চক্রবর্তী, রমেন ডেকা ও অনেক বিধায়ক। একই সঙ্গে বরাক নদীকে ভিত্তি করে লখিপুর থেকে ভাঙা পর্যন্ত ১৬ নম্বর জাতীয় জল সড়কেরও উদ্বোধন করেন নিতিন।
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, প্রথম সরাইঘাট রেল ও সড়ক সেতু তৈরিতে খরচ হয়েঠিল সাড়ে ১০ কোটি টাকা। এ বারের সেতু ৪৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয় ২০০৬ সালে। সেতুর দৈর্ঘ্য ১ হাজার ৪৯৪ মিটার। রাশি-লগ্ন মেনে, শুভ-অশুভের দ্বন্দ্বে, নির্মাণের ভুল-ত্রুটি শুধুরে তিন বার উদ্বোধনের তারিখ বদল করে শেষ পর্যন্ত দ্বিতীয় সরাইঘাট সেতুর পথচলা আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু হল। কয়েক দিন আগে এক বার উড়ুকার সন্ধ্যায় প্রথম সেতুতে যানজটের চাপ সামলাতে কিছুক্ষণের জন্য খোলা হয়েছিল নতুন সেতু। আজ অসমে আরও অনেকগুলি সেতু ও সড়ক প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেন গডকড়ী।
২০১৩-১৪ সালের বাজেটে ওই সেতুর জন্য ব্যয়বরাদ্দ করা হয়। এ দিন ১৬ নম্বর বরাক জাতীয় জল সড়কের উদ্বোধনের পর হলদিয়া থেকে ইন্দো-বাংলাদেশ প্রোটোকল রুট দিয়ে অসমগামী নতুন রোল অন-রোল অফ ভেসেল (রো-রো) এম ভি গোপীনাথ বরদলৈয়ের যাত্রা শুরু করেন কেন্দ্রীয় পরিবহণমন্ত্রী। তিনি জানান, অসমে জলপথ পরিবহণের উন্নয়নে কেন্দ্র ২ হাজার কোটি টাকা দেবে। তৈরি হবে আরও পাঁচটি রো-রো টার্মিনাল। শদিয়া থেকে ধুবুরি পর্যন্ত ব্রহ্মপু্ত্রের নাব্যতা বাড়াতে চলবে ড্রেজিং। শিলচরের বদরপুর ঘাটে বরাক নদীর উপর তৈরি হবে নতুন সেতু। ধুবুরি-ফুলবাড়ির মধ্যেও সেতু হবে। বালচেরা থেকে হারাংগাজাও পর্যন্ত রাস্তা চার লেন করা হবে। গোহপুর থেকে নুমালিগড় পর্যন্ত ব্রহ্মপু্ত্রের উপরে ও ধলাবাড়ি থেকে জামুগুড়িহাট পর্যন্ত জিয়াভরালি নদীর উপরে তৈরি হবে চার লেনের সেতু।
এ দিন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গডকড়ি জানান, উত্তর-পূর্বের বিকাশে প্রধান অন্তরায় যোগাযোগের সমস্যা। তাই আগামী পাঁচ বছরে এখানে এক লক্ষ কোটি টাকা ব্যয়ে পথ নির্মাণ করবে কেন্দ্র। অসমে ১ হাজার ২৫৩ কিলোমিটার রাস্তাকে জাতীয় সড়কে উন্নীত করতে কেন্দ্র খরচ করবে ১৫ হাজার কোটি টাকা। রাজ্যকে প্রয়োজনীয় জমির ব্যবস্থা করতে হবে। অসমে এক হাজার ২৫৩ কিলোমিটার নতুন জাতীয় সড়ক তৈরি হবে। ১ হাজার ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি ধলা-শদিয়া সেতুর উদ্বোধনে আসবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গুয়াহাটি ও উত্তর-গুয়াহাটিতে আরও সেতু নির্মাণের প্রস্তাব রয়েছে। ব্রহ্মপুত্রের তীর বরাবর তৈরি হবে এক্সপ্রেস হাইওয়ে। সেতু তৈরি হবে নদীদ্বীপ মাজুলি থেকে যোরহাট পর্যন্ত।
জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় এ দিন চাংসারি-কুরুয়া, বদরপুর-দুর্লভছড়া-মেন্টিক রোড, রতাচেরা-চূড়াইবাড়ি, লুয়াইরপুয়া-কুনমুম রোড, শিলচর-কালাইন রোড, লালুক-লখিমপুর রোড, মাজুলির কমলাবাড়ি থেকে তেকেলিফুটা সড়ক, দুধনৈ থেকে পঞ্চরত্ন, লাহোয়াল-বরডুবি-তিনসুকিয়া পথ, হালিদয়াগঞ্জ-মানকাচর পথ, আগিয়া-লখিপুর, মঙ্গলদৈ-ভুতিয়াচাং-সনরং, গোগামুখ-তেলিজান সড়ক প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
বিশেষ জোর দেন ভারত-ভুটান সীমান্তপথের উন্নয়নে। তিনি জানান, বাক্সার মুসলপুর থেকে কলিতাকুচি পর্যন্ত জাতীয় সড়ক গড়া হবে। রাজপথ হিসেবে তৈরি করা হবে পাঠশালা থেকে সর্থেবাড়ি, টিহু-সর্থেবাড়ি-নগাঁও নতুন সড়ক, সোনারি থেকে মাহমারা হয়ে মরাণের রাস্তা, বাইহাটা থেকে গোরেশ্বর হয়ে ওদালগুড়ি এবং মরাণ থেকে নাহরকটিয়া পর্যন্ত সড়ক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy