প্রতীকী ছবি
ভারত চিন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সেনা সমাবেশ কমানোর এবং লাদাখের গালওয়ান ভূখণ্ড থেকে লালফৌজকে পিছু হটানোর জন্য প্রক্রিয়া চলছে। সেনা সূত্র বলছে বিষয়টি সময়সাপেক্ষ। কিন্তু পাশাপাশি অদূর ভবিষ্যতে যাতে ফের না দু’দেশের মধ্যে সংঘর্ষের পরিস্থিতি তৈরি হয় তার জন্য, স্থায়ী প্রোটোকল তৈরি করার কথা ভাবা হচ্ছে কূটনৈতিক স্তরে। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের দাবি, দু’দেশের বিদেশ মন্ত্রকই বিষয়টি বিবেচনা করছে। সূত্রের খবর, ভারতের সঙ্গে চিনের সামরিক আলোচনা খতিয়ে দেখতে বৈঠকে বসবে কেন্দ্রের ‘চায়না স্টাডি গ্রুপ’। তার সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল ও বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
সাউথ ব্লক সূত্রের মতে, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় লাদাখে ভারতের ঘাড়ের কাছে নিঃশ্বাস ফেলার দূরত্বে চিন ফাইবার অপটিক কেবল পেতেছে, রাস্তা তৈরি করেছে, লাগিয়েছে সোলার প্যানেল। তৈরি করেছে অনেক বাঙ্কার, পোস্ট। অনেক দিন এ ব্যাপারে পিছিয়ে থাকার পর গত কয়েক বছরে ভারতও একই ভাবে নিজের দিকে পরিকাঠামো জোরদার করেছে। সব মিলিয়ে সীমান্তে এখন এমনই টানটান আবহাওয়া যা অতীতে ছিল না। সীমান্তে বিপুল সেনা সমাবেশ এখন কিছু সময়ের অপেক্ষামাত্র। আর তাই পান থেকে চুন খসলেই সেনা টহলের সময়ে সীমান্তে সংঘর্ষ তৈরি হওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দিতে পারছে না নয়াদিল্লি।
সরকারের এক কর্তার মতে, নয়াদিল্লির কৌশলের প্রথম ধাপ হল গালওয়ান ভূখণ্ড থেকে সম্পূর্ণ সেনা প্রত্যাহার। দ্বিতীয় ধাপ হল, ১৯৯৩ সালের ভারত-চিন চুক্তি অনুযায়ী সীমান্তে ন্যূনতম সেনা রাখার ব্যাপারে ঐকমত্য হওয়া। এরপর তৃতীয় ধাপ হল, সেনা টহলের ক্ষেত্রে একটি প্রোটোকল তৈরি করা যাতে উভয় পক্ষের সংঘর্ষ ভবিষ্যতে না হয়।
এই প্রোটোকলে কী কী থাকতে পারে তা এখনও স্পষ্ট করে জানায়নি সাউথ ব্লক। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। কোন দিকে কত সেনা রয়েছে, সেই সংখ্যা এবং এলাকা নির্দিষ্ট করে দু’পক্ষের মধ্যে নিয়মিত মানচিত্র বিনিময় করার মতো একটি পদক্ষেপের কথা ভাবা হচ্ছে বলে সূত্রের খবর। আগে এই মানচিত্র বিনিময়ের বিষয়টি দু’ পক্ষের সেনার মধ্যে চালু ছিল, কিন্তু ২০০২ সালের পরে তা বন্ধ হয়ে যায়।
ভারতীয় সেনা এবং দেশের নিরাপত্তা সংক্রান্ত সংস্থাগুলির বক্তব্য, শেষ পর্যন্ত চিন কী করবে সে ব্যাপারে এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলা যায় না। তাদের বিশ্বাসও করা যায় না। সীমান্ত পরিকাঠামোর প্রশ্নে চিন কিছুটা এগিয়ে থাকার কারণে তারা দ্রুত বেশি সংখ্যক সেনা জড়ো করতে পারবে এটাও ঠিক। কিন্তু যেহেতু এই পরিকাঠামো ভারত এবং চিন যে যার নিজের দিকে করছে ফলে কেউ কারও ব্যাপারে আপত্তি জানাতে পারে না বা নাক গলাতে পারে না। ফলে যেটা সম্ভব সেটা হল প্রোটোকল তৈরি করে কড়া ভাবে যাতে তা মানা হয় সে দিকে দৃষ্টি রাখা। নয়তো ১৫ জুনের গালওয়ানের মত ঘটনা খুব শীঘ্রই ফের ঘটতে পারে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy