ছবি: চন্দন পাল
ছেলেটা জঙ্গলে জঙ্গলে ঘুরে বেড়াতো। তড়তড় করে উঠে পড়ত যে কোনও গাছে। এমনকী পশু পাখির ভাষাও নাকি বুঝতে পারত সে। রামগড়ের নেমরা গ্রামের সরল সাধাসিধা ছেলেটাই শেষ পর্যন্ত কী ভাবে হয়ে উঠল আদিবাসীদের ‘দশম গুরু’ শিবু সোরেন, ঝাড়খণ্ড আন্দোলনের প্রধান নায়ক, ক্যাবিনেট মন্ত্রী থেকে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী—তা এবার হাজির হতে চলেছে সেলুলয়েডের পর্দায়।
তবে এ শুধু শিবু সোরেনের বায়োপিকই নয়, ‘শিবু সোরেন- দ্যা দশম গুরু’ ছবির পরিচালক নেহাল আহমেদের কথায়, আদিবাসীদের উপর কী ভাবে শোষণ চালাত জোতদার, মহাজন, সুদখোররা, আদিবাসীদের সরল সাধাসিধা জীবনে মদ কী ভাবে অভিশাপ হয়ে ওঠে তাও ফুটিয়ে তোলা হবে ছবিতে। ধানবাদের তরুণ পরিচালক নেহাল বলেন, ‘‘শিবু সোরেনের জীবন যেমন বর্ণময়, তেমনই বিতর্কিত।’’ পরিচালকের দাবি, মহেন্দ্র সিংহ ধোনির বায়োপিকের থেকে কম আকর্ষনীয় হবে না শিবু সোরেনের জীবনভিত্তিক এই চলচ্চিত্র। ছবি তৈরির কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে।
সেই সাতের দশকে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা তৈরি করে শিবু সোরেন আদিবাসীদের শোষণের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেছিলেন। ধীরে ধীরে আলাদা ঝাড়খণ্ড রাজ্যের দাবি সামনে আনেন তিনি। বিহারের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী লালুপ্রসাদ সে দাবির বিরোধিতা করে বলেছিলেন, ঝাড়খণ্ড হলে তা হবে তাঁর মৃতদেহের উপর। সেই লালুপ্রসাদও থাকছেন এই বায়োপিকে। শুধু লালুপ্রসাদই নন, থাকছেন দিল্লির বেশ কিছু নেতা-মন্ত্রীর ছায়া-চরিত্রও। শিবু সোরেন দেশের প্রথম ক্যাবিনেট মন্ত্রী যিনি মন্ত্রী থাকাকালীনই চিরুডি গণহত্যা মামলায় প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে জেলে গিয়েছিলেন। সেই বিতর্কিত অংশও বাদ যাবে না ছবিতে। পরিচালক জানান, মুম্বইয়ের এক পরিচিত ব্যানারেই হতে চলেছে এই ছবি। শিবু সোরেনের চরিত্রে অভিনয় করছেন ধানবাদেরই যুবক, বিদেশ কুমার দাঁ। বিদেশ বলেন, ‘‘আমি নিজেই শিবু সোরেনের ভক্ত। শিবু সোরেনকে খুব কাছ থেকে দেখেছি। জনসভায় তাঁর বক্তৃতাও শুনতে গিয়েছি বহুবার। এমন এক চরিত্রে আমাকে অভিনয় করতে হচ্ছে বলে আমি রোমাঞ্চিত।’’
ঝাড়খণ্ড শেষ পর্যন্ত আলাদা রাজ্য হল। তবে শিবু সোরেন কী আদিবাসীদের শোষণ মুক্ত করতে পারলেন? ঝাড়খণ্ডে কী আজও আদিবাসীরা উপেক্ষিত, অবহেলিত নয়? সেই প্রশ্নও তুলছে এই ছবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy