Advertisement
১৯ মে ২০২৪

মেয়েটাকে একেবারে শেষ করে দাও, বাবাকে বলে মা-ই

নিজের হাতে মেয়ের শ্বাসরোধ করেছিল মা। স্ত্রী-কে সাহায্য করতে চেষ্টার কসুর করেনি বাবাও। মা যখন গলা টিপে ধরেছিল, বাবা তখন ধরে রাখে পা-দু’টোকে। ভিন্ জাতের ছেলেকে বিয়ের অপরাধে মেয়েকে চরম শাস্তি দেওয়ার পর পাড়া-পড়শিকে কী জবাব দেবে, দু’জনে ঠান্ডা মাথায় ভেবে বার করেছিল তাও! দিল্লির কলেজ ছাত্রী ভাবনা যাদব খুনে ধৃত বাবা-মাকে জেরা করেই জানা গিয়েছে এই তথ্য।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৪ ০৩:০২
Share: Save:

নিজের হাতে মেয়ের শ্বাসরোধ করেছিল মা। স্ত্রী-কে সাহায্য করতে চেষ্টার কসুর করেনি বাবাও। মা যখন গলা টিপে ধরেছিল, বাবা তখন ধরে রাখে পা-দু’টোকে। ভিন্ জাতের ছেলেকে বিয়ের অপরাধে মেয়েকে চরম শাস্তি দেওয়ার পর পাড়া-পড়শিকে কী জবাব দেবে, দু’জনে ঠান্ডা মাথায় ভেবে বার করেছিল তাও! দিল্লির কলেজ ছাত্রী ভাবনা যাদব খুনে ধৃত বাবা-মাকে জেরা করেই জানা গিয়েছে এই তথ্য।

এক সপ্তাহ আগে বিয়ে করেন ভাবনা ও অভিষেক। সম্পর্কের গোড়া থেকেই বেঁকে বসেছিল ভাবনার পরিবার। কারণ, পাত্র ভিন্ জাতের। মেয়ের বিয়ের খবর শুনে সে দিনই অভিষেকের বাড়িতে সোজা হাজির হয় ভাবনার বাবা জগমোহন যাদব ও মা সাবিত্রী দেবী। এ ভাবে লুকিয়ে নয়, বিয়ের বড়সড় অনুষ্ঠান করতে চায় এই বুঝিয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে তারা নিয়ে আসে মেয়েকে। দু’দিন যেতে না যেতেই অভিষেকের কাছে ভাবনা ফিরে গেলে একই ভাবে আবারও তাকে ফেরত নিয়ে যায় বাড়ির লোক। সে রাতেই ভাবনার মা-বাবা তাকে সাফ জানিয়ে দেয়, এ বিয়ে পরিবারের কেউ মানছে না। একই জাতের অন্য এক জনের সঙ্গে ২২ নভেম্বর বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক করে ফেলা হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে খবর, ভাবনার বাবা জগমোহন জেরায় জানিয়েছে মেয়ে আইনের কথা তুললে আর মাথা ঠিক রাখতে পারেনি তারা। শুরু হয় মারধর। মার খেয়ে মেয়ে যখন আধমরা, তখন ভাবনাকে মেরে ফেলার জন্য চাপ দেয় তার মা-ই। নিজের হাত দু’টো দিয়ে গলা চেপে ধরে সে।

এর পর রীতিমতো গল্প ফাঁদে ওই দম্পতি। প্রথমে গ্রামের বাড়ি রাজস্থানের অলোয়ারে ফোন করে জানায়, মেয়েকে সাপে কামড়েছে। তাই ঝাড়ফুঁক করতে সেখানে যাচ্ছে। রাজস্থানে পৌঁছনোর পর স্থানীয় এক ধর্মগুরু ভাবনাকে মৃত ঘোষণা করা পরই মেয়েকে দাহ করার জন্য উতলা হয়ে ওঠে তাঁরা। বাড়ির কাছেই ফাঁকা জায়গা দেখে ঘুঁটে আর কিছু কাঠ জোগাড় করে সেখানেই দাহ করা হয় একুশ বছরের ভাবনাকে।

রাজস্থানের ওই গ্রামের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, তাড়াহুড়ো দেখে খানিক অবাক হয়েছিলেন তাঁরা। ভাবনার এক আত্মীয়ের কথায়, “সে রাতেই কাউকে কিছু না জানিয়ে রাজস্থান ছাড়ে ওরা।” তাঁর প্রশ্ন, “মেয়ে মারা গিয়েছে শুনে মা যে সে দিন ও রকম কাঁদল! আজ শুনছি সে-ই খুনি। তা হলে কি সবটাই অভিনয়।” উত্তর খুঁজছে গোটা গ্রামই। ভাবনা যে নেই, বিশ্বাস হচ্ছে না অভিষেকেরও। পুলিশে অভিযোগ জানানোর পর থেকেই হুমকি ফোন আসছে। অভিষেকের সন্দেহ, ভাবনার বাবা-মা খুন করলেও ষড়যন্ত্রের নায়ক এক কাকা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE