ছবি: এএফপি।
প্লাস্টিকের ব্যাগ, কাপ, প্লেট, গ্লাস বা স্ট্র-এর মতো একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের পণ্যের উপর পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞার পথে হাঁটছে না নরেন্দ্র মোদী সরকার। তার বদলে ধাপে ধাপে ২০২২-এর মধ্যে এই সব প্লাস্টিকের পণ্য ব্যবহার বন্ধ করার লক্ষ্য নেওয়া হবে।
আগামিকাল, ২ অক্টোবর গাঁধীর দেড়শো-তম জন্মবার্ষিকীতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার বন্ধ করার লক্ষ্যে ঘোষণা করতে চলেছেন। স্বাধীনতার ৭৫ বছর হিসেবেই ২০২২-এর লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে। কিন্তু একবারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ না করে একে জন-আন্দোলনের চেহারা দিতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী।
সরকারি সূত্রের ব্যাখ্যা, আচমকা কোনও বিকল্প ছাড়াই এই সব প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার নিষিদ্ধ করে দিলে অর্থনীতি ধাক্কা খাবে। প্লাস্টিক শিল্পের হিসেব, দেশে প্রায় ৩০ হাজার প্লাস্টিক নির্মাণকারী সংস্থা রয়েছে। আরও ৩০ হাজার প্লাস্টিক-প্রক্রিয়াকরণের সঙ্গে যুক্ত। সেখানে অন্তত ৪০ লক্ষ মানুষ কাজ করেন। আচমকা প্লাস্টিক-পণ্য নিষিদ্ধ হলে এদের অধিকাংশের রুটিরুজি প্রশ্নচিহ্নের মুখে পড়বে। সেই আশঙ্কার কথা মাথায় রেখে এখনই সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞার কথা ঘোষণা করছে না মোদী সরকার।
গত ১৫ অগস্ট লাল কেল্লা থেকে প্লাস্টিক-বর্জ্য দূর করার ডাক দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেখান থেকে কি পিছিয়ে এল মোদী সরকার? কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রকের কর্তাদের দাবি, প্রধানমন্ত্রী সে দিনও পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞার কথা বলেননি। পরিবেশ সচিব সি কে মিশ্র বলেন, ‘‘কোনও নিষেধাজ্ঞা জারি হচ্ছে না। মানুষকে প্লাস্টিকের অপকারিতা সম্পর্কে সচেতন করা হবে। প্লাস্টিক-বর্জ্য সংগ্রহ করে পুনর্ব্যবহারের প্রচার হবে। যাতে পরিবেশ দূষণ কমে।’’
শিল্প মহলের দাবি, কোনটা একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক, কোনটা নয়, তা স্পষ্ট হওয়া দরকার। আগে তার সংজ্ঞা ঠিক করা হোক। প্লাস্টিক শিল্পের প্রধান সংগঠন প্লাস্টইন্ডিয়া ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট জিগিশ দোশী বলেন, ‘‘সংজ্ঞা ঠিক হলে তবেই বোঝা যাবে, ৫০ মাইক্রনের বেশি বা কম পুরু পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ হচ্ছে কি না।’’
পরিবেশ মন্ত্রকের কর্তাদের বক্তব্য, প্লাস্টিকের বিকল্প নিয়ে শিল্পমহলের সঙ্গে আলোচনা শুরু হবে। প্লাস্টিক সংস্থাগুলি পরিবেশ-বান্ধব বিকল্পের খোঁজে গবেষণার জন্য দায়বদ্ধ। নিয়ম অনুযায়ী, সংস্থাগুলি যে পরিমাণ প্লাস্টিক তৈরি করে, সমপরিমাণ প্লাস্টিক-বর্জ্য সংগ্রহ করতে হয়। তা রূপায়ণে জোর দেওয়া হবে। বিশেষ করে প্লাস্টিকের ব্যাগের বিকল্প খোঁজার কাজ শুরু হবে। কারণ, ওই ব্যাগ ‘ডিকমপোজ’ হতে অনেক সময় ১ হাজার বছর লেগে যায়। প্রসঙ্গত, দৈনিক ২৬ হাজার টন প্লাস্টিক-বর্জ্য জমা হয় ভারতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy