প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং তিব্বতি ধর্মগুরু দলাই লামা। ফাইল চিত্র।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং তিব্বতি ধর্মগুরু দলাই লামা অল্প সময়ের ব্যবধানে অরুণাচল প্রদেশ সফরে (পৃথক পৃথক ভাবে) যাচ্ছেন। তৃতীয় দফায় দলীয় নেতৃত্বে অভিষিক্ত হওয়ার পরে শি জিনপিং-কে চাপে রাখার জন্য ভারতের এই কৌশলী পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষ এমন সময় এই সিদ্ধান্ত, যখন পূর্ব লাদাখে চিনা সেনার আগ্রাসন নিয়ে অমীমাংসিত ভাবে ঝুলে রয়েছে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক।
চিন যত বারই বিভিন্ন মহলে দাবি তুলেছে যে, অরুনাচল প্রদেশ ভারতের নয়, তাদেরই অংশ, ভারত ঠিক তত বারই তার জবাব দিয়েছে। মোদীর এই সপ্তাহে অরুণাচলে যাওয়ার উদ্দেশ্য সেখানে প্রথম বিমানবন্দরটির উদ্বোধন। সূত্রের খবর, সেখান থেকে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে কড়া বার্তা দেবেন তিনি। বিমানবন্দর উদ্বোধনের পাশাপাশি রাজ্যের পশ্চিম কেমাং জেলায় ৬০০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের উদ্বোধনও সারবেন প্রধানমন্ত্রী।
পাশাপাশি তিব্বতি ধর্মগুরু চতুর্দশ দলাই লামারও কথা রয়েছে শীঘ্রই অরুণাচলে যাওয়ার। যদিও তাঁর সফরের তারিখ এখনও ঘোষণা করা হয়নি। সাম্প্রতিক অতীতে যখনই প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতি অথবা দলাই লামা অরুণাচল প্রদেশে গিয়েছেন, বেজিং প্রতিবাদে মুখর হয়েছে। সূত্রের খবর, এ বারের সফরে মোদী অরুণাচল প্রদেশ এবং চিনের সীমান্তবর্তী এলাকায় পরিকাঠামো তৈরির জন্য সরকারের সর্বাত্মক প্রয়াসকে তুলে ধরবেন তাঁর বক্তৃতায়। দলাই লামা তাওয়াং যাবেন। তাঁর থাকার কথা সপ্তদশ দশকের এক বৌদ্ধ মঠ গাদেন গানগেইল লাতসে-তে। এর আগে ৮৭ বছরের এই ধর্মগুরু লে সফরে গিয়েছিলেন গত জুলাই মাসে, ভারত-চিন পূর্ব লাদাখের সংঘাতের মধ্যেই।
সূত্রের খবর, গত মাসে দলাই লামা তাওয়াং যাওয়ার একান্ত ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। ভারত এবং চিন সীমান্তবর্তী এই বিতর্কিত এলাকায় তিনি শেষ বার গিয়েছিলেন ২০১৭ সালের এপ্রিলে। সে সময়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বেজিং বলেছিল, চিনের ভৌগোলিক অখণ্ডতাকে অমান্য করছে নয়াদিল্লি। তাদের অভিযোগ ছিল, এই সফর করিয়ে সাউথ ব্লক ভারত-চিন সম্পর্কেও আঘাত হানছে। তার ঠিক কয়েক মাস পরেই ডোকলাম কাণ্ড শুরু হয়। যা ৭২দিন ধরে চলেছিল। ভারত অবশ্য সেই সময়ে চিনের প্রতিক্রিয়া সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করে বলেছিল, অরুণাচল প্রদেশ ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। এক জন সম্মানীয় অতিথি হিসাবে দলাই লামা ভারতের যে কোনও অঞ্চলে যেতে পারেন।
২০১৪ সালে কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার পরে দীর্ঘদিন মোদী দলাই লামার সঙ্গে কোনও প্রকাশ্য সাক্ষাৎ অথবা মঞ্চ ভাগ করেননি, চিনের আবেগে আঘাত লাগতে পারে এই আশঙ্কায়। কিন্তু সময় বদলেছে। চিনের প্রতি সেই নরম মনোভাব মোদীর আর ধরে রাখতে পারছেন না বলেই মনে করছে কূটনৈতিক শিবির। পূর্ব লাদাখে চিনের আগ্রাসনের পরে মোদী শুধু দলাইকে ফোন করে জন্মদিনের শুভেচ্ছাই জানাননি, তা প্রকাশ্যে এনে চিনকে বার্তাও দিতে চেয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy