উত্তরপ্রদেশে দাঁড়িয়ে রবিবারই যোগী আদিত্যনাথের ভূয়সী প্রশংসা করেন অমিত শাহ। দাবি করেন, এত দিনে উত্তরপ্রদেশের প্রশাসন রাজনীতির প্রভাবমুক্ত। সে দিনই উন্নাওয়ের ধর্ষিতার গাড়ি পিষে দিয়েছে ট্রাক। পীড়িত পরিবার এবং বিরোধীদের চাপের মুখে সোমবার রাতে সিবিআই তদন্ত সুপারিশ করল যোগী সরকার। যদিও সিবিআইকে নিয়েও বিরোধীদের প্রশ্ন কম নয়।
উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা ভোটের তিন বছর বাকি। কিন্তু উন্নাও মামলাকে কেন্দ্র করে পরপর হিংসা বিরোধীদের হাতে অস্ত্র দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। অমেঠীতে শনিবার দুষ্কৃতীদের হাতে প্রাক্তন সেনা অফিসার আমানুল্লার মৃত্যু আর পরের দিন উন্নাও-ধর্ষিতার উপরে ‘আক্রমণ’ উত্তরপ্রদেশের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে ফের শোরগোল ফেলে দিয়েছে। আজ সংসদের ভিতরে ও বাইরে সরব হন বিরোধীরা। রাহুল এবং প্রিয়ঙ্কা গাঁধী দু’জনেই সকাল থেকে টুইটারে সক্রিয়। রাহুল লিখেছেন, ‘‘বেটি বচাও বেটি পড়াও। ভারতীয় নারীদের জন্য বিশেষ শিক্ষা বুলেটিন আসছে। যদি বিজেপির কোনও বিধায়ক আপনাকে ধর্ষণ করে, কোনও প্রশ্ন করবেন না।’’ প্রিয়ঙ্কার টুইট, ‘‘বিজেপির বিধায়কের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ। ধর্ষিতার বাবাকে মারধর করে জেলেই মেরে ফেলা হল। এক জন প্রধান সাক্ষী রহস্যজনক ভাবে মারা গিয়েছেন গত বছর। আর এক সাক্ষী, কাকিমাও মারা গেলেন। আইনজীবী গুরুতর জখম। যে ট্রাকের ধাক্কায় এত কিছু, তার নম্বরপ্লেটে কালো পোঁচ মারা।’’ প্রিয়ঙ্কা দলের স্থানীয় নেতাদের পাঠিয়ে দিয়েছেন লখনউয়ের হাসপাতালে। প্রবীণ কংগ্রেস নেতা প্রমোদ তিওয়ারির মেয়ে আরাধনা মিশ্রকে দায়িত্ব দিয়েছেন পীড়িত পরিবারের দেখভাল করার।
এ দিন বিরোধীরা সিবিআই তদন্তের দাবিই তোলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কেন্দ্র তো সব রাজনৈতিক দলকে কথায় কথায় সিবিআই, ইডি-র নোটিস পাঠায়। এই ঘটনা কী ভাবে ঘটল, সেটা কেন সিবিআই দেখছে না?’’ উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব বলেছেন, ‘‘জঙ্গলরাজ চলছে। সিবিআই তদন্ত ছাড়া সমাধান সম্ভব নয়।’’ রাজ্যসভায় জিরো আওয়ারে আজ সরব হন এসপি সাংসদ রামগোপাল যাদব। যোগ দেয় কংগ্রেস, বিএসপি-সহ প্রায় গোটা বিরোধী বেঞ্চ। চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেন বিষয়টি ‘নোট’ নিতে। কিন্তু শান্ত হননি বিরোধীরা। অধিবেশন মুলতুবি করে দেওয়া হয়।
বিরোধীদের আশঙ্কা, যেখানে পুলিশের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন, সেখানে পুলিশি তদন্ত কত দূর নিরপেক্ষ হবে। একই প্রশ্ন সিবিআই নিয়েও। উন্নাওয়ের ধর্ষণের মামলাটি আগেই সিবিআইয়ের হাতে গিয়েছে। প্রিয়ঙ্কা এ দিন তাই নিয়েও টুইট করে প্রশ্ন ছুড়েছেন, ‘‘সিবিআই তদন্ত কত দূর এগোল? অভিযুক্ত বিধায়ক এখনও পদে কেন? দল তাঁকে বহিষ্কারই বা করেনি কেন?’’ যোগীর সঙ্গে কুলদীপের ছবিও টুইট করেন তিনি।
দিল্লির ইন্ডিয়া গেটে এদিন প্রতিবাদ সমাবেশ হয়। দিল্লি মহিলা কমিশনের প্রধান স্বাতী মালিওয়াল ধর্ষিতাকে লখনউয়ের হাসপাতালে দেখতে যান। মেয়েটিকে জরুরি ভিত্তিতে দিল্লিতে উড়িয়ে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করাতে দেওয়ার জন্য উত্তরপ্রদেশ সরকারকে অনুরোধ করেন তিনি। যোগী সরকার এখনও সাড়া দেয়নি। সরকারের তরফে এখনও কেউ পীড়িতদের সঙ্গে দেখা করেননি। বিরোধীদের কটাক্ষ, যোগী সরকার তো কাঁওয়ারিয়াদের সেবা করতে ব্যস্ত!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy