Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Girl Tried to Meet Lover in Pak

প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করতে পাকিস্তানের পথে! জয়পুরে আটক কিশোরীর বয়ানে হতভম্ব পুলিশও

জয়পুরের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার বলেন, “কিশোরীকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কিশোরী তার বাড়ির যে ঠিকানা বলেছিল, তা সম্পূর্ণ ভুল ছিল। তার কাছ থেকে কোনও বৈধ নথি পাওয়া যায়নি।”

Representational Image

প্রতীকী ছবি।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
জয়পুর শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০২৩ ১৪:০৬
Share: Save:

আবারও সেই রাজস্থান। এ বার বাড়ি থেকে পালিয়ে পাকিস্তানে প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিল এক কিশোরী। কিন্তু তার আগেই জয়পুর বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ তাকে আটকে দেন। তার পর পুলিশের হাতে তুলে দেন তাঁরা। বিমানবন্দর সূত্রে খবর, কিশোরীর কাছে কোনও পাসপোর্ট এবং ভিসা না থাকায় বিমানে ওঠার অনুমতি দেওয়া হয়নি।

কেন পাকিস্তানে যাচ্ছিল কিশোরী, এই প্রশ্ন করা হলে সে দাবি করে, প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছে। এর পরই কিশোরীর মা-বাবাকে থানায় ডেকে পাঠায় পুলিশ। তাঁদের সামনে কিশোরীকে আবার জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। তখন সে দাবি করে, তাঁর প্রতি সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতেই নাকি এ কাজ করেছেন। যদিও তার কথায় খুব একটা বিশ্বাস করতে চায়নি পুলিশ এবং কিশোরীর পরিবার।

জয়পুর বিমানবন্দরের এক আধিকারিক বলেন, “শুক্রবার এক কিশোরী বিমানবন্দরে আসে। টিকিট কাউন্টারে এসে লাহোরে যাওয়ার টিকিট চায় সে। প্রথমে সে নিজেকে পাকিস্তানি বলে পরিচয় দেয়। কিন্তু ওর কাছে কোনও ভিসা বা পাসপোর্ট পাননি আধিকারিকরা। এর পরই সন্দেহ হওয়ায় কিশোরীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন বিমানবন্দরের নিরাপত্তারক্ষীরা।” ওই আধিকারিক আরও জানিয়েছেন, জিজ্ঞাসাবাদের সময় কিশোরী জানায়, তার নাম গজল এবং সে এক জন পাকিস্তানি। কিন্তু তাকে যখন চেপে ধরা হয়, তখন সে জানায় লাহোরে প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিল।

জয়পুরের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার জ্ঞানচন্দ্র যাদব বলেন, “কিশোরীকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কিশোরী তার বাড়ির যে ঠিকানা বলেছিল, তা সম্পূর্ণ ভুল ছিল। তার কাছ থেকে কোনও বৈধ নথি পাওয়া যায়নি।” ডিসিপি জানিয়েছেন, কিশোরী তাঁদের কাছে দাবি করেছেন যে, আসলাম লাহোরী নামে এক যুবকের সঙ্গে ইনস্টাগ্রামে আলাপ হয়েছে। তাঁর সঙ্গেই দেখা করতে যাচ্ছিল সে। কিশোরী পুলিশের কাছে আরও দাবি করেছে, আসলামই তাকে বলে দিয়েছিল কী ভাবে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে ফাঁকি দিয়ে বিমানে উঠতে হবে।

পুলিশ জানিয়েছে, বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে কিশোরী গল্প ফাঁদে, তিন বছর আগে ইসলামাবাদ থেকে ভারতে এসেছিল। কাকিমার সঙ্গে থাকে সে। কিন্তু কাকিমার সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় সে এখন পাকিস্তানে ফিরে যেতে চায়। বিমানবন্দরের নিরাপত্তারক্ষীরা কিশোরীর কথা শুনে স্তম্ভিত হয়ে যান। তদন্তের পর পুলিশ জানতে পারে, কিশোরী ইসলামাবাদের বাসিন্দা নয়, সে রাজস্থানের সীকর জেলার রত্নপুরা গ্রামের।

প্রথমিক তদন্তে পুলিশ আরও জানতে পেরেছে যে, আসলামই নাকি কিশোরীকে পাকিস্তানে আসার জন্য বলেছিল। কিশোরী বিমানবন্দরে পৌঁছে বোরখা পরে। তার পর পাকিস্তানের টিকিট কাটার চেষ্টা করে। আসলামের সঙ্গে কিশোরীর পরিচয় হয় তার এক সহপাঠীর মাধ্যমে। এক বছর ধরে ইনস্টাগ্রামে তাদের কথাবার্তাও হয়েছে। পুলিশ কিশোরীর মোবাইল বাজেয়াপ্ত করেছে। তার প্রেমিকের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখে পুলিশ জানতে পেরেছে যে, শুধু এই কিশোরীই নয়, বেশ কিছু ভারতীয় কিশোরীর সঙ্গে ইনস্টাগ্রামে বন্ধুত্ব রয়েছে আসলামের।

ঘটনাচক্রে, এই রাজ্যেরই অলওয়ার থেকে পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ায় ফেসবুক বন্ধু নাসরুল্লার কাছে চলে গিয়েছেন অঞ্জু নামে এক মহিলা। ধর্ম পরিবর্তন করে নাসরুল্লাকে বিয়েও করেছেন তিনি। পাক বধূ সীমা হায়দরের ঘটনা নিয়ে যখন গোটা দেশ তোলপাড়, সেই সময় অঞ্জুর ঘটনা আলোড়ন ফেলে দিয়েছে। তার মধ্যেই আবার রাজস্থান থেকে কিশোরীর পাকিস্তান যাওয়ার চেষ্টার ঘটনা প্রকাশ্যে এল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jaipur Pakistan Girl lover
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE