Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
National news

অস্বস্তি ঢাকতে চড়া সুরে মোদী, মুখরক্ষার জয় বলে কটাক্ষ মমতার

গুজরাতে দলের ভোটের হার পড়ে যাওয়ার অস্বস্তি ঢাকতে জোর গলায় উন্নয়নের ‘জয়গান’ গাইলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৭ ১৫:২৯
Share: Save:

গুজরাতে দলের ভোটের হার পড়ে যাওয়ার অস্বস্তি ঢাকতে জোর গলায় উন্নয়নের ‘জয়গান’ গাইলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নিজের রাজ্যে ১৬টি আসন খোয়ানোর অস্বস্তি চাপা দিতে প্রধানমন্ত্রী বললেন, ‘‘বিকাশের (উন্নয়ন) জন্যই গুজরাতে জয় হয়েছে বিজেপি-র। আর উন্নয়ন করতে পারেনি বলেই হিমাচল প্রদেশে পর্যুদস্ত হতে হয়েছে কংগ্রেসকে।’’

দৃশ্যতই অস্বস্তি ঢাকতে যখন সোমবার দিল্লিতে বিজেপি-র সদর দফতরে সুর চড়াতে দেখা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে, তখন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী গুজরাতে মর্যাদার সঙ্গে লড়াই করার জন্য সাবাশি জানিয়েছেন দলীয় কর্মীদের। ধন্যবাদ জানিয়েছেন তাঁদের শালীনতা বজায় রেখে সাহস দেখানোর জন্য।

আর পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর টুইটে লিখেছেন, ‘‘এই জয় সাময়িক ভাবে মুখরক্ষা করেছে বিজেপির। কিন্তু বিজেপির নৈতিক হার হয়েছে।’’

এ দিন দুই রাজ্যের ভোটের ফলাফল ঘোষণার পর দলের সদর দফতরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ বলেন, ‘‘এই ভোটে প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের রাজনীতিরই জয় হয়েছে। পরাজয় হয়েছে পরিবারতন্ত্র, জাতপাত আর তোষণের রাজনীতির। ভোটাররা বুঝিয়ে দিয়েছেন, উন্নয়নই তাঁদের পছন্দ। পরিবারতন্ত্র্, জাতপাত আর তোষণের রাজনীতিকে তাঁরা পছন্দ করেন না।’’

দিল্লিতে বিজেপি-র সদর দফতরে এ দিন প্রধানমন্ত্রী মোদীর বক্তব্য শোনার জন্য দলীয় কর্মীদের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। দলের সভাপতি অমিত শাহ কথা বলতে শুরু করার আগেই ‘মোদী মোদী’ রব ওঠে বিজেপির সদর দফতরে। সেই সময় দলীয় সমর্থকদের থামিয়ে অমিতকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আমাকে একটু বলতে দিন। তার পর উনিই (প্রধানমন্ত্রী মোদী) বলবেন।’’

তার পর অল্প কথায় তাঁর বক্তব্য শেষ করে দেন অমিত। শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তিনি বলেন, ‘‘যাঁরা বলেছিলেন, জিএসটির জন্য ভোটে আমাদের ফলাফল খারাপ হবে, তারা দেখলেন কাজ করলে মানুষের ভোট পেতে অসুবিধা হয় না। আর কাজ না করলে কী হয়, কংগ্রেস তা ফের বুঝতে পারল হিমাচল প্রদেশে।’’

ভোটের ফলাফল ঘোষণা শুরু হতেই প্রধানমন্ত্রী মোদী সহ রাজনৈতিক নেতারা এ দিন টুইট করতে শুরু করেন। দিনভরই চলে তাঁদের টুইট।

নরেন্দ্র মোদী (প্রধানমন্ত্রী): গুজরাত এবং হিমাচলপ্রদেশের মানুষ যে ভালবাসা এবং আস্থা দেখিয়েছেন তার জন্য তাঁদের প্রতি মাথা নত করে শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। কথা দিচ্ছি, এতদিন যে ভাবে এই দুই রাজ্যে উন্নয়ণ চলেছে, কাজে এতটুকু খামতি থাকবে না।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী): গুজরাত নির্বাচনে ভারসাম্যের পরিচয় দেওয়ার জন্য গুজরাতবাসীকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। এটা একটা অস্থায়ী এবং মুখ বাঁচানো জিত। আদপে বিজেপির নৈতিক পরাজয় হয়েছে। সাধারণ মানুষের উপরে নৃশংসতা, অবিচারের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে গুজরাত। ২০১৯-এর জন্য বিড়ালের গলায় ঘণ্টাটা বেঁধে দিল গুজরাত।

I congratulate Gujarat voters for their very balanced verdict at this hour.
It is a temporary and face-saving win, but it shows a moral defeat for BJP.
Gujarat voted against atrocities, anxiety and injustice caused to the common people. Gujarat belled the cat for 2019

গাড়ি থেকে নামতেই অমিত শাহের উপর পুষ্পবৃষ্টি। দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে। সোমবার। ছবি:এপি।

অমিত শাহ (বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি): জয় হয়েছে উন্নয়ণের রাজনীতির। পরিবারতন্ত্র, জাতপাত, তোষণের রাজনীতির পরাজয় হয়েছে।

পরেশ রাওয়াল (অভিনেতা এবং বিজেপি সাংসদ): দু’টো রাজ্যে পরাজয় মানে রাহুল গাঁধীকে ব্যঙ্গ করার কিছু নেই। কেউই ১০০ শতাংশ নির্বাচনে জিততে পারেন না। কিছু দিন আগেই রাহুলজি কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন। সুতরাং গুজরাত আর হিমাচলে পরাজয় এমন কোনও বড় ব্যাপার নয়।

আরও পড়ুন: কংগ্রেসের স্বপ্ন অপূর্ণ, গুজরাতে টানা ছ’বার ক্ষমতায় বিজেপি-ই

যোগী আদিত্যনাথ (উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী): আমি আগেই বলেছিলাম, কংগ্রেসের নেতৃত্ববদল বিজেপির জন্য শুভ সঙ্কেত হবে।

মুরলীধর রাও (সভাপতি, কর্নাটক বিজেপি): গুজরাত ও হিমাচল প্রদেশে বিধানসভা ভোটের ফলাফল দেশের জন্যই খুব গুরুত্বপূর্ণ। মানুষ গোড়া থেকেই এই ভোটের ওপর নজর রেখে এসেছেন। এর প্রভাব পড়বে ২০১৯ সালের সাধারণ নির্বাচনে। আগামী বছর কর্নাটকে বিধানসভা ভোট। কংগ্রেসের হাতে গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য বলতে এই কর্নাটকই রয়েছে। এ বার কর্নাটকও আমরা কংগ্রেসের কাছ থেকে কেড়ে নেব।

ওমর আবদুল্লা (জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী): গুজরাত কংগ্রেসের বিপর্যয় নয়। যে জোরদার জয় বিজেপি আশা করেছিল তা হয়নি। এর মানে কী হয় আপনারাই বুঝে নিন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE