সাংবাদিক সম্মেলনে রাহুল গাঁধী। শনিবার নয়াদিল্লিতে। পিটিআই।
গত এক সপ্তাহে ঠান্ডা মাথায় একের পর এক চাল দিয়ে শেষ পর্যন্ত কিস্তিমাৎ করলেন রাহুল গাঁধী। কর্নাটক বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলের পর তাঁর বহুমাত্রিক কৌশলের কাছে নতি স্বীকার করতে বাধ্য হলেন নরেন্দ্র মোদী–অমিত শাহ। আজ বেঙ্গালুরুতে কর্নাটক বিধানসভায় বি এস ইয়েদুরাপ্পা পদত্যাগ করার কথা ঘোষণা করার মিনিট কুড়ির মধ্যেই নয়াদিল্লির ২৪ আকবর রোডে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাহুল বার্তা দিলেন, কর্নাটকে সরকার গড়া নিছকই সূচনামাত্র। তাঁর কথায়: ‘‘এ বার দেশের সর্বত্র বিরোধী দলগুলি নিজেদের মধ্যে সমন্বয় করবে বিজেপি-কে হারানোর জন্য।’’
কর্নাটকে যদি কংগ্রেস, জেডি (এস)-এর সঙ্গে জোট গড়ে লড়ত তা হলে বিজেপি-র আসনসংখ্যা অনেকটাই কমে যেত বলে মনে করছে রাজনৈতিক শিবির। কিন্তু ভোটের ফলাফলের পর তিলার্ধ সময় নষ্ট করেননি রাহুল। দ্রুত পৌঁছে গিয়েছেন জেডি (এস)-এর কাছে। নিজে ফোনে কথা বলেছেন দেবগৌড়ার সঙ্গে। জেডি (এস)-এর তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ আসন পাওয়া সত্ত্বেও মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে দেবগৌড়ার পুত্র কুমারস্বামীকে মনোনীত করার বিষয়টিকে রাহুলের ‘মাস্টারস্ট্রোক’ বলেই মনে করছে কর্নাটকের রাজনৈতিক শিবির। মূলত এই উদার সিদ্ধান্তটির জন্যই গঁদের আঠায় জোড়ার মতো অটুট রইলেন জেডি (এস)-এর বিধায়কেরা— এমনটাও মনে করা হচ্ছে। কংগ্রেসের এক শীর্ষনেতার কথায়, ‘‘কুমারস্বামীর পক্ষে আর বিজেপি-র দিকে যাওয়ার কোনও উপায়ই থাকল না। কারণ, তিনি ভাল করেই জানতেন যে জেডিএস-কংগ্রেস জোটের জন্য জানপ্রাণ দিয়ে লড়লে তাঁর মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু বিজেপি-তে গেলে ইয়েদুরাপ্পার হাতেই তামাক খেয়ে যেতে হবে।’’
সরকার গড়ার লড়াইয়ে এক ইঞ্চি জায়গাও যে ছাড়েননি রাহুল, তার প্রমাণ, ফলাফল প্রকাশের পর কালবিলম্ব না করে জেডি (এস)-এর সঙ্গে যৌথ ভাবে সরকার গড়ার দাবি জানিয়েছে কংগ্রেস। রাজ্যপাল বাজুভাই বালা গত ১৬ তারিখ ইয়েদুরাপ্পাকে ডেকে শপথগ্রহণের কথা বলার পরই রাহুলের নির্দেশে মাঝরাতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল কংগ্রেস। ভোর সাড়ে ৫টা পর্যন্ত শুনানির পর হয়তো ১৭ তারিখ ইয়েদুরাপ্পার শপথ গ্রহণ আটকানো যায়নি, কিন্তু সর্বোচ্চ আদালতের সামনে নিজেদের যুক্তি এবং পরিস্থিতির ব্যাখ্যা করার সুফলও হাতেনাতেই পেয়েছে রাহুলের কংগ্রেস। এর পরই পনেরো দিনের বদলে মাত্র ২৮ ঘণ্টার মধ্যে বিধানসভায় শক্তি পরীক্ষার নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। স্বাভাবিক ভাবেই সময় সংক্ষিপ্ত হওয়ায় দলকে অটুট রাখতে বাড়তি সুবিধা পেয়ে যায় কংগ্রেস–জেডি (এস)।
আরও পড়ুন: কর্নাটকে রণে ভঙ্গ দিল বিজেপি, ইস্তফা ইয়েড্ডির, সোমবার শপথ কুমারস্বামীর
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy