Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
RSS

রামের নামে অ-হিন্দু এলাকাতেও যাচ্ছে সঙ্ঘ

দার্জিলিং ও কালিম্পঙে যেমন। সেখানে প্রচারে নেমেছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। বাড়ি বাড়ি অযোধ্যার চাল, মন্দিরের তথ্যসম্বলিত লিফলেট দিয়ে ২২ জানুয়ারি প্রদীপ জ্বালাতে বলা হচ্ছে।

RSS

—প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০২৪ ০৭:১৯
Share: Save:

উপলক্ষ অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধন। তবে তাকে সামনে রেখে ভোট-সংযোগ সারতে চাইছে বিজেপি। হিন্দু এলাকা তো বটেই, মুসলিম মহল্লা থেকে জনজাতি পল্লিতেও পৌঁচ্ছেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা। পাহাড়েও চলছে রাম-নাম। কিছু ক্ষেত্রে সঙ্ঘ এবং বিজেপি এক সঙ্গে। কিছু ক্ষেত্রে বিজেপি একক ভাবে। আবার কয়েকটি এলাকায় যাচ্ছেন শুধুই সঙ্ঘ পরিবারের সদস্যরা।

দার্জিলিং ও কালিম্পঙে যেমন। সেখানে প্রচারে নেমেছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। বাড়ি বাড়ি অযোধ্যার চাল, মন্দিরের তথ্যসম্বলিত লিফলেট দিয়ে ২২ জানুয়ারি প্রদীপ জ্বালাতে বলা হচ্ছে। ওই দিন দার্জিলিং পাহাড়ে ৫১ হাজার প্রদীপ জ্বালাবে মহাকাল মন্দির পুজো কমিটি ও ওয়েলফেয়ার সোসাইটি বলে একটি সূত্রের দাবি। দার্জিলিং জেলা রামজন্ম উৎসব কমিটির আহ্বায়ক নরেন্দ্র শর্মা জানান, পাহাড়ে কলসযাত্রার কলসটি অযোধ্যা থেকেই আনা হয়েছে। কালিম্পঙের মিগমা শেরপা ও জ্যোতি রাইরা বলছেন, ‘‘প্রসাদী চাল রান্নার চালে মেশাতে বলা হচ্ছে। ওঁরা বলছেন, সবাই শুনছে। তবে পুরোটাই রাজনীতি!’’

উত্তরবঙ্গের সমতলের জেলা কোচবিহারে শ্রীরাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ন্যাসের সদস্যেরা প্রায় ৪ লক্ষ বাড়িতে রাম-বার্তা পৌঁছেছেন। অধিকাংশই হিন্দু পরিবার। কিছু মুসলিম বাড়িতেও গিয়েছেন। সংগঠনের জেলা কার্যকর্তা অমর রায় সে কথাই জানান।

জঙ্গলমহলের জেলাগুলিতেও সঙ্ঘের জাগরণ কর্মসূচি জোরদার হচ্ছে। আরোগ্যভারতী, সেবাভারতী, হিন্দু জাগরণ মঞ্চ, বজরং দলের মতো সঙ্ঘের ১৭টি শাখার কার্যকর্তারা জনজাতি, কুড়মি পরিবারে যাচ্ছেন। ২২ জানুয়ারি ঝাড়গ্রাম শহরে আবার হবে ‘নির্দল’ রামমন্দির শোভাযাত্রা। শবর ও জনজাতিদের সঙ্গে শ্রীরামের সখ্য ট্যাবলোয় তুলে ধরা হবে। ভোটের আগে জনজাতি আবেগ ছুঁতেই কি এই আয়োজন? শোভাযাত্রার অন্যতম উদ্যোক্তা জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি দেবাশিস কুণ্ডু যদিও বলছেন, ‘‘রাম সর্বজনীন। তিনি জঙ্গলমহলেরও।’’

বাঁকুড়ায় আবার শ্রীরাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের সদস্যরা গ্রামে গ্রামে খোল বাজিয়ে কীর্তন করে আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন। সিমলাপালের শঙ্কর মাহাতোর কথায়, ‘‘ভক্তরা নাম সংকীর্তন করে গ্রাম পরিক্রমা করেছেন। আমিও যোগ দিয়েছিলাম।’’ খাতড়ার আমডিহা গ্রামের পুষ্প মাহাতো বলছেন, ‘‘শ্রীরামের জন্মভূমি থেকে পুজোর চাল বাড়িতে আসাটা বড় পাওনা।’’ পুরুলিয়াতেও বিলি করা হয়েছে ৩ লক্ষ আমন্ত্রণপত্র।

সংখ্যালঘু জেলাগুলিতেও সক্রিয় গেরুয়া শিবির। মুর্শিদাবাদে বহু মুসলিম বাড়ি ও দোকানে পৌঁছেছেন সঙ্ঘের লোকজন। সঙ্গে বিজেপি কর্মীরা থাকছেন। বিরোধ নয়, শোনা গিয়েছে সম্প্রীতির বার্তা। সঙ্ঘের দক্ষিণ মুর্শিদাবাদ ব্যবস্থা প্রমুখ প্রলয় চট্টোপাধ্যায় মানছেন, ‘‘রাস্তার মধ্যে মুসলমান বাড়ি ও দোকান থাকলে সেখানে আমরা গিয়েছি।’’ তবে ডোমকলে মূলত হিন্দু পরিবারেই পৌঁছেছে রাম-বার্তা। মালদহেও সংখ্যালঘুদের দুয়ারে ছুটছে আরএসএস ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। সঙ্ঘের জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা পীযুষকান্তি সাহা বলেন, “মুসলিম পরিবারের একাংশ অক্ষত হলুদ চাল নিচ্ছে। অনেকে আপত্তিও করছেন। তবু আমরা যাচ্ছি।” সংখ্যালঘু গ্রামগুলির বাসিন্দারা বলছেন, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে রামমন্দির হচ্ছে। এর বেশি কিছু নয়।

রাজ্য তৃণমূলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের দাবি, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার উন্নয়নের ব্যর্থতা ঢাকতে ধর্মকে হাতিয়ার করছে। মানুষের রোটি, কপড়া অউর মকানের দাবি পূরণে ব্যর্থ বলেই মন্দির নিয়ে এত কিছু করতে হচ্ছে।’’ বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য তুষার মুখোপাধ্যায়ের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘রাম শুধু সনাতন ধর্মের দেবতা নন, তিনি গোটা বিশ্বে সুশাসনের প্রতীক। সেই সুশাসনের ছায়া আজ গোটা দেশ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মধ্যে
দেখতে পাচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

RSS Ayodhya Ram Temple Ayodhya Ram Mandir BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE