গত কালই কেন্দ্রের চাপের মুখে ইস্তফা দিয়েছিলেন মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল শঙ্করনারায়ণন। চব্বিশ ঘন্টা কাটতে না কাটতেই আজ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গে দেখা করলেন কেরলের রাজ্যপাল শীলা দীক্ষিত। বৈঠকের পর রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে শীলা দেখা করতে যেতেই জল্পনা শুরু হয়, তবে কি এ বার শীলার ইস্তফার পালা? যদিও কেরলের রাজ্যপালের দাবি, “সব গুজব।”
ক্ষমতায় আসার পর থেকে বিজেপি যে ক’জন রাজ্যপালকে সরাতে তৎপর ছিল, তার মধ্যে একেবারে প্রথম সারিতে ছিলেন শীলা। এ জন্য খোদ বিজেপি নেতাদের চাপ রয়েছে মোদী-রাজনাথের উপর। কারণ তাঁর বিরুদ্ধে কমনওয়েলথ গেমসে দুর্নীতির একাধিক অভিযোগ রয়েছে। দিল্লির বিজেপি নেতৃত্ব প্রথম থেকেই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শীলার বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত চালানোর পক্ষে। কিন্তু দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পরে শীলাকে তড়িঘড়ি কেরলের রাজ্যপাল করার সিদ্ধান্ত নেয় তৎকালীন ইউপিএ সরকার। বিজেপির অভিযোগ, শীলাকে সে সময়ে রাজ্যপাল করে দিয়ে আসলে রক্ষাকবচ দিতে চেয়েছিল কংগ্রেস নেতৃত্ব। যাতে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু না করা যায়।
সম্প্রতি নিজের লেখা বই সম্পর্কে বলতে গিয়ে ফের কমনওয়েলথ গেমসের দুর্নীতি প্রসঙ্গ উস্কে দিয়েছেন প্রাক্তন কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল বিনোদ রাই। আজ বণিকসভার একটি অনুষ্ঠানেও বিনোদ রাইকে দেখা গিয়েছে, যেখানে ঘটনাচক্রে উপস্থিত ছিলেন অরুণ জেটলি। এই পরিস্থিতিতে আজ রাজনাথের সঙ্গে বৈঠকের পর শীলার ইস্তফা নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়ে যায় রাজধানীতে। যদিও সরকারি ভাবে এই বৈঠককে সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎকার হিসেবেই তুলে ধরেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
এর আগেও শীলাকে সরানোর চেষ্টা করেছিল মোদী প্রশাসন। ক্ষমতায় আসার পর-পরই বেশ কয়েক জন রাজ্যপালকে ফোন করে সরে যেতে বলেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অনিল গোস্বামী। সেই তালিকায় শীলাও ছিলেন। কিন্তু সেই ফোন পাওয়ার পরে তড়িঘড়ি দিল্লি এসে নরেন্দ্র মোদী ও রাজনাথ সিংহের সঙ্গে দেখা করে প্রাথমিক ধাক্কা সামলে নিয়েছিলেন শীলা। কিন্তু সম্প্রতি রাজস্থানে জমি দুর্নীতির অভিযোগ থাকায় গুজরাতের প্রাক্তন রাজ্যপাল কমলা বেনিওয়ালকে বরখাস্ত করে মোদী সরকার। তার পরেই ফের বিজেপির অন্দরমহলে প্রশ্ন ওঠে, তা হলে একই ভাবে দুর্নীতির অভিযোগ থাকায় কেন শীলার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না?
কিন্তু মোদী প্রশাসনের বক্তব্য, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী কোনও রাজ্যপালকে বিনা কারণে সরিয়ে দেওয়া যায় না। সে ক্ষেত্রে আইনি জটিলতা দেখা দেবে। তাই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের খবর, প্রথমে শীলাকে কেরল থেকে সরিয়ে উত্তর-পূর্বের কোনও রাজ্যের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল শঙ্করনারায়ণনের মতো যদি তিনি সেই দায়িত্ব গ্রহণে রাজি না হয়ে নিজে থেকেই ইস্তফা দিয়ে দেন, তা হলে সরকারকে কোনও আইনি জটিলতার মুখোমুখি হতে হবে না। তা না হলে কমনওয়েলথ গেমসের তদন্ত যেমন চলছে, তেমনি চলবে। সে ক্ষেত্রে শীলাকে কোনও ধরনের আইনি রক্ষাকবচ দেওয়া হবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy