বিজেপির উপরে আরওচাপ বাড়াতে আজ মহারাষ্ট্র বিধানসভায় বিরোধী আসনেই বসল শিবসেনা। আনুষ্ঠানিক ভাবে তারা দাবিকরেছে বিধানসভার বিরোধী দলনেতার পদটিও।
উদ্ধব ঠাকরের হুমকির মুখেও মাথা নিচু করেননি নরেন্দ্র মোদী। উল্টে মন্ত্রিসভার দফতর বণ্টনের সময় শিবসেনা নেতা অনন্ত গীতেকে পুরনো মন্ত্রকেই রেখে দিয়েছেন। কিন্তু শিবসেনা চাইছে, পরশু মহারাষ্ট্রে দেবেন্দ্র ফডণবীস সরকারের আস্থা ভোটের আগেই রাজ্যে মন্ত্রক বণ্টনের বিষয়টি স্পষ্ট করুক বিজেপি। তা হলেই শিবসেনা বিজেপিকে সমর্থন করবে। বিজেপির বক্তব্য, আগে নিঃশর্ত সমর্থন। তার পর মন্ত্রক নিয়ে আলোচনা। স্নায়ুযুদ্ধে এগিয়ে থাকতে শিবসেনা আজ বিধানসভার বিশেষ অধিবেশনের প্রথম দিনে বিরোধী আসনে বসেছে। একনাথ শিন্দেকে বিরোধী দলনেতার জন্য নির্বাচিত করে বিধানসভার সচিবের কাছে চিঠিও পাঠিয়েছে দল। পাশাপাশি, স্পিকার পদে প্রার্থী দিয়ে অন্যদের সমর্থন পেতেও হাত বাড়িয়েছে তারা।
তবে বিরোধী আসনে বসলেও শিবসেনার সঙ্গে বিজেপির এখনও ভিতরে ভিতরে আলোচনা চলছে। সূত্রের খবর, মহারাষ্ট্রে শিবসেনা পূর্ণ ও প্রতিমন্ত্রী মিলিয়ে দশটি মন্ত্রক চাইছে। রয়েছে অর্থ ও স্বরাষ্ট্রের মতো মন্ত্রকও। এতগুলি মন্ত্রক বিজেপি ছাড়তে রাজি নয়। জটিলতা কাটাতে যদিও আরও দেড় দিন হাতে রয়েছে।
দিল্লিতে অরুণ জেটলিকে শিবসেনা কাঁটার ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “কিছু সমস্যা আছে, যেগুলি নিজের সমাধান নিজেই খোঁজে।” আর রাজীবপ্রতাপ রুডি বলেন, “আলোচনা চলছে। কিছু সমাধান বেরোবে।” কিন্তু শিবসেনা নেতারা বলছেন, “কাল থেকে বিজেপির সঙ্গে আলোচনা বন্ধ। বিরোধী আসনেই বসাই ভাল।” কিন্তু শিবসেনার আশঙ্কা রয়েছে, তাদের দলের একাংশ মন্ত্রিসভায় যেতে চায়। অন্য অংশ বিরোধী আসনে বসতে রাজি। এই অবস্থায় এনসিপির পরোক্ষ সমর্থনে বিজেপি বুধবারের আস্থা ভোট জিতে গেলে আগামী ছ’মাসের আগে অনাস্থা প্রস্তাব আনা যাবে না। এই সময়ের ভিতরে দল ভেঙে যেতে পারে। শিবসেনা থেকে বিধায়করা বিজেপিতে গেলে আগামী ছ’মাসে তারা একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে যাবে। পাশাপাশি, বিজেপির সমর্থনে টিকে থাকা মুম্বই পুরসভা নিয়েও শিবসেনার মাথাব্যথা রয়েছে। কেন না, শিবসেনার পুরসভা থেকে বিজেপি সমর্থন প্রত্যাহার করলে সংখ্যালঘু বোর্ডের কাজে রাজ্য সরকার হস্তক্ষেপ করতে পারবে।
এই আশঙ্কা থেকেই তৎপর হয়েছেন উদ্ধব। তাঁর এই মনোভাব টের পেয়েই মোদী ও তাঁর সেনাপতিরা এখন খুব একটা ঝুঁকতে চাইছেন না। আবার শিবসেনাকে হারাতেও চাইছেন না। তাই খোলা রাখতে চাইছেন আলোচনার পথ। পাল্টা চাপ দিয়ে বিজেপি নিজের শর্তেই তাদের মানিয়ে নেওয়ার কৌশল নিতে চাইছে।
বিজেপি ও শিবসেনার এই দরকষাকষিতে অনন্ত গীতের ভবিষ্যৎ কী হবে, তা নিয়ে ব্যাপক জল্পনা রয়েছে। মহারাষ্ট্রের অঙ্কই কেন্দ্রে দু’দলের সমীকরণ ঠিক করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy