অভিযুক্ত আফতাব আমিন পুনাওয়ালা এবং নিহত প্রেমিকা শ্রদ্ধা ওয়াকার। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
আফতাব-শ্রদ্ধার ফ্ল্যাট থেকে প্রায়শই মারপিট, বাগ্বিতণ্ডা এবং তর্কাতর্কির আওয়াজ শোনা যেত! প্রায়ই নাকি শ্রদ্ধার উপর ‘পাশবিক অত্যাচার’ও করতেন অভিযুক্ত প্রেমিক আফতাব। দিল্লির মেহরৌলি হত্যাকাণ্ড নিয়ে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে আনলেন আফতাব-শ্রদ্ধার প্রতিবেশী। নিহত শ্রদ্ধা এবং অভিযুক্ত আফতাব যে ফ্ল্যাটটিতে ভাড়া থাকতেন, তার পাশের ফ্ল্যাটে থাকা প্রতিবেশীর দাবি, প্রায়ই তিনি তাঁদের বাড়ি থেকে গার্হস্থ্য হিংসার আওয়াজ শুনতে পেতেন। এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ওই প্রতিবেশী মহিলা বলেন, ‘‘কয়েক বার আমার মেয়ে আফতাব এবং শ্রদ্ধার চিৎকার শুনেছিল। কয়েক বার আমার শাশুড়িও ওদের চিৎকার করতে শুনেছিল।’’ তবে যে দিন শ্রদ্ধাকে খুন করা হয়েছিল, সেই দিন তাঁরা সন্দেহজনক কিছু দেখেননি বা শোনেননি বলেও ওই প্রতিবেশী জানিয়েছেন।
কী ভাবে তিনি এই হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে জানতে পারলেন তা জানতে চাইলে ওই মহিলা বলেন, ‘‘আমারা মাত্র তিন দিন আগে শ্রদ্ধার খুনের বিষয়ে জানতে পেরেছি। ২৫-৩০ জন পুলিশ আমাদের আবাসন ঘেরাও করে। আমরা পুলিশকে ‘কী হয়েছে’ জিজ্ঞেস করলে, তারা জানায় যে একটি মেয়ে নিখোঁজ রয়েছে এবং পুলিশ তাকে খুঁজছে।’’
ছ’মাস আগে দিল্লির মেহরৌলিতে একত্রবাসে থাকা প্রেমিকা শ্রদ্ধা ওয়াকারকে শ্বাসরোধ করে খুন করেন প্রেমিক আফতাব আমিন পুনাওয়ালা। এর পর ওয়েব সিরিজ ‘ডেক্সটার’ দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে শ্রদ্ধার মৃতদেহগুলি ৩৫ টুকরো করেন অভিযুক্ত আফতাব। এর পর ছতরপুর ছিটমহলের জঙ্গলের বিভিন্ন জায়গায় সেই দেহ টুকরোগুলি ফেলে দেন। দিল্লি পুলিশ শনিবার আফতাবকে গ্রেফতার করেছে। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে।
দক্ষিণ দিল্লির অতিরিক্ত ডিসিপি-১ অঙ্কিত চৌহান এই বিষয়ে জানিয়েছেন, মুম্বইতে একটি ‘ডেটিং অ্যাপের’ মাধ্যমে পরিচয় হয়েছিল শ্রদ্ধা এবং আফতাবের। তাঁরা তিন বছর ধরে একত্রবাস করছিলেন এবং দিল্লিতে চলে গিয়েছিলেন। দিল্লিতে চলে যাওয়ার পরপরই, আফতাবকে বিয়ের কথা বলতে থাকেন শ্রদ্ধা। এই নিয়ে দু’জনের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হত এবং তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেত। এর পর ১৮ মে আফতাব মেজাজ হারিয়ে শ্রদ্ধাকে শ্বাসরোধ করে খুন করেন। এই খুনের নৃশংসতায় স্তম্ভিত সারা দেশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy