সুপ্রিম কোর্ট। —ফাইল চিত্র।
বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরে সরকারি আইন কলেজের একটি বই ঘিরে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। অভিযোগ, ‘কালেক্টিভ ভায়োলেন্স অ্যান্ড ক্রিমিনাল জাস্টিস সিস্টেম’ নামের ওই বইটি হিন্দু বিরোধী এবং দেশবিরোধী। বইটির মাধ্যমে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত এবং উস্কানি দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে বলেও দাবি করেন এবিভিপি নেতা-সহ গেরুয়া শিবিরের অনেকে। এর পরেই ওই বইয়ের লেখক, প্রকাশক, কলেজের অধ্যক্ষ এবং এক অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা হয়। আজ সেই মামলার এফআইআর খারিজের নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট।
এরই পাশাপাশি রাজ্যকে তীব্র ভর্ৎসনাও করা হয়।
কলেজের অধ্যক্ষ ইনামুর রহমান মধ্যপ্রদেশ হাই কোর্টে মামলা করলেও সিঙ্গল বেঞ্চে রেহাই পাননি। গত ৩০ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টে স্পেশাল লিভ পিটিশন দাখিল করেন ইনামুর। বিচারপতি বি আর গাভাই এবং বিচারপতি সন্দীপ মেহতার বেঞ্চে মামলার শুনানি হয়। সেখানেই রাজ্যকে ভর্ৎসনা করেন বিচারপতি গাভাই। তিনি স্পষ্ট জানান, এই মামলায় উৎপীড়নের ইঙ্গিত রয়েছে। আবেদনকারীকে সমস্যায় ফেলতে চেয়েছেন কেউ। তদন্তকারী অফিসারের বিরুদ্ধে নোটিস জারি করা হবে বলেও জানিয়েছেন। বিচারপতি বলেন, “এই মামলায় রাজ্যের হয়ে সওয়াল করলেন অ্যাডিশনাল অ্যাডভোকেট জেনারেল! তা-ও আবার ক্যাভিয়েট দাখিল করা হল?”
কোর্টের অর্ডারে বলা হয়েছে, অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল পাঠ্যসূচি অনুমোদন করেছে। সেই পাঠ্যসূচি মেনেই ওই বই। অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে, কারণ ইন্দোরের ওই কলেজের গ্রন্থাগারে বইটি ছিল। আবেদনকারী আগাম জামিন পেয়েছেন বলে হাই কোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ অন্তর্বর্তী রক্ষাকবচের আবেদন খারিজ করেছিল। অথচ মামলাটি ১০ সপ্তাহ মুলতুবি করা হয়। (পরে সুপ্রিম কোর্ট গ্রেফতারির বিরুদ্ধে রক্ষাকবচ দেয়) সেই বিষয়টিও তুলে ধরেছে শীর্ষ আদালত। এর পাশাপাশি আদালত জানিয়েছে, এ ক্ষেত্রে এফআইআর অযৌক্তিক। ন্যায়বিচারের স্বার্থে এফআইআর খারিজ করা হল।
প্রসঙ্গত লাকি আদিওয়াল নামে এক আইনের ছাত্র তথা এবিভিপি নেতা কলেজের অধ্যক্ষ ইনামুর, মির্জ়া মোজ়িজ় বেগ নামে এক সহকারী অধ্যাপক, বইটির লেখক ও প্রকাশকের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাতের অভিযোগ তুলেছিলেন লাকি।
এবিভিপি-র অভিযোগ, বইটিতে হিন্দু ও আরএসএসের বিরুদ্ধে আপত্তিকর তথ্য রয়েছে। এরই প্রতিবাদে ওই কলেজের গেটে তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। কলেজের অধ্যক্ষ-সহ মোট পাঁচ জনের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়। অধ্যক্ষ পদত্যাগ করেন। এর পরেই সাত সদস্যের একটি কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে তৎকালীন উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী মোহন যাদব সাসপেন্ড করেন ইনামুর ও বেগ-কে। পদক্ষেপ করা হয় আরও তিন ফ্যাকাল্টি সদস্যের বিরুদ্ধে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy