প্রতীকী ছবি।
রাষ্ট্রদ্রোহ আইন পুনর্বিবেচনায় কেন্দ্র সম্মতি দেওয়ার পরে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলল সুপ্রিম কোর্ট— তবে কি পুনর্বিবেচনা-পর্ব শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিতর্কিত আইনটির প্রয়োগ স্থগিত রাখা হবে? মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি এনভি রমণার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এ বিষয়ে বুধবারের মধ্যে কেন্দ্রের জবাব চেয়েছে।
তিন বিচারপতির বেঞ্চ বলেছে, ‘যে আইন পুনর্বিবেচনায় কেন্দ্র সায় দিয়েছে, সেই আইনে ঝুলে থাকা মামলাগুলির অভিযুক্তদের ক্ষেত্রে কেন্দ্র কী পদক্ষেপ চাইছে তা জানার জন্য আমরা উদ্বিগ্ন। পাশাপাশি, পুনর্বিবেচনা না হওয়া পর্যন্ত নতুন করে ওই আইন প্রয়োগ করা হবে কি না এবং কী পদ্ধতিতে আইনটির পুনর্বিবেচনা হবে, তা-ও সরকারকে জানাতে হবে।’ সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতাকে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘কেউ কি মাসের পর মাস জেলে থাকতে পারে? আপনার হলফনামায় নাগরিক স্বাধীনতার কথা বলা হয়েছে। আপনি কী ভাবে সেই স্বাধীনতা রক্ষা করবেন?’’
রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে দায়ের করা মামলার শুনানি-পর্বে আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবী শঙ্করনারায়ণ মঙ্গলবার অভিযোগ করেন, বিভিন্ন মামলার গতি ইচ্ছাকৃত ভাবে শ্লথ করছে কেন্দ্র। এর পরেই শীর্ষ আদালত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ বিষয়ে অবস্থান জানাতে বলেন কেন্দ্রকে।
রাষ্ট্রদ্রোহ আইন তথা ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪(এ) ধারার সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। আবেদনকারীদের মধ্যে রয়েছে এডিটর্স গিল্ড অব ইন্ডিয়া, মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থা ‘কমন কজ’, রয়েছেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অরুণ শৌরি, প্রাক্তন মেজর জেনারেল এস জি ভোম্বাটকেরে, সাংবাদিক প্যাট্রিশিয়া মুখিম ও অনুরাধা ভাসিন, ব্যঙ্গচিত্রী অসীম ত্রিবেদী-সহ আরও অনেকেই। আবেদনকারীদের যুক্তি, ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪(এ) ধারা সংবিধানের ১৯(১)(এ), ১৪ এবং ২১ এই তিন অনুচ্ছেদের পরিপন্থী।
সোমবার কেন্দ্রীয় সরকার সুপ্রিম কোর্টকে বলে, ‘‘ভারতীয় দণ্ডবিধি ১২৪-এ ধারার পুনরায় পরীক্ষা এবং পুনর্বিবেচনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তার আগে গত বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে শুনানি-পর্বে অ্যাটর্নি জেনারেল কেকে বেণুগোপাল জানিয়েছিলেন, রাষ্ট্রদ্রোহ আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট নির্দেশিকা প্রয়োজন। সাম্প্রতিক কালে কয়েকটি ক্ষেত্রে রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের অপপ্রয়োগের কথাও বলেছেন তিনি। তাঁর অভিযোগ ছিল, মহারাষ্ট্রে হনুমান চালিশা পাঠের জন্যও অযৌক্তিক ভাবে ১২৪(এ) ধারায় রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা হয়েছে। মঙ্গলবার সেই মন্তব্যের কথা তুলে ধরে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ কেন্দ্রের কাছে জানতে চায়, কেন এমন পরিস্থিতি এড়াতে সাময়িক ভাবে রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের ব্যবহার স্থগিত রাখা হবে না?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy