নরেন্দ্র মোদীর স্বচ্ছ ভারত অভিযানে একেবারে উপরের সারিতে জায়গা করে নিল পশ্চিমবঙ্গ। এই অভিযানকে সামনে রেখে মোদীর রাজনীতির কৌশল নিয়ে কম সমালোচনা হয়নি। কিন্তু বছর ঘোরার আগেই দেশের বিভিন্ন শহরের পরিচ্ছন্নতার যে ছবি, তাতে দেখা যাচ্ছে, তালিকার শীর্ষে থাকা একশো শহরের মধ্যে পঁচিশটিই পশ্চিমবঙ্গের। হালিশহর দশম স্থানে। কলকাতা ছাপ্পান্নতে জায়গা করে নিয়েছে।
দেশের শহরগুলিকে পরিচ্ছন্ন করে তোলার পরিকল্পনা সামনে রেখে গত বছরের ২ অক্টোবর স্বচ্ছ ভারত অভিযান শুরু করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ঝাড়ু হাতে রাস্তায় নেমেছিলেন। তখন দিল্লির ভোটের ঝড় শুরু হতে চলেছে। অরবিন্দ কেজরীবালের দলের নির্বাচনী প্রতীক কার্যত ছিনিয়ে নিয়ে যে ভাবে পথে নেমেছিলেন মোদী, রাজনীতিতে তার ফায়দা বিশেষ মেলেনি। সেলিব্রিটিদের ঝাঁ চকচকে প্রচারের পরেও এই অভিযান কতটা সফল হতে পারে, তা নিয়েও শুরু থেকে প্রশ্ন ছিল। কিন্তু পরিচ্ছন্নতার রিপোর্ট প্রকাশ পেতেই দেখা যাচ্ছে, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিকে পিছনে ফেলে সামনের সারিতে এগিয়ে এসেছে বিরোধী ও বিভিন্ন আঞ্চলিক দলের হাতে থাকা রাজ্যগুলির বিভিন্ন শহর। যদিও অনেকেই মনে করেন, পরিচ্ছন্নতার এই প্রয়াসকে দলীয় রাজনীতির ভাবনা থেকে নেওয়া ঠিক নয়। কেননা, পরিচ্ছন্নতার অভিযানে সমাজের সর্বস্তরের যোগদানই গুরুত্বপূর্ণ।
কংগ্রেস শাসিত কর্নাটকের মহীশূর দেশের ৪৭৬টি শহরের মধ্যে স্বচ্ছতার অভিযানে শীর্ষে জায়গা করে নিয়েছে। সে রাজ্যের আরও তিনটি শহর প্রথম দশে। দেখা যাচ্ছে, অ-বিজেপি রাজ্য কেরল, কর্নাটক ও তামিলনাড়ুর শহরগুলি উপরের সারিতে জায়গা করে নিয়েছে। উত্তর ভারতের তুলনায় সব সময়েই দক্ষিণ ভারত পরিচ্ছন্নতার প্রশ্নে এগিয়ে। তালিকাতে তার ব্যতিক্রম হয়নি। পটনার জায়গা হয়েছে ৪২৯-এ। আর মোদীর নির্বাচনী কেন্দ্র বারাণসী রয়েছে ৪১৮ নম্বরে।
নয়াদিল্লিতে সাউথ ব্লকে বসে দেশ চালান মোদী। আর ঝাড়ুর ঝড়ে ক্ষমতায় এসে কেজরীবাল বসেছেন তার কয়েক কিলোমিটার দূরে, দিল্লি সচিবালয়ে। তবে, দিল্লির তিনটি পুরসভাই এখন বিজেপির দখলে। সব মিলিয়ে ফলাফল, পরিচ্ছন্নতার প্রশ্নে তালিকায় ষোলোতে জায়গা হয়েছে দেশের রাজধানীর। রাজ্যগুলির রাজধানীর মধ্যে সব থেকে উপরে বেঙ্গালুরু, সব শেষে পটনা। আগরতলা ৩২-এ।
দেশের যে সব শহরের জনসংখ্যা এক লক্ষের বেশি, সেগুলিতে কয়েকটি মাপকাঠির ভিত্তিতে এই সমীক্ষা করা হয়েছে। যেমন এখানে বর্জ্য নিকাশি ব্যবস্থা, নিকাশি জলের শোধন, পানীয় জলের মান, জলাশয়গুলির অবস্থা, জলবাহিত রোগে মৃত্যুর হার— এ সব বিষয়কে সামনে রেখেই সমীক্ষা হয়েছিল। সরকারি সূত্রের ব্যাখ্যা, সমীক্ষার মধ্য দিয়েই বোঝা যাচ্ছে, স্বচ্ছ ভারত অভিযানে কী ভাবে এগোনো যেতে পারে।
স্বচ্ছ ভারত অভিযানকে সফল করে তুলতে ২০১৯ সালের মধ্যে গ্রামগুলিতে ১২ কোটি শৌচাগার করার পরিকল্পনা রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy