Advertisement
১৮ মে ২০২৪

গো-রক্ষায় গুন্ডামি রুখতে কেন্দ্রের চিঠি সব রাজ্যকে

Take strict action against cow vigilantes: MHA to statesস্বঘোষিত গো-রক্ষকদের রুখতে গত শনিবার প্রথম সুর চড়াতে বাধ্য হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ‘নকল’ গো-রক্ষকদের কঠোর শাস্তির হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন। তাঁর ওই বক্তব্যে সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ গো-রক্ষক সংগঠনগুলি বেজায় চটলেও কেন্দ্র যে আপাতত পিছু হটবে না, তা স্পষ্ট হয়ে গেল আরও এক বার।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০১৬ ০৪:২২
Share: Save:

স্বঘোষিত গো-রক্ষকদের রুখতে গত শনিবার প্রথম সুর চড়াতে বাধ্য হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ‘নকল’ গো-রক্ষকদের কঠোর শাস্তির হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন। তাঁর ওই বক্তব্যে সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ গো-রক্ষক সংগঠনগুলি বেজায় চটলেও কেন্দ্র যে আপাতত পিছু হটবে না, তা স্পষ্ট হয়ে গেল আরও এক বার।

আজ সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে সমস্ত রাজ্যের মুখ্যসচিব ও পুলিশের ডিজিদের চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে, যদি কোনও ব্যক্তি বা সংগঠন গো-রক্ষার নামে আইন নিজের হাতে তুলে নেয় তা হলে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। কোনও অবস্থাতেই যেন দোষী ব্যক্তিকে রেয়াত করা না হয়।

ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘কিছু রাজ্যে গো-হত্যা আইনত নিষিদ্ধ। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, ওই সব রাজ্যে কোনও ব্যক্তি বা সংগঠন গো-হত্যাকারীকে শাস্তি দিতে আইন নিজেদের হাতে তুলে নেবে। সম্প্রতি দেখা গিয়েছে, কিছু মানুষ বা গোষ্ঠী গো-রক্ষার নামে ঠিক সেই কাজটাই করেছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না। এদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারকে।’ বিজেপি সূত্রের দাবি, মোদীর হুঁশিয়ারি যে নিছক কথার কথা ছিল না, আরও বেশি করে সেই বার্তা দিতেই জারি হয়েছে এই সতর্কতা। রাজ্যের পাশাপাশিকে চিঠি পাঠানো হয়েছে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতেও।

গত দু’বছর ধরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সক্রিয় রয়েছে স্বঘোষিত গো-রক্ষকেরা। উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, গুজরাতে তাদের একাংশের তাণ্ডবের শিকার হতে হয়েছে দলিত ও সংখ্যালঘুদের। প্রথমে মৌন থাকলেও প্রথমে শনি ও তার পরে রবিবার এ নিয়ে মুখ খোলেন প্রধানমন্ত্রী। আগামী বৃহস্পতিবার দলিতদের উপরে অত্যাচার প্রসঙ্গে সংসদে আলোচনা হওয়ার কথা। সে দিন সংসদে যে তীব্র আক্রমণের মুখে পড়তে হবে, তা ভালই জানেন বিজেপি নেতৃত্ব।

এর সঙ্গে রয়েছে ভোটমুখী উত্তরপ্রদেশের জাতপাতের অঙ্ক। নিজের রাজ্য গুজরাতের উনায় দলিত-নিগ্রহও বিপাকে ফেলেছে মোদীকে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এই সমস্ত কারণেই আটঘাট বেঁধে বিরোধী আক্রমণের ধার কমানোর কৌশল নিয়েছে কেন্দ্র। তাই মোদী মুখ খোলার পরেই পত্রপাঠ জারি হল এই নির্দেশিকা।

বিরোধীরা অবশ্য এই চিঠিকে কেন্দ্রের দায় ঝেড়ে ফেলার কৌশল বলেই ব্যাখ্যা করছেন। গত শনিবার রাজ্যগুলিকে ‘নকল’ গো-রক্ষকদের তালিকা তৈরির পরামর্শ দিয়েছিলেন মোদী। আজকের নির্দেশিকায় স্পষ্ট বলা হয়েছে, ‘সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারকে ব্যবস্থা নিতে হবে।’ বিরোধীদের মতে, গো-রক্ষকদের তাণ্ডব রুখতে এ যাবৎ পদক্ষেপের কোনও
নির্দিষ্ট দিশা না থাকায় এই ধাঁচের ঘটনার দায় বারবার কেন্দ্রীয় শাসক দলের ঘাড়েই এসে পড়ছিল। কিন্তু আজকের পর অপরাধীদের গ্রেফতার থেকে শাস্তিবিধান— সব দায় এসে পড়ল কার্যত রাজ্যের ঘাড়েই। তৃণমূলের এক নেতার কথায়, ‘‘এ হল সাপ মারা ও লাঠি না ভাঙার কৌশল। কেন্দ্র আইন করে দিল। এ বার অপরাধীদের ধরার দায় রাজ্যের।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

cow vigilantes
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE