ছ’মাস আগে বিদায় হয়েছে ‘কল-ড্রপ’ মন্ত্রীর। কিন্তু ‘কল ড্রপ’ সমস্যার কোনও সুরাহা হল না আজও। টেলিকম মন্ত্রকে এখনও গ্রাহকদের থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসে, মোবাইলে কথা বলতে বলতে বারবারই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে সংযোগ।
বিহার নির্বাচনের সময় রবিশঙ্কর প্রসাদ যতই লালুপ্রসাদ, নীতীশ কুমারের উপরে খড়গহস্ত হওয়ার চেষ্টা করছিলেন, ততই তাঁর বিরুদ্ধে আক্রমণ বাড়ছিল কল-ড্রপ নিয়ে। এক কথায় মোদী সরকারের এই টেলিকম মন্ত্রীকে সকলে দুরমুশ করে দিয়েছিলেন সে সময়ে। বিরোধীদের বক্তব্য ছিল, রবিশঙ্কর তো ‘কল-ড্রপ’ মন্ত্রী! তিনি এমন এক মন্ত্রকের দায়িত্ব নিয়ে বসে রয়েছেন, যে মোবাইলে কেউ কথাই বলতে পারেন না। এই বদনাম এড়াতে রবিশঙ্করকে টেলিকম মন্ত্রক থেকে সরিয়েই দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু তার পরে নতুন মন্ত্রী মনোজ সিন্হা দায়িত্ব নিয়েছেন ছ’মাসের বেশি কেটে গিয়েছে। কিন্তু ফোনের ‘কল-ড্রপ’ সমস্যা এখনও মিটল না। খোদ মন্ত্রীই কবুল করছেন, ‘‘আসলে বিশ্ব জুড়েই এই সমস্যা রয়েছে। নানাবিধ কারণ রয়েছে এর। আমাদের মন্ত্রক আপ্রাণ চেষ্টা করছে এই সমস্যা মোকাবিলা করার।’’
গ্রাহকদের থেকে সরাসরি মতামত জানতে টেলিকম মন্ত্রক দু’মাস আগেই একটি ‘ইন্টার-অ্যাক্টিভ ভয়েস রেসপন্স সিস্টেম’ চালু করেছে। যার মাধ্যমে গ্রাহকদের সরাসরি জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে, কল-ড্রপ নিয়ে তাদের কী বক্তব্য? গত মাস পর্যন্ত প্রায় দু’লক্ষ গ্রাহককে এমন ফোন করা হয়েছে। যার মধ্যে প্রায় ৩৫ হাজার জন এই সমীক্ষায় অংশ নিয়ে তাঁদের মতামত জানিয়েছেন। এর পাশাপাশি টেলিকম নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘ট্রাই’-ও বিভিন্ন শহর, হাইওয়ে, রেল লাইন ধরে মোবাইল নেটওয়ার্কের হাল-হকিকত সরেজমিন খতিয়ে দেখে। এই সমস্ত খতিয়ান যেমন ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হচ্ছে, তেমনই পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে মোবাইল সংস্থাগুলির কাছেও। যাতে এই সব তথ্য তারা তাদের পরিষেবার মান উন্নত করার কাজে লাগাতে পারে।
রবিশঙ্কর প্রসাদকে সরিয়ে মনোজ সিন্হাকে মন্ত্রকে এনেই প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছিলেন, যে কোনও মূল্যে ‘কল-ড্রপ’ সমস্যা মেটাতে হবে। কারণ মোদী নিজে ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’ নিয়ে সবচেয়ে বেশি সরব। নোট বাতিলের পরে এখন বিভিন্ন ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহারের পক্ষে প্রচারকে আরও তুঙ্গে নিয়ে যেতে চাইছেন তিনি। এর মধ্যে মোবাইল ফোনের এমন থমকে থমকে চলা তাঁর বিরুদ্ধে অস্ত্র জোগাবে বিরোধীদের হাতে। মনোজ সিন্হার টেলিকম মন্ত্রক এ ব্যাপারে ওয়াকিবহাল। মনোজ জানাচ্ছেন, এই সমস্যা দূর করতে নিয়মিত চাপ দেওয়া হচ্ছে মোবাইল সংস্থাগুলিকে। পরিষেবা ঠিকমতো না দেওয়ার জন্য তাদের থেকে জরিমানাও আদায় করা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত ১১ কোটি টাকা আদায় হয়েছে। রেহাই পায়নি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিএসএনএল-ও। মন্ত্রী জানান, চাপের মুখে মোবাইল সংস্থাগুলি দেড় মাসে দেড় লক্ষের বেশি মোবাইল টাওয়ার লাগিয়েছে। এ বছর মার্চের মধ্যে আরও এক লক্ষের বেশি টাওয়ার লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে। পাঁচ লক্ষ টাওয়ারের ক্ষমতাও বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। এই কাজ হয়ে গেলে কল-ড্রপের সমস্যা অনেকটাই কমে যাবে বলে আশা করছেন মনোজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy