Advertisement
০২ মে ২০২৪
Voter List

Voter List: ভোটার-আধার সংযুক্তি হওয়ার পথে, এ বার অভিন্ন ভোটার তালিকা তৈরির ভাবনা কেন্দ্রের

২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগেই সংবিধান সংশোধন করে ‘এক দেশ এক ভোটে’র নীতি সংসদে পাশ করিয়ে নিতে চায় বিজেপি।

‘এক দেশ এক ভোট’ করতে হলে সবার আগে প্রয়োজন অভিন্ন ভোটার তালিকা।

‘এক দেশ এক ভোট’ করতে হলে সবার আগে প্রয়োজন অভিন্ন ভোটার তালিকা। ফাইল ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা 
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২১ ০৫:৪১
Share: Save:

নির্বাচনী আইন স‌ংশোধন করে ভোটার কার্ডের সঙ্গে আধার সংখ্যার সংযুক্তির রাস্তা প্রশস্ত হয়েছে। এ বার অভিন্ন ভোটার তালিকা তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে কেন্দ্র। যার রূপায়ণ হলে লোকসভা, বিধানসভা ও পুরভোটে একই ভোটার তালিকার মাধ্যমে আগামী দিনে নির্বাচন করানোর কথা ভাবা হয়েছে। বিরোধীদের মতে, ছোট ছোট ওই পদক্ষেপের মাধ্যমে ‘এক দেশ এক ভোটের’ পথেই এগোচ্ছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। বিরোধীদের আশঙ্কা, ২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগেই সংবিধান সংশোধন করে ‘এক দেশ এক ভোটে’র নীতি সংসদে পাশ করিয়ে নিতে চায় বিজেপি। যাতে ২০২৪ সালে লোকসভার সঙ্গেই রাজ্যের বিধানসভাগুলির ভোট সেরে ফেলা সম্ভব হয়।

‘এক দেশ এক ভোট’ করতে হলে সবার আগে প্রয়োজন অভিন্ন ভোটার তালিকা। সূত্রের মতে, আধার ও ভোটার কার্ড সংযুক্তির পরে অভিন্ন ভোটার তালিকা তৈরির প্রশ্নে নীতিগত সম্মতি জানিয়ে সরকারের কাছে রিপোর্ট জমা দিয়েছে কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রকের সংসদীয় কমিটি। বিজেপি সাংসদ সুশীল মোদীর নেতৃত্বাধীন ওই কমিটি পুরভোট, বিধানসভা ও লোকসভা ভোটে একই তালিকা ব্যবহারের সুপারিশ করে রিপোর্ট দিয়েছে। প্রসঙ্গত, গত ১৬ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় থেকে মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক সুশীল চন্দ্রকে যে বৈঠকে থাকার জন্য বলা হয়েছিল, সেটিও ছিল অভিন্ন ভোটার তালিকা সংক্রান্ত। সূত্রের মতে, খুব দ্রুত ওই কাজ সেরে ফেলার পক্ষপাতী শাসক শিবির। দলের ইস্তাহারে থাকা ওই প্রতিশ্রুতি পালনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি পি কে মিশ্রকে। সূত্রের মতে, অভিন্ন ভোটার তালিকা তৈরি নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশন কর্তাদের সঙ্গে খুব দ্রুত বৈঠকে বসতে চলেছেন কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের কর্তারা।

দীর্ঘ সময় ধরে বিজেপির একটি অংশকে ‘এক দেশ এক ভোটে’র পক্ষে সওয়াল করতে দেখা গিয়েছে। ২০১৪ সালে ক্ষমতায় এসে একই সঙ্গে লোকসভা, বিধানসভা নির্বাচনের পক্ষে একাধিকবার সওয়াল করেছেন স্বয়ং মোদী। বিবেক দেবরায় বা কিশোর দেশাইয়ের মতো অর্থনীতির বিশেষজ্ঞদের মতে, এক সঙ্গে লোকসভা ও বিধানসভা ভোট হলে আলাদা প্রস্তুতির খরচ বাঁচবে আর সরকারের যুক্তি, নির্বাচনী আচরণবিধির কারণে সরকারি কাজের গতি হ্রাস এড়ানোও সম্ভব হবে।

সংবিধান অনুযায়ী, দেশের স্থানীয় নির্বাচন অর্থাৎ পঞ্চায়েত ও পুরসভার ভোট প্রক্রিয়ার দায়িত্ব থাকে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের উপরে। ওই ভোটের জন্য প্রয়োজনীয় ভোটার তালিকাও তৈরি করে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের এতে কোনও ভূমিকা থাকে না। বিরোধীদের অভিযোগ, ভোটার তালিকা তৈরিতে নাক গলিয়ে রাজ্যের অধিকারে হস্তক্ষেপ করতে চাইছে কেন্দ্র। তাঁদের এ-ও অভিযোগ, প্রথমে একই ভোটার তালিকা এবং পরবর্তী ধাপে লোকসভা ও বিধানসভা ভোট এক সঙ্গে করিয়ে ‘পিছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতা দখলের’ পরিকল্পনা নিয়েছে মোদী সরকার।

তৃণমূল নেতা সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, ‘‘নির্বাচনী সংস্কারের নামে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার প্রচেষ্টায় নেমেছে শাসক শিবির।’’ আর কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ নির্বাচনী আইন সংশোধনের সমালোচনা করে বলেন, ‘‘ভোটার কার্ডের সঙ্গে আধার সংখ্যার সংযুক্তিকরণের সিদ্ধান্ত কৃষি আইনের চেয়েও বিপজ্জনক। অন্ধ্রপ্রদেশ ও তেলঙ্গনায় ভোটার কার্ডের সঙ্গে আধারের সংযুক্তিকরণের পাইলট প্রকল্পের কাজ অতীতে হয়েছিল। তাতে প্রায় ৫৫ লক্ষ নাম বাদ যায়। শেষে সুপ্রিম কোর্ট ওই কাজে স্থগিতাদেশ জারি করে। সংযুক্তিকরণের বিষয়টি আইন হয়ে যাওয়ায় সংখ্যালঘু, জনজাতি সম্প্রদায়, মহিলা, দলিতদের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার চক্রান্ত শুরু হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Voter List Narendra Modi Election
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE